প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে : ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪, ৫:৩৯ পিএম (ভিজিট : ২৫২)

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও বিচার হবে।

তিনি বলেন, যারা সহিংসতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সরকার হটানোর অপচেষ্টা সফল হতে দিতে পারি না। এই অশুভ চক্রান্ত ব্যর্থ হবে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের সাম্প্রতিক সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ দায় বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসরদের। এ দায় থেকে মুক্তি পেতে তারা আন্তর্জাতিক তদন্ত চাইছে। মির্জা ফখরুল থলের বিড়াল বের হতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করছে। তারা দেশ ও দেশের মানুষের ওপর আস্থা রাখে না। এবারও তাদের সে সন্ত্রাসী চরিত্র উন্মোচিত হওয়ায় এ দায় থেকে মুক্তি পেতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ চাইছে। আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের হত্যা করে সরকারের ওপর দায় চাপানো হয়েছে। আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। নজিরবিহীন তাণ্ডব চালিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো। ৭১-এ যারা বেইমানি করেছে, হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তারা এখনও বেইমান। ৭১-এর খুনি, ৭৫-এর খুনি, ২১ আগস্টের খুনি, ২৪ সালেও একই খুনি। তারা বিএনপি-জামায়াত।

কোটা নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। আমরা বরাবরই শিক্ষার্থীদের দাবি সমর্থন করে আসছি। আমরা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু কামনা করি না। প্রতিটি হত্যার বিচার হবে। যারা সহিংসতায় জড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা দেশের মানুষ মেনে নেবে না। অচিরেই দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এখনও যারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে যাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য দেশকে ধ্বংস করা, দেশের অর্থনীতিকে আরও ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া। বিএনপি-জামায়াত, বাম উগ্র গোষ্ঠী, দেশি-বিদেশি কুচক্রি মহল এখনও সক্রিয় আছে। বিএনপির-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডাররা আবারো হামলা চালানোর চেষ্টা করতে পারে। দেশবাসীর প্রতি আহ্বান, যেখানেই আক্রমণকারী দেখবেন সে খবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে সহযোগিতা করবেন।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহিংসতাকারীদের ধ্বংসাত্মক কাজ জাতির সামনে উপস্থাপন করে সত্য প্রকাশ করুন। আওয়ামী লীগকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষ বানানোর চেষ্টা সফল হবে না।

গত কয়েকদিনের সহিংসতায় কতজন মারা গেছে এমন সংখ্যা আছে কিনা এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা মৃত্যুর তালিকা দেখলাম পত্র-পত্রিকায় দুশোর মতো বা দুশো’র চেয়ে একটু বেশি। আমরা এটার খোঁজ-খবর নিচ্ছি। গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের সঙ্গে জুয়েল নামে একটি ছেলে সবসময় থাকতো, তাকে উত্তরায় মেরে লাশ লটকিয়ে রাখা হয়েছে। কি বর্বর! নৃশংসতা! পুলিশকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অনেক নিরীহ মানুষ মারা গেছে। জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্যপট দেখছিল, বাচ্চা যখন তাকালো, সেই বাচ্চা গুলি খেয়ে মারা গেল। তারপরে এ ধরনের ঘটনা আরও অনেক ঘটেছে। রাস্তায় বেরিয়েছে। নিষ্পাপ, নির্বোধ শিশু, কিছুক্ষণ পর দেখা গেল সেও লাশ হয়ে পড়েছিল। এরকম ঘটনা অনেক আছে। এগুলো জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব। আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সময়মতো সাংবাদিকেরাও নিচ্ছেন। সব সত্য বেরিয়ে আসবে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াত-শিবিরের হাতে অস্ত্র ছিল। কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এখনও চলছে উদ্ধার অভিযান। এদের নির্দেশদাতা ও হোতারা কিন্তু গ্রেফতার হয়েছে। রিমান্ডে আছে। অনেক সত্য বেরিয়ে আসবে। আমরা তো রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করছি। প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলা করছি। আপনাদেরও সহযোগিতা চাই। এ অপশক্তি সবারই শত্রু। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলব।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

সময়ের আলো/জেডআই