ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

সেনা-নৌবাহিনী ও বিজিবির সহযোগিতায় ১১১ থানার কার্যক্রম শুরু
·রাজধানীতে ২৯ ও চট্রগ্রামে ৩২ থানা কার্যক্রম শুরু ·নৌবাহিনী নিরাপত্তায় উপকূলীয় ২৯ থানার কার্যক্রম শুরু ·বিজিবির নিরাপত্তায় সীমান্তবর্তী ২১ থানার কার্যক্রম শুরু ·ইউনিট ও থানায় ফিরতে শুরু করেছে পুলিশ সদস্যরা
প্রকাশ: শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০২৪, ৭:০০ পিএম আপডেট: ০৯.০৮.২০২৪ ৯:৪৩ পিএম  (ভিজিট : ৫৯৯)
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরই রাজধানীসহ সারা দেশে চার শতাধিক থানায় হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ-লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এই হামলায় ভেঙে পড়ে থানার সার্বিক কার্যক্রম। নিহত ও আহত হয় কয়েকশ পুলিশ সদস্য। জীবন বাঁচাতে আত্মগোপনে যান পুলিশ সদস্যরা।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) থেকে ফের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সহায়তায় স্বল্প পরিসরে রাজধানীসহ দেশের বেশ কিছু থানায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাকি থানাগুলোতে কার্যক্রম শুরুর জন্য প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এদিকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ও থানায় ফিরতে শুরু করেছে পুলিশ সদস্যরা। এছাড়া সারা দেশে সেনা টহলের মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসছে। সারাদেশে রাতে সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর ২৯টি থানার কার্যক্রম শুরু করেন পুলিশ সদস্যরা। এছাড়া চট্রগ্রামে ৩২ থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে। এদিকে বিজিবির নিরাপত্তায় রংপুর ও খুলনা রেঞ্জের সীমান্তবর্তী ২১টি থানার স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতিটি থানায় পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় থাকছেন সেনা সদস্যরা। শুক্রবার বেলা ১১টায় তেজগাঁও থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সেনাবাহিনী ও পুলিশের কর্মকর্তারা।

রাজধানীতে স্বল্প পরিসরে কাজ শুরু থানাগুলো: রমনা, শাহবাগ, নিউমার্কেট, কলাবাগান, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কোতয়ালী, চকবাজার, সূত্রাপুর, ডেমরা, গেন্ডারিয়া, মতিঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর, তেজগাঁও, শেরে-বাংলানগর, হাতিরঝিল, শাহ আলী, কাফরুল, ভাষানটেক, দারুসসালাম, রূপনগর, গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট, বনানী, উত্তরা পশ্চিম, উত্তরখান ও বিমানবন্দর থানা।

এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর-আইএসপিআর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ নৌবাহিনী উপকূলীয় অঞ্চলের থানাগুলোকে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা ও নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। থানাগুলো হচ্ছে- ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, লালমোহন, তজুমদ্দিন, মনপুরা, চরফ্যাশন, দক্ষিণ আইচা, দুলারহাট, শশীভূষণ, বরগুনা সদর, বামনা, বেতাগী, আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, মংলা, রাঙ্গাবালী, খুলনা সদর, খালিশপুর, হরিণটানা, লবণচরা, কয়রা, দিঘলিয়া, দাকোপ, সন্দীপ, হাতিয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া থানা।

শুক্রবার সকালে তেজগাঁ থানার কার্যক্রম শুরু করার সময় এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর ২৫ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মো. শাখাওয়াত খন্দকার, সেদিন (৫ আগস্ট) জনমানুষের প্রচণ্ড স্রোত ছিল। তাদের কন্ট্রোল করা তখন ডিফিকাল্ট হয়ে যাচ্ছিল। সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্বৃত্তরা যেভাবে পুলিশসহ মানুষ হত্যা করছে, তখন আমরা ডিসিশন নিয়েছি থানা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে হবে। তারা জনগণের সেবক, তাদের আবার রিফর্ম করার সুযোগ করতে হবে। এছাড়াও তেজগাঁও থানায় কয়েকশ পরিবার আছে, পুলিশ সদস্যরা আছে। থানায় অনেক অস্ত্র আছে। যেগুলো দুর্বৃত্তদের কাছে গেলে দেশ চরমঝুঁকির মধ্যে পড়বে। তখন আমরা থানার নিরাপত্তা জোরদারের ব্যবস্থা করেছি। তিনি আরও বলেন, এছাড়াও আমরা এ এলাকায় ছাত্র-শিক্ষক, ব্যবসায়ী, স্কাউট, বিএনসিসি ও আনসার বাহিনীরসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আমরা সমন্বয় সভা করেছি। পুলিশ বাহিনীকে রিফর্ম করতে তারা আমাদের আশস্ত করেছেন।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার আজিমুল হক বলেন, সামরিক বাহিনীর সদস্য যেভাবে আমাদের পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন, মানুষের জানমাল রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আজ আমরা সামরিক বাহিনীর সহায়তায় পুলিশের সব কার্যক্রম শুরু করেছি। সব নাগরিকের কাছে অনুরোধ, আপনারা থানায় আসুন। আপনাদের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত। তিনি বলেন, তেজগাঁও বিভাগে ৬টি থানার মধ্যে ৩টি থানার কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত থানার স্বল্প পরিসরে কাজ চলছে। এরই মধ্যে থানাগুলোয় অনেক পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছে। বাকিরাও আসতে শুরু করেছে। আমরা আশা করছি দুপুরের মধ্যে আমাদের সব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগ দেবেন।

সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করেছি। আজ আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য কাছে নেই। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমরা পুলিশ সদস্য এবং আমাদের পরিবার সবাই ট্রমাটাইজ। আমরা জনগনের প্রয়োজনে কাজ করি। অনেক সময় আমরা জনগণকে বোঝাতে পারি না। আজকেও ফিরে আসা জনগনের জন্য। পুলিশ না থাকলে দেশে কি হয় এটাও জনগন দেখছে। পুলিশ একটা চেইন অব কমান্ডে চলে। আগেও কমান্ডে চলেছি, এখনো কমান্ড এসেছে থানায় আসতে, চলে এসেছি। মানুষ সঙ্গে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আসলে আমরা জনগণের সেবক। জনগণই আমাদের মূল। আপনারা থানায় আসুন। আপনাদের সেবায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

৩৬১টি থানার কার্যক্রম চালু: শুক্রবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সদর দফতর জানিয়েছে, সারাদেশের ১১০টি মেট্রোপলিটন থানার মধ্যে ৭০টি এবং রেঞ্জের ৫২৯টি থানার মধ্যে ২৯১টি সর্বমোট ৩৬১টি থানার কার্যক্রম চালু হয়েছে।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close