ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

দানের টাকার সেই হাসপাতাল এখন পুরোপুরি স্টোর রুম
প্রকাশ: রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪, ৭:২৪ পিএম  (ভিজিট : ৭০৬)
২০১৯ সালে বিশ্বে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। শহর থেকে দূরে থাকা মানুষের অসহায়ত্ব বাড়ে। ফলে সংক্রমিতদের সেবা দিতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে দানের টাকায় গড়ে তোলা হয় কোভিড-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতাল। যা ছিল দেশে প্রথম এবং একমাত্র। কিন্তু সেই হাসপাতালে এখন আর মেলেনা সেবা, এটি এখন পুরোপুরিই বন্ধ। হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রমেই নষ্ট হচ্ছে। কিছু কিছু সরকারি হাসপাতালে ব্যবহার হচ্ছে। আবার কিছু যন্ত্রপাতি সেখানে স্টোর করে রাখা হয়েছে। এসব অযত্নে নষ্ট হচ্ছে ধীরে ধীরে। ফলে কোটি টাকার যন্ত্রাংশ এখন আর কোন কাজেই আসছে না। বলতে গেলে এসব টাকা বেহাতই হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, করোনা শুরু হলে ২০২০ সালের ৮ জুন তৎকালীন সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এলাকাবাসীর দাবীর মুখে উপজেলা সদরের পরিত্যক্ত ২০ শয্যার হাসপাতালটিকে কোভিড-১৯ হাসপাতালে রূপান্তরে উদ্যোগ নেন। এটি পরিচালনায় একটি কমিটি হয়। কমিটির প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পান তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সায়েদুল আরেফিন। তিনি স্থানীয়দের নিয়ে মতবিনিময় করে অর্থ যোগানের সহায়তা চান। পরবর্তীতে শিশু-বৃদ্ধ-শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলে সহায়তার হাত বাড়ান।

২১ জুন হাসপাতালটি চালাতে স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন পায়। ২৮ জুন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ এটি পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এবং ফান্ডে দেড় কোটি টাকার তহবিল জমা হয়। এছাড়া ৭৫ লক্ষ টাকার মেডিকেল সরঞ্জামাদি অনুদান আসে। হাসপাতালে তৈরি করা হয় এসি কক্ষ। অক্সিজেন সমৃদ্ধ অত্যাধুনিক কেবিন ও আইসোলেশন সেন্টার। এটি চালাতে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। এর প্রধান হন তৎকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাবিল চৌধুরী। 

কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. জয়নাল আবেদিন মুহুরীর সহায়তায় সে সময় ৬ ডাক্তার, ১৫ নার্স ও ২০ জনের স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া হয়। হাসপাতাল চলে দীর্ঘ দেড় বছর। পরে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এখন সবই অতীত। সেখানে নেই কোন জনবল ও সেবা। 

ডা. মো. জয়নাল আবেদিন মুহুরী বলেন, ‘দানের টাকার নয়ছয়ের কোন সুযোগ নেই। তবে সরঞ্জামগুলোর কিছু কিছু এখন আর কোন কাজে আসছে না। আমরা এটিকে মা ও শিশু হাসপাতাল করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। স্থানীয় সাংসদও এতে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন।’

বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা (ইউএইচও) ডা. আরেফিন আজিম বলেন, ‘দেশে দানের টাকায় একমাত্র কোভিড-১৯ হাসপাতাল ছিল এটি। এটির কার্যক্রম বন্ধের পর সেখানে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সেবা চালু আছে। তবে ভবিষ্যতে আমরা এটিকে মা ও শিশু হাসপাতাল করার চেষ্টা করছি।’

স্থানীয় সাংসদ খাদিজাতুল আনোয়ার সনি বলেন, ‘এই হাসপাতাল করোনাকালে উপজেলাবাসীর ভরসাস্থল ছিল। এখন এটিকে মা ও শিশু হাসপাতাল করার কাজ চলমান। এটি চালু হলে এসব অর্থ সেখানে ব্যয় করা হবে।’

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  দানের টাকায় হাসপাতাল-যন্ত্রপাতি নষ্ট   ফটিকছড়ি-চট্টগ্রাম  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close