ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

স্বামীর মৃত্যুতে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার
প্রকাশ: সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪, ৭:১৫ পিএম আপডেট: ২৯.০৭.২০২৪ ৭:২০ পিএম  (ভিজিট : ৩২৯)
স্বামী হারিয়ে হতবাক ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী খাদিজা বেগম। কখনো ছবি দেখে ডুকরে কেঁদে উঠছেন, আবার কখনো নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন কবরের পাশে। ছবি: কোলাজ

স্বামী হারিয়ে হতবাক ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী খাদিজা বেগম। কখনো ছবি দেখে ডুকরে কেঁদে উঠছেন, আবার কখনো নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন কবরের পাশে। ছবি: কোলাজ

কুড়িগ্রামে স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রী খাদিজা বেগমের (১৯) সোনালী স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে পড়েছে। বিয়ের এক বছরের মাথায় স্বামীকে হারিয়ে গর্ভে ৮ মাসের সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। স্বামীর হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়ার দাবি তার। একই দাবি নুর আলমের আত্মীয় স্বজনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষজনের।

গতকাল (রোববার) সরেজমিন তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বামী হারিয়ে হতবাক ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা খাদিজা বেগম কখনো স্বামীর ছবি দেখে ডুকরে কেঁদে উঠছেন, আবার কখনো নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন কবরের পাশে। 

গত ২০ জুলাই সকালে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে ভাড়া বাসায় খেতে যাচ্ছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের মোল্লা পাড়া এলাকার ২০ বছর বয়সী যুবক নুর আলম। হঠাৎ কোটা আন্দোলনে সংঘর্ষের একটি গুলি তার চোখ ভেত করে বেরিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে নুর আলম। পরে স্থানীয়রা তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ রাখা হয় জয়দেবপুরে সরকারি হাসপাতালে। সেখান থেকে লাশ নিয়ে এসে পরের দিন (২১ জুলাই) গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামে দাফন করা হয়। নুর আলমের এমন মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে পড়েছেন স্বজনসহ প্রতিবেশীরা। নিহত নুর আলমের স্ত্রী ও তার গর্ভের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত তারা।

নিহতের প্রতিবেশী আকলিমা খাতুন ও শফিকুল ইসলাম জানান, পরিবারের মধ্যে নুর আলম খুবই ভালো ছেলে ছিল। কোন দল বা রাজনীতি করতো না। তারা গরীব মানুষ দিন করে দিন খেতো। ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে সে আজ গুলিতে মারা গেলো। আমরা এ হত্যার বিচার চাই। এছাড়াও তার স্ত্রীর গর্ভে সন্তানের ভবিষ্যৎ এর দাবি করছি।

স্থানীয় আমিনুল, মিলন, আজগার বলেন, নিহত নুর আলমের পরিবারে তেমন কর্মক্ষম কেহই নেই, তারা খুবই গরীব। সংসারে অভাব অনটন কমাতে সবাই কাজ করতে ঢাকায় গেছেন। সেখানেই কদিন আগে ছাত্র আন্দোলনে নুর আলম মারা যায়।

নিহত নুরের স্ত্রী খাদিজা বেগম বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনে গুলিতে নির্মম ভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। যারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে আমি তার বিচার চাই। সরকারের কাছে স্বামী, আমার ও পেটের সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সাঈদুর রহমান জানান, আমার ইউনিয়নের ভ্যান চালক আমির হোসেন ও নুর বানু দম্পতি জীবিকার তাগিদে দুই ছেলে ও এক ছেলের বউকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন। হঠাৎ গুলিতে বড় ছেলেকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন পরিবারটি। এ অবস্থায় পরিবারটিকে সার্বিক সহায়তা দেয়ার দাবি করছি।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  কোটা সংস্কার আন্দোলন   সহিংসতা-নিহত   কুড়িগ্রাম   




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close