ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

১৯ জুলাই রাতে শ্রীলঙ্কান স্টাইলে গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল: ওবায়দুল কাদের
প্রকাশ: রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪, ৬:১৫ পিএম  (ভিজিট : ৩২৬)
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি করার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গত ১৯  জুলাই রাতে শ্রীলঙ্কান স্টাইলে গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল। 

তিনি বলেন,  বিএনপি-জামায়াত শিবিরের নৃশংসতা হানাদার বাহিনীকে হার মানিয়েছে। ক্ষমতার জন্য লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে শ্রীলঙ্কা স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি দখল করার টার্গেটও ১৯ জুলাই রাতে ছিল, যদি কারফিউ জারি না হতো। এই প্ল্যান তাদের ছিল। শ্রীলঙ্কা স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি আক্রমণ করা, অভ্যুত্থানের ওপর ভর করে হাওয়া ভবনের যুবরাজ ক্ষমতা দখল করতো। এটাই তো তাদের পরিকল্পনা।

রোববার (২৮ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দুস্থদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে নিয়ে নতুন প্ল্যাটফর্ম করার কথা জানান দিচ্ছে। তাদের আহ্বানে তাদের দোসররা সাড়া দেবে এটাই স্বাভাবিক। মাথা যেদিকে যাবে লেজও সেদিকে অনুসরণ করে, এতে নতুনত্ব কিছু নেই। তবে তাদের ঐক্য আগুনসন্ত্রাসের ঐক্য। দেশ ও দেশের উন্নয়ন ধ্বংসের ঐক্য।

সেনাবাহিনী কোথাও গুলি করেনি বলে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন কারফিউ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিলেন, সেনাবাহিনী নামলো। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, সেনাবাহিনী কোথাও একটা গুলিও ছুড়েনি। অথচ অপবাদ দেওয়া হচ্ছে, আমরা যেন হাজার হাজার মানুষ মেরে ফেলেছি। আজকে আমাদের মেরে ফেলা গতকাল তালিকায় দেখেছি, আমাদের ১২জন কর্মী। এগুলো করেছে আক্রমণকারীরা। আজকে অনেকে অনেক কথা বলেন। ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে ১৫ জনকে। এসবের জন্য কারা দায়ী। শেখ হাসিনা দেখতে যাচ্ছেন বিবেকের টানে, হৃদয়ের টানে। আপনাদের মতো মায়াকান্না করতে নয়। বঙ্গবন্ধু মানুষের জন্য যা করতেন, তার কন্যাও সেই সহানুভূতি নিয়ে যাচ্ছেন।

মন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল ও এলিভিটে এক্সপ্রেসওয়ে চালু না থাকায় রাজধানীতে ভয়াবহ যানজট হচ্ছে। ধ্বংস লীলায় মেট্রোরেলের ১০ নম্বর স্টেশন, কাজীপাড়া স্টেশন,  এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজা আগুনে কয়লা হয়ে গেছে। উত্তরা থেকে মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারছে না। এই কষ্ট বহুকালের। শেখ হাসিনাই জনগণের কষ্ট লাঘবে এসব প্রকল্প নিয়েছেন। আমাদের বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট গাজীপুর থেকে চালু হওয়ার কথা। ৩৪টি এক্সিলেটর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেমনে চালু করবো? জনগণ আজ উপলব্ধি করছেন মেট্রোরেল, এলিভেটেড বন্ধ থাকলে তারা কত কষ্টে থাকেন, এই কষ্টটা আমরা দেইনি। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতার জন্য সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে ও সহিংসতার পথ বেছে নিচ্ছে।

নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের ভারতের দ্যা হিন্দু পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে ইউনূস কত নির্লজ্জ, তিনি ভারতকে অনুরোধ করেছেন শেখ হাসিনাকে থামাতে। শেখ হাসিনা আক্রান্ত, আক্রমণকারী নয়। তাকে থামাবে কেন? আক্রমণকারীদের থামান। যাদের সঙ্গে আপনি আছেন। বিবৃতি দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপের জন্য বিদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান ড. ইউনূস। তিনি সাক্ষাৎকারে মধ্যবর্তি নির্বাচন দাবি করেছেন।

সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে বিদেশিদের দেওয়া বিবৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে অনেকেই বিবৃতি দিচ্ছেন। অনেক সংস্থা, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও আছেন। কারা সমন্বয় করছেন আমরা জানি। তাদের বলবো, কারও প্ররোচনায় বিবৃতি না দিয়ে এখানে এসে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়, বিআরটি’র ধ্বংসলীলা দেখুন। বিআরটিসির ৪৪টি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, তা দেখুন। সাংবাদিক বন্ধুরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। বিবৃতি যুদ্ধ চলছে দেশে-বিদেশে। যেখানে ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলব ড. ইউনূসও যোগ দিয়েছেন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই আমরা আক্রান্ত, আক্রমণকারী নই। এখন বিবৃতি আসছে আক্রান্তদের বিরুদ্ধে। আক্রমণকারী আমরা না। ড. ইউনূস সরকারবিরোধী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। অতীতে যিনি রাজনৈতিক দল খুলে ওয়ান-ইলেভেনে সাড়া পাননি, যার বিরুদ্ধে মামলা চলমান। যিনি পদ্মা সেতু নির্মাণে বিরোধিতা করেছেন। তিনি আবার সক্রিয়। আগে গোপনে করেছেন। এবার তিনিও এসেছেন। বাইরে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নেই।

প্রধানমন্ত্রীকে থামাতে ভারতের প্রতি অনুরোধ জানানো আপত্তিকর উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই দেশ স্বাধীন দেশ। স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বুঝানো! কী বুঝাতে তিনি ভারতকে বলেছেন। খোলাসা করে ইউনূস সাহেব বলবেন কি?

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। এসময় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে ১০ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি করে ডাল ও লবণ এবং ১ লিটার তেল দেওয়া হয়।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close