ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

খাল-বিলে থৈথৈ বৃষ্টির পানি, ব্যস্ততা ঘুনি-চারো ব্যবসায়ীদের
প্রকাশ: শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৪, ৬:৩১ পিএম  (ভিজিট : ২৫০)
এখন বর্ষাকাল। থেমে চলছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। খাল-বিলে জমতে শুরু করেছে পানি। এতেই তৎপরতা বেড়েছে মৎস্য শিকারিদের। তাই ব্যস্ততা বেড়েছে মাছ ধরতে বাঁশ-বেত দিয়ে ফাঁদ তৈরি করা ঘুনি-চারো কারিগরদেরও। দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি কয়েকটি মাছ ধরার ফাঁদের নাম হলো হল চাঁই, টইয়া ও পলো, ঘুনি তারো ইত্যাদি। ঝিলে ও বিলে পানি জমতেই এসব উপকরণের কদরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

মাছ শিকারের জন্য বছরের দুটি সময় এসব উপকরণের বিক্রি বেড়ে যায়। যখন খালে-বিলে পানি কমে যায় তখন বাঁশের তৈরি এসব উপকরণ ব্যবহার করে শিকারিরা। আবার যখন বর্ষা শুরু হয় তখনো বিক্রি বাড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁই হচ্ছে আড়াই-তিন ফুট লম্বাকৃতির গোলাকার উপকরণ এবং টইয়া চ্যাপ্টা আকৃতির। মাছ ধরার ক্ষেত্রে চাঁই ও টইয়ার ব্যবহার প্রায় একই রকম। উঁচু জমি থেকে পানি যখন সাধারণত নিচু জমিতে পড়ে তখন শিকারিরা বাঁধ দিয়ে ছোট একটা জায়গা করে চাঁই বা টইয়া দিয়ে ফাঁদ পেতে রাখে। চাঁইয়ের ভিতর দিয়ে ও টইয়ার উপর দিয়ে পানি যায়। এতে করে ছোট-বড় সকল প্রকার মাছ চাঁই বা টইয়াতে আটকে যায়। জায়গা এবং পানির প্রকারভেদে চাঁই ও টইয়ার সাইজ ও বিভিন্ন আকৃতির ব্যবহার করতে হয়। আর পলো হচ্ছে আড়াই-তিন ফুট লম্বাকৃতির গোলাকার উপকরণ। কম পানির জায়গায় পানির উপর থেকে পলো ফেলে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে মাছ ধরা হয়। সাধারণত রাতের বেলায় এর ব্যবহার বেশি।

একসময় বিভিন্ন স্থানে চাঁই, টইয়া ও পলো দিয়ে মাছ ধরার প্রচলন ছিল বেশি। মাছ ধরার এসব বিশেষ ফাঁদ চাঁই, টইয়া, ঘুনি, চারই, দোয়াড় ও পলো তৈরি করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করেন। টইয়া ও পলো আকারভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি হয়। এক একটি চাঁই ২৫০-১০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। ঘুনি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। প্রতিটি চারই বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায়।

চৌগাছা বাজারে মাছ ধরার যন্ত্র কিনতে আসেন মহেশপুর উপজেলার জাগুসা গ্রামের বাদল মন্ডল, তাদের এলাকার টিপির বিলে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে নিয়মিত মাছ শিকার করেন। বর্ষার পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে আরও কিছু ঘুনি ও চারই কিনতে এসেছেন তিনি।

চৌগাছার মাড়ুয়া গ্রামের আব্দুল গাফফার, শহরের কুটিপাড়া এলাকার মতিউর, ইলিশমারি গ্রামের শাহাজান জানান, বর্ষার নতুন পানিতে দেখা মিলছে বিভিন্ন জাতের দেশি মাছ। মাছ ধরা তাদের নেশা। তাই মাছ ধরার জন্য ঘুনি-চারই কিনতে এসেছি। তবে অন্য বারের তুলনায় এ বছর দাম অনেক বেশি।

জগন্নাথপুর গ্রামের কাশেম আলী সরকারি চাকরি করেন। বর্ষার পানিতে তার গ্রামের খাল-বিলে দেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য শখের বসে তিনিও একটি ঘুনি কিনতে এসেছেন।

শহরের কামিল মাদ্রাসার রোডে মাছ ধরার সরঞ্জাম বিক্রির স্থায়ী কয়েকটি দোকান রয়েছে। এইসব দোকানগুলোতে সারা বছরই মাছ শিকারের বিভিন্ন সরঞ্জাম বিক্রি করেন তারা।

বিক্রেতা সবুজ হোসেন জানান, বাঁশের তৈরি মাছ শিকারের সরঞ্জাম আগের মতো বিক্রি হয়না। তবে বর্ষাকাল আসলে কিছুটা বিক্রি হয়। মাছ শিকারের যন্ত্র তৈরির উপকরণ বাঁশের দাম বেশি। বাজারে সব জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় তৈরি মজুরিও বেশি পড়ছে। যে কারণে মাছ শিকার সরঞ্জামের দামও একটু বেশি। 

তিনি বলেন, দাম বেশি হলেও এবছর বেচা বিক্রি ভালো। তাছাড়া এখন মানুষ আধুনিক হয়ে গেছে, তারা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেন।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  খাল-বিলে বৃষ্টির পানি   ঘুনি-চারো ব্যবসায়ী   চৌগাছা-যশোর  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close