ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

সাভারে ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৩৩, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট, ২০২৪, ১০:১৩ পিএম  (ভিজিট : ১০৯৮)
সাভারে সংঘর্ষে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩৩জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও প্রায় দুই শতাধিক মানুষ। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সোমবার (৫ আগস্ট) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।

সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এনাম মেডিকেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১৩, নারী ও শিশু হাসপাতালে ৩, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজে ৯ ও হাবিব ক্লিনিকে ২জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আশুলিয়া থানার সামনে ৪ ও থানার লাশ ঘরের সামনে আরও ২জনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দুই শতাধিক মানুষ।

সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার ইউসুফ আলী জানান, চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাসপাতালেই গুলিবিদ্ধ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেড় থেকে দুই শতাধিক গুলিবিদ্ধকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। পরিচয়হীন একজনের লাশ এখনও পড়ে আছে। থানা পুড়িয়ে দেওয়ায় কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না।

নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অপারেশন ম্যানেজার হারন-অর-রশিদ জানান, তিন মরদেহের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে না। থানা পুড়িয়ে দেওয়ায় মরদেহটি নিয়ে বিপাকে রয়েছি। এছাড়া হাবিব ক্লিনিকেও অজ্ঞাত দুজনের মরদেহ পড়ে রয়েছে।

এরআগে লং মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি ঘিরে সোমবার সকালে আশুলিয়ার বাইপাইল ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকার দিকে অগ্রসর হওয়া জনতার স্রোত লক্ষ্য করে চলে পুলিশের নির্বিচার গুলি।

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালানোর খবরে নিমেষেই চিত্র পাল্টে যায়। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন অতি উৎসাহী কর্মকর্তারা। নিরাপত্তার সব দায়িত্ব ছেড়ে নিজেদের জীবন নিয়েই সংকটে পড়ে পুলিশ সদস্যরা।

বিকেল ৩টার পর থেকে প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ থানা অভিমুখে ছুটতে থাকলে তাদের পিছনে ছুটে জনতার স্রোত। প্রাণ বাঁচাতে শুরু হয় ধামরাই, আশুলিয়া ও সাভারে পুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণ। শিশু থেকে বৃদ্ধ এমনকি শিক্ষার্থীরা গুলিবিদ্ধ হয়ে আসতে থাকেন হাসপাতালে। অনেকের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। এমন পরিস্থিতিতে জনতার ক্রোধ আছড়ে পড়ে থানাগুলোতে। এক পর্যায়ে থানাগুলো ঘিরে ক্ষুব্ধ জনতা হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে হামলা চালানো শুরু করলে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটে। এভাবে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে কাটাতে হয় সাভার মডেল থানা পুলিশের সদস্যদের। এক পর্যায়ে জীবন বাঁচাতে জনতার স্রোত লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পুলিশ সদস্যরা সাভার থানা রোড হয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে সাভার সেনানিবাসের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে ছাত্র-জনতা তাদের পিছু নেয়। পলয়নপর পুলিশ সদস্যরা সাভার সেনানিবাসে প্রবেশ করলে ধেয়ে আসা ছাত্র-জনতাকে ফটকে আটকে দেন সেনাসদস্যরা।

অন্যদিকে হাসিনার পালানোর পর গা ঢাকা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীরাও। পরিবার-পরিজন নিয়ে চলে যান আত্মগোপনে। সাভারে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাসভবন অফিস ও কার্যালয় ঘিরে চলতে থাকে ক্ষুব্ধ জনতার হামলা।

সরেজমিনে দেখা যায়, হেমায়েতপুরে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকরুল আলম সমরের বাসা, ঋষিপাড়ায় সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবের রাজ প্যালেস, ইমান্দিপুরে কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু আহমেদ নাসিম পাভেলের বাসা, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, সহ সভাপতি নিজাম উদ্দিন আহমেদ টিপুর বাড়িতেও আগুন দেয় ক্ষুব্ধ জনতা।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close