ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

এগিয়ে চলেছে আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ
ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব কমছে উত্তরবঙ্গের কয়েক জেলার
প্রকাশ: বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪, ২:০৭ এএম  (ভিজিট : ২১০)
নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে বগুড়ার সান্তাহার থেকে রানীনগর পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণকাজ। দুর্ভোগ কমাতে কাজের গুণগত মান বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করে সড়ক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে শতকরা ৪০ ভাগ কাজ। কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত হবে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা। এতে করে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব ও যাতায়াতের সময় দুই-ই বাঁচবে। 

এ বিষয়ে নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল হক রাসেল বলেন, আমরা সড়কের নির্মাণকাজ কঠোর নজরদারির মধ্যে রেখেছি। প্রতিটি কাজ প্রতিনিয়তই সড়ক বিভাগের লোকজন পর্যবেক্ষণ করছেন। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে যথাযথ মান বজায় রেখেই আমরা সড়কের প্রতিটি কাজ বুঝে নিচ্ছি। আমি শতভাগ আশাবাদী, সড়ক নির্মাণের কোনো কাজে কোনো ব্যক্তি কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠান ছোটখাটো ত্রুটি ছাড়া বড় ধরনের উল্লেখ্যযোগ্য কোনো ত্রুটি খুঁজে বের করতে পারবেন না। আমরা এই অঞ্চলের মানুষ তথা উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই নির্মাণকাজ চলমান রেখেছি।

নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নূরে আলম সিদ্দিক বলেন, এই অঞ্চলকে উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত করে প্রধানমন্ত্রীর আগামীর স্মার্ট যোগাযোগ ব্যবস্থা বিনির্মাণে এবং পথচারীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে নওগাঁ সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে সড়ক নির্মাণকাজ চলমান রেখেছি। পূর্বের সরু সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ, টেলিফোন লাইনের পোল স্থানান্তর, সড়কের দুই পাশে অবৈধভাবে দখল করে রাখা জায়গা উদ্ধার করতে গিয়ে কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছে। এসব সমস্যা সমাধান করে আমরা নির্মাণকাজ চলমান রেখেছি। এ ছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে সড়কের দুই পাশে খাল ও পুকুর থাকায় পানি শুকিয়ে সড়কের দুই পাশে প্রায় আড়াই কিলোমিটার প্যালাসাইডিং কাজ করতে গিয়েও কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছে। তারপরও বর্তমানে সন্তোষজনক গতিতে আমরা নির্মাণকাজ চলমান রেখেছি। আমি শতভাগ আশাবাদী, বড় ধরনের কোনো সমস্যা কিংবা বাধার সম্মুখীন না হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা পুরো সড়কের নির্মাণকাজ শেষ করতে সক্ষম হব।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র মো. হাসান আলী বলেন, আমরা প্রতিটি কাজ নির্ধারিত নকশা অনুসারে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা মোতাবেক সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেয় এবং নতুন করে কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয় তা হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ করে সড়ক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করতে সক্ষম হব। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য স্থানীয় লোকজনসহ সবার কাছ থেকে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।

নওগাঁ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ঢাকার সঙ্গে নওগাঁ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, পঞ্চগড়সহ আরও কয়েকটি জেলার চলাচলে দূরত্বের পাশাপাশি ১ ঘণ্টা সময় কমিয়ে এনেছে সান্তাহার-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়ক। মোট ৩১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে নওগাঁ সড়ক বিভাগের আওতায় থাকা ২৯.১৯ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজ শেষে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে কয়েক বছর আগেই। কিন্তু মহাসড়কের সান্তাহার মোড় থেকে রানীনগর রেলস্টেশন পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ছিল খুবই সরু যা বড় বড় যানবাহন চলাচলের জন্য অনেকটাই অনুপযোগী ছিল। সেই ৮ কিলোমিটার সড়ক নতুন করে প্রশস্তকরণের পদক্ষেপ নেয় নওগাঁ সড়ক বিভাগ। তারই ধারাবাহিকতায় নওগাঁ সড়ক বিভাগের অধীনে তিনটি আঞ্চলিক ও তিনটি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্তায় উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সান্তাহার থেকে রানীনগর রেলস্টেশন পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট প্রশস্ততায় উন্নীতকরণের জন্য ৬৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর কাজটির কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব পায় মেসার্স জামিল ইকবাল লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজের শুরুতেই বিভিন্ন সমস্যার কারণে নির্মাণকাজ একটু দেরিতে শুরু হলেও বর্তমানে সড়ক বিভাগের প্রত্যক্ষ নজরদারিতে দ্রুতগতিতে নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক দিয়ে পথচারী ও যানবাহনের চলাচলে দুর্ভোগ লাঘবের কথা চিন্তা করে নির্ধারিত সময়ের আগেই আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হওয়ার আশা করছে নওগাঁ সড়ক বিভাগ।

সরেজমিন কথা হয় মালশন গ্রামের বাসিন্দা মশিউর রহমান রাঙ্গার সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, পুরো আঞ্চলিক মহাসড়কের সুবিধা পেতে হলে সান্তাহার-রানীনগর পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের কোনো বিকল্প ছিল না। অবশেষে সেই কাজ শুরু হয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। কাজ শেষ হলেই আমরা অবহেলিত এই অঞ্চলের মানুষ ঢাকার সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগের জন্য উন্নয়নের মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হতে পারব। এমন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি প্রধানমন্ত্রী ও সড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট সবাইকে।

রানীনগরের অটোরিকশাচালক নুর ইসলাম বলেন, রানীনগর থেকে সান্তাহার যাওয়ার আগের সড়কটি ছিল এবড়োথেবড়ো। সেই সড়কে গাড়ি চালিয়ে নিজের শরীরের যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনি গাড়ির যন্ত্রাংশও নষ্ট হতো ঘন ঘন। কিন্তু বর্তমানে যে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে তাতে মনে হয় আগামী ১০০ বছরেও এই ৮ কিলোমিটার সড়কে আর মেরামত করা ছাড়া বড় ধরনের কোনো কাজে হাত দিতে হবে না। আমরা আর দুর্ভোগের সড়কে যাতায়াত করতে চাই না। আমরা চাই, দ্রুত এই সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হোক।


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close