ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

কুষ্টিয়ায় বহু স্থাপনায় ভাঙচুর আগুন
প্রকাশ: রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০২৪, ১১:৪৬ পিএম  (ভিজিট : ৩২৬)
কুষ্টিয়ায় আন্দোলনকারীদের ব্যানারে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কুষ্টিয়া শহরে তাণ্ডব চালিয়েছে। তারা ট্রাফিক পুলিশ অফিস, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল জেলা পরিষদ ভবনসহ বেশ কিছু স্থাপনায় হামলা ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দফায় দফায়,  টেয়ারশেল ফাঁকা গুলি ছোড়ে। তবে এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কোন নেতাকর্মীদের রাস্তায় দেখা যায়নি। এসব ঘটনায় তিনজন সংবাদকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া পুলিশ আন্দোলনকারী ও পথচারীসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।  রোববার বেলা এগারোটা থেকে প্রায় দেড়টা পর্যন্ত কার্যত কুষ্টিয়া শহরের একটি বড় অংশ আন্দোলনকারীদের দখলে ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেলা সাড়ে দশটার পর থেকে শহরের মজমপুর বাস ডিপো মসজিদের সামনে জড়ো হতে শুরু করে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। তবে এ মিছিলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি একেবারে কম ছিল জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে বেলা ১১টার দিকে তারা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। এ সময় রাস্তার দুপাশ থেকে শত শত মানুষ লাঠি সোঁটা  সাথে নিয়ে মিছিলে যোগ দেন। পরে চৌড়হাস মোড়ে গিয়ে তারা মহাসড়কের উপর অবস্থান নেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের অবস্থান থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ১০-১২ জন পুলিশ সদস্যের উপর হামলা চালায় আন্দোলনকারীরা। সেখানে ৬-৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হন।

এর  কিছুক্ষণ অবস্থানের পর তারা আবার মিছিল নিয়ে মজমপুর গেটের দিকে রওনা হয়। মিছিলটি ফুলতলা মোড় অতিক্রম করার সময় রাস্তা থেকে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীরা। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। তবে পুলিশ সে সময় কোন অ্যাকশনে যায়নি।

পরে রাইফেল ক্লাবের পাশে ছাত্রলীগ কার্যালয় ভেঙে গুঁড়িয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এরপর সাদ্দাম বাজার মোড়ে এসে আন্দোলনকারীরা কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাঞ্জারুল ইসলাম চঞ্চলের ব্যক্তিগত অফিস এবং সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু তৈয়ব বাদশার ব্যক্তিগত অফিসের হামলা, ব্যাপক ভাঙচুর এবং আগুন দেয়। এরপর মিছিলকারীরা একে একে মজমপুর গেটে জেলা ট্রাফিক পুলিশের আগুন দেয়, ভাঙচুর চালায় পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর মুরালে। পরে বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেটে জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অফিসে ব্যাপক ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এছাড়া তারা কুষ্টিয়া মডেল থানা ও জেলা পরিষদের নবনির্মিত ভবনে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেন। হামলার সময় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা শান্তি সমাবেশ করছিলেন। তবে আন্দোলনকারীদের হামলার মুখে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যান। এছাড়া বড়বাজার রেলগেটের কাছে পুলিশ বক্স জ্বালিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এছাড়া আন্দোলনকারীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে লাগানো সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। বেলা দুটোর পর আন্দোলনকারীরা পুনরায় মজমপুর বাস ডিপো মসজিদের সামনে জড়ো হয়। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা বৃষ্টির মতো ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুর করে এসময়  পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় চ্যানেল ২৪ এর কুষ্টিয়া প্রতিনিধি শরীফ বিশ্বাস, ক্যামেরা পার্সন এস আই সুমন সুমন এবং একাত্তর টেলিভিশনের প্রতিনিধি শাহিন আলী ছররা গুলিতে আহত হন। এছাড়া পুলিশ ও আন্দোলনকারী সহ অর্ধ শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলছিল। এতে পুরো শহর রনোক্ষেত্রে পরিণত হয় শহরের সমস্ত দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন পুলিশ যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। এমনকি পুলিশের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপের পরও তারা নিশ্চুপ ছিল। তবে আন্দোলনকারীরা শহরের পুলিশের স্থাপনাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর ও আগুন দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close