ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

চব্বিশ ঘণ্টার বৃষ্টিতে ডুবল নোয়াখালী শহর
প্রকাশ: শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৪, ৫:২২ এএম  (ভিজিট : ২৪৮)
গত চব্বিশ ঘণ্টার রেকর্ড বৃষ্টিতে ডুবে গেছে নোয়াখালী জেলা শহর। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে টানা বৃষ্টিতে পুরো নোয়াখালী পৌর শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জেলা শহরের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অফিস, সড়ক, বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরের লক্ষাধিকের বেশি মানুষ।

শহরের বাসিন্দরা বলছেন, নোয়াখালী পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে এমন পরিস্থিতি হয়। তারপর নেওয়া হয়ওনা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। শুধু আশ্বাস দিয়েই কর্তৃপক্ষ বছর পার করছেন। অন্যদিকে নোয়াখালী পৌর 

কর্তৃপক্ষ বলছেন, শহরের ব্যক্তিমালিকানাধীন বিভিন্ন পুকুর ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করায় এবং খাল-নালা দখল করার কারণে এমন অবস্থা হয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, টানা বর্ষণে নোয়াখালী পৌরসভাসহ পুরো জেলা শহরে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক জলাবদ্ধতা। পানিতে বিভিন্ন সরকারি অফিসে ঢোকার পথ ডুবে গেছে। এর মধ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা আবহাওয়া অফিস, জেলা মৎস্য অফিস, এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশল, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, জেলা শিক্ষা ভবন, জেলা রেজিস্টার কার্যালয়, জেলা রেকর্ড রুম, জেলা হাকিম কোয়ার্টার, জেলা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের মাঠ, নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অফিস রয়েছে। পানিতে ডুবে গেছে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা সিভিল সার্জনের বাসভবনের সড়কও। জীবিকার তাগিদে বের হওয়া শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষ পড়েছেন বিপাকে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

মো. হারুন নামে একজন বলেন, কোনো সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নেই। প্রতি বর্ষা মৌসুমেই জলাবদ্ধতা হয়। তারপরও কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না। আনিসুর রহমান নামে একজন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে অতিভারী বৃষ্টিতে রীতিমতো ভেসে গেছে মাইজদী শহর। অধিকাংশ সড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। বিভিন্ন বাসা বাড়িতে পানি উঠেছে। বাড়ির আঙিনা ডুবে আছে হাঁটুপানিতে, অনেকের ঘরেও পানি ঢুকেছে। এ বৃষ্টিতে মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। সড়কের আশপাশের বাসাবাড়ির আঙিনায় এখনও বৃষ্টির পানি জমে আছে। 

ইকবাল হোসেন নামে আরেকজন জানান, সরকারি-বেসরকারি অফিস, হাসপাতাল, বিপণিবিতান থেকে শহরের অলিগলি সব জায়গায় জলাবদ্ধতা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় অফিসমুখী মানুষের ভিড় ছিল না। কিন্তু স্থানীয়দের দুর্ভোগ চরমে। ঘর থেকে প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়া যাচ্ছে না। আকবর হোসেন নামে একজন বলেন, জুমার নামাজে যাওয়ার সময় মুসল্লিরা হাঁটুপানি মাড়িয়ে মসজিদে গেছে। মহিলা-শিশুরা বের হতে পারছেন না। রোগীদের চরম ভোগান্তি।

নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খান সোহেল জলাবদ্ধতার কারণে নাগরিকদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি নিজে আজ সকাল থেকে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়েছি। দেখলাম ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রায় পুকুর ভরাট করে বহুতল ভবন করা হয়েছে। পৌরসভার ভেতরে যে সব খাল-নালা রয়েছে সেগুলো দখল করে রাখা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বৈঠক ডাকা হবে। সেখানে করণীয় ঠিক করা হবে।

জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত চব্বিশ ঘণ্টায় নোয়াখালী জেলা শহরে ২৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এটি গত ২০ বছরের মধ্যে নোয়াখালীতে চব্বিশ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী নোয়াখালীতে আরও কয়েক দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।

সময়ের আলো/আরএস/






https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close