ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

মাদ্রাসা ছাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, নির্বাক বাবা-মা
প্রকাশ: সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪, ৭:৩০ পিএম  (ভিজিট : ২৮২)
ফরিদগঞ্জে মাদ্রাসার ছাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একমাত্র ছেলে ইমন হোসেনকে হারিয়ে মায়ের আহাজারি যেন থামছে না। ছবি: কোলাজ

ফরিদগঞ্জে মাদ্রাসার ছাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একমাত্র ছেলে ইমন হোসেনকে হারিয়ে মায়ের আহাজারি যেন থামছে না। ছবি: কোলাজ

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মাদ্রাসার ছাদ থেকে বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. ইমন হোসেন (১২) নামের এক শিশু মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ইউসুফ আব্দুল্লা (১৩) নামে আরেক শিশু। 

উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের পূর্ব ষোলদানা গ্রামের দারুস্সুন্নাত মোহাম্মাদিয়া আয়েশা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় রোববার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত মো. ইমন হোসেন একই ইউনিয়নের হামছাপুর গ্রামের মো. ফজল হক তৈয়বের ছেলে। আহত ইউসুফ আব্দুল্লা ষোলদানা গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে। দু’জনই ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

আহত ইউসুফ আব্দুল্লা বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক আশরাফ আলী বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার ধৌত করে ছাদের রৌদ্রে শুকাতে দেয়। সন্ধ্যায় তাদেরকে ছাদ থেকে বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার আনতে পাঠায় অপর শিক্ষক মাহাদী। এসময় ছাদের পাশে একটি কদম গাছে ফুল দেখতে পেয়ে ছাদে থাকা রড দিয়ে ইমন হোসেন কদম ফুল সংগ্রহ করার সময় মাদ্রাসার ছাদের পাশে থাকা বিদ্যুতের তারের সাথে বিদ্যুতায়িত হয়ে পুরো শরীর পুড়ে যায় তার। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ইমনকে বাঁচানোর চেষ্টা করে বিদ্যুতায়িত হয়ে আহত হয় ইউসুফ আব্দুল্লা। ঘটনা দেখে ডাক চিৎকার দেয় ছাদে থাকা অপর শিক্ষার্থী রহিম হোসেন। পরে স্থানীয়রা গিয়ে মৃত অবস্থায় মো. ইমন হোসেন ও আহত অবস্থায় ইউসুফ আব্দুল্লাকে উদ্ধার করে।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাদ্রাসাটি করার সময় দেয়াল ঘেঁষে বিদ্যুতের তার রাখার বিষয়ে প্রতিবাদ করা হলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোন কর্ণপাত করেনি। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বিদ্যুতের কাভার তারের ব্যবস্থা করেনি।

নিহত মো. ইমন হোসেনের বাবা মো. ফজল হক তৈয়ব ও মা মর্জিনা বেগম বলেন, আমার ৪ সন্তানের মধ্যে মো. ইমন হোসেন একমাত্র ছেলে সন্তান। ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছি সে হাফেজ হয়ে আমাদের কবর জিয়ারত করবে জানাজা পড়াবে, কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আমার একমাত্র ছেলেকে হারাতে হলো।
 
ইউসুফ আব্দুল্লার বাবা মনির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছি হাফেজ হবে। সেই ছেলেকে দিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক তার ব্যক্তিগত কাজ করানোর সময় বিদ্যুতায়িত হয়েছে এবং মাদ্রাসার দেয়ালের সাথে কাভার বিহীন বিদ্যুতের তাঁর। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও এভাবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এভাবে ছাত্রদের জীবনের ঝুঁকিতে ফেলছে বিষয়টি মেনে নেয়ার মতো নয়।

ঘটনাস্থলে গিয়ে মাদ্রাসাটি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। মাদ্রাসার প্রদান শিক্ষক আশরাফ আলীকে পাওয়া যায়নি। মুঠো ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি শিকার করে ওই মাদ্রাসার সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে পরবর্তীতে আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখবো। শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনারপর স্থানীয়দের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাদ্রাসাটি আপাতত বন্ধ রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ হোসেন বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মৃত শিক্ষার্থীর পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা করা হয়েছে। পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিক্ষার্থীর মৃত্যু   ফরিদগঞ্জ-চাঁদপুর  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close