ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

বদনজর যেভাবে মানুষের ক্ষতি করে
প্রকাশ: সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪, ৪:৪২ এএম  (ভিজিট : ২৯৬)
ভালো-মন্দ সব ধরনের নজর বা দৃষ্টিপাতে এক প্রকার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। মন্দ নিয়তে কোনো নজর লেগে গেলে নজরকৃত ব্যক্তি বা জিনিসের ক্ষতি হয়। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা বদনজরের প্রভাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো। কেননা বদ নজরের প্রভাব সত্য’ (ইবনে মাজাহ : ৩৫০৮)। পবিত্র কুরআনেও কয়েক জায়গায় বদনজরের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে। 

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘কাফেররা যখন উপদেশবাণী শোনে তখন তারা যেন তাদের দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়ে ফেলবে, আর তারা বলে এ তো এক পাগল’ (সুরা কলম : ৫১)। আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) এই আয়াতের তাফসিরে বলেছেন, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত- আয়াতে ‘তাদের দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়ে ফেলবে’ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে তোমার প্রতি বদনজর দেবে। অর্থাৎ তারা তোমাকে হিংসার প্রতিফলন ঘটিয়ে রোগী বানিয়ে দেবে যদি আল্লাহর তোমার প্রতি হেফাজত না থাকে। আয়াতটি প্রমাণ বহন করে যে, বদনজরের কুপ্রভাবের বাস্তবতা রয়েছে, আল্লাহর হুকুমে। (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৪/৪১০)

কেউ বদনজরে আক্রান্ত হলে তার জন্য উপশমও বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। এমন কিছু আমল হচ্ছে- দোয়া পড়ে আক্রান্ত রোগীর ওপর ঝাড়ফুঁক করা। হজরত আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুল (সা.) একবার কোনো এক রোগে আক্রান্ত হলেন। তখন ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) নবীজি (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ইয়া মুহাম্মদ! আপনি কি অসুস্থতা বোধ করছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। জিবরাইল (আ.) বললেন, ‘বিসমিল্লাহি আরকিকা মিন কুল্লি শাইয়িন ইউজিকা মিন শাররি কুললি নাফসিন আউ আইনিন হাসিদিন, আল্লাহু ইয়াশফিকা বিসমিল্লাহি আরকিকা, অর্থাৎ আল্লাহর নামে আপনাকে ফুঁ দিচ্ছি, যেসব জিনিস আপনাকে কষ্ট দেয় সেসব প্রাণের অনিষ্ট কিংবা হিংসুকের বদনজর থেকে আল্লাহ আপনাকে শিফা দিন। 

আল্লাহর নামে আপনাকে ফুঁ দিচ্ছি’ (মুসলিম ৫৫১২)। সুতরাং দোয়াটি পড়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বারবার ফুঁ দিলে ইনশাআল্লাহ ধীরে ধীরে বদনজর কেটে যাবে। নবীজি (সা.) হাসান ও হোসাইন (রা.)-কেও এসব বাক্যগুলো দিয়ে ঝাড়ফুঁক করতেন (বুখারি : ৩৩৭১)। এ ছাড়া সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস তিনবার আক্রান্ত ব্যক্তিকে পড়ে ফুঁ দেওয়া। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সুরা ফালাক ও নাস অবতীর্ণ হওয়ার আগপর্যন্ত নিজ ভাষায়) জিন ও বদনজর থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। পরিশেষে যখন সুরা দুটি অবতীর্ণ হলো, তখন ওই সুরা দুটি দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগলেন এবং অন্যান্য সব পরিহার করলেন।’ (তিরমিজি : ২০৫৮)

মোটকথা, বদ নজরের বিষয়টি সত্য। কখন কার ওপর কী কারণে বদ নজর পড়ে যায় তা বলা যায় না। এ জন্য সবসময় আমলের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর দোয়া দরুদ পড়ে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। আল্লাহ তায়ালা সুরা ফালাক ও নাসের মাধ্যমে মানুষ ও জিনের যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে বাঁচার জন্য প্রার্থনা করতে শিখিয়েছেন। আল্লাহ সবাইকে বদ নজর থেকে হেফাজত রাখুন এবং আমল করার তওফিক দান করুন।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close