নিজের ছোট ছেলের বিয়ের জন্য বিদেশ থেকে আনা স্বর্ণালংকার আলমারিতে তুলে রেখেছিলেন সাজেদা আক্তার (৫৫)। সঙ্গে নগদ টাকাও। আত্মীয়তার সুযোগে ফ্ল্যাটে ঢুকে এসব চুরি করতে যায় সাজেদার বড় ছেলের শ্যালক মাওলানা তারিফুল ইসলাম (৩০)। এসময় তাকে চিনে ফেলায় ঘরের মেঝেতে ফেলে হাত-পা বেঁধে গলায় ছুরি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে বোনের শাশুড়িকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার নাগাদ উপজেলার মিরসরাই পৌর সদরের ফারুকিয়া মাদরাসা রোড এলাকার বন্ধন নামের একটি আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলার বি-১ ফ্ল্যাটে খুনের শিকার হন সাজেদা আক্তার। তিনি উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের পশ্চিম মলিয়াইশ গ্রামের লালমোহন চৌধুরী বাড়ির মামুন চৌধুরীর স্ত্রী। এরপর বেলা ২টার নাগাদ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ঘরের মেঝের থেকে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে পাঠায়।
এরপর পাশের একটি ভবনের সিসি টিভির ফুটেজ দেখে খুনিকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এরপর ওইদিন দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য ও মোবাইল ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে খুনির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালায় তারা। পরে উপজেলার জোরারঞ্জ থানার জোরারগঞ্জ বাজার এলাকার নজির আহম্মদ মাদরাসা থেকে খুনের সাথে জড়িত মাওলানা মো. তারিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করার পর ওই মাদ্রাসার একটি কক্ষ থেকে রক্তমাখা চুরি, ট্রাউজার, খুনের সময় ব্যবহৃত হিরো মোটরবাইক ও চুরি হওয়া ইমিটেশন এর একটি নেকলেস, দুই জোড়া কানের দুল ও নগদ ৪৩ হাজার টাকা উদ্ধার করে।
মিরসরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপ্তেশ রায় জানান, এ ঘটনায় নিহত সাজেদা আক্তারের কন্যা আফিয়া চৌধুরী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাতে মিরসরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের সাথে জড়িত থাকার বিষয় মাওলানা তারিফুল ইসলাম স্বীকার করেছেন। আজ (শুক্রবার) বেলা ১২টার পর তাকে আদালতে তুলতে চট্টগ্রামে নেয়া হয়।
গ্রেফতার হওয়া তারিফুলের বাড়ি উপজেলার ১০ নম্বর মিঠানালা ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের। সে গ্রামের সোহোরাওর্দী ভূঁইয়া বাড়ির দ্বীন মোহাম্মদের ছেলে। তারিফুল উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার জোরারগঞ্জ মৌলভী নজির আহম্মদ দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলো।