ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

আজ আন্দোলনে নামছে না কোটাবিরোধীরা, চলবে সমন্বয়
প্রকাশ: শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৪, ১২:২৫ এএম  (ভিজিট : ৩১৬)
সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে 'কোটা' সংস্কার করে সংসদে আইন পাস করার দাবিতে আজ শনিবার সারাদেশে সকল বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ ও ৬৪ জেলায় অনলাইন ও অফলাইন প্রতিনিধি বৈঠক করবেন আন্দোলনকারীরা। একইসাথে সন্ধ্যা ৬ টায় সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করবেন তারা। শুক্রবার সন্ধ্যায়  বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে  এ ঘোষণা দেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম 'বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন' এর অন্যতম সমন্বয়ক আবু বকর মজুমদার। 

সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে 'কোটা' সংস্কার করে সংসদে আইন পাস করার দাবিতে ও সারাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনে বাধার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। বিকেল সাড়ে ৫ টা থেকে ৬টা ২০ মিনিট পর্যন্ত শাহবাগ অবরোধ করে এ বিক্ষোভ করেন তারা।

বিক্ষোভ সমাবেশে আবু বকর মজুমদার বলেন, বৃহস্পতিবার আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ আঘাত করেছে। এরপর থেকে কোথাও আমাদের কারও উপর হামলা হলে আমরা সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতি আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমাদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে প্রশাসন সাংবাদিকদের উপর হামলা করেছে।
 
এসময় তিনি পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আগামীকাল সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন অফলাইন বৈঠক বা সমন্বয় হবে এবং সন্ধ্যা ৬ টায় একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি জানিয়ে দেওয়া হবে।

আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, এতদিন আমরা সরকারের কাছ থেকে একটি আশ্বাস প্রত্যাশা করছিলাম। কিন্তু এখন হাইকোর্ট বলেই দিয়েছে সরকার চাইলে কোটা বাড়াতে বা কমাতে পারে। এখন আর আশ্বাসের কিছু নেই। আমাদের এখন দাবি সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে আইন পাশের মাধ্যমে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করা। এ দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তবে আমাদের প্রতিটি পরিকল্পনা সরকারের গতিবিধি দেখে পরিবর্তনশীল।

এর আগে বিকাল ৪টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও ডিপার্টমেন্টের ব্যানারে স্লোগান ও মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হতে থাকেন তারা। এসময় তারা কোটা সংস্কারের দাবিতে নানান স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল, ভিসি চত্বর ও রাজু ভাস্কর্য হয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকেলে কলা ভবনের সামনে থেকে মিছিল বের করে আশপাশের সড়ক ঘুরে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন তারা। 
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আজ বিকেল সাড়ে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে থেকে মিছিল শুরু করেন। মিছিলে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। মিছিল থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো ঘুরে পাশের বাহাদুর শাহ পার্ক, কবি নজরুল কলেজের সামনের চত্বর প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসের মেইন গেটের সামনে আসে। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কোটাব্যবস্থায় মেধাবীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কোটাব্যবস্থা সংস্কার প্রয়োজন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দ্রুত সংসদে আইন পাস করে কোটা সংস্কারের দাবি জানান।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাহিন মিয়া বলেন, বর্তমানে যে কোটাব্যবস্থা রয়েছে, এটি মেধাবীদের বঞ্চিত করছে। পাশাপাশি একটা রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অমেধাবী, অযোগ্য লোক ঢুকে পড়ছেন। স্মার্ট রাষ্ট্র গড়তে অবশ্যই যোগ্য প্রার্থীকে তাঁর যোগ্য স্থান দিতে হবে। কোটার মাধ্যমে যা কখনোই সম্ভব নয়। কোটার মাধ্যমে যেই বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর করতেই আন্দোলন।

এর আগে বেলা তিনটায় কোটা সংস্কার আন্দোলন সমন্বয়ের জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সভার আয়োজন করেন। সেখানে নতুন করে সমন্বয় কমিটি গঠন করার কথা ছিল, কিন্তু নতুন সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়নি। তবে যাঁরা আন্দোলনের শুরু থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলেন, তাঁরা পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন। তবে এ বিষয়ে পদত্যাগ করে সমন্বয়কেরা গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য জানাতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, মূলত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের চাপ থাকার কারণে হয়তো সমন্বয়কেরা আন্দোলন থেকে সরে গেছেন। এ ছাড়া সমন্বয়কদের নির্দেশনা অনুসরণ না করে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো অনেক সময় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্দোলন করায় সমন্বয়কেরা পদত্যাগ করেছেন। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয়ভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত সমন্বয়কদের সঙ্গে সমন্বয় করেই আন্দোলন কর্মসূচিতে যুক্ত হবেন তারা। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গত কয়েকদিন কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধ করেন ‍বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবি ও চলমান আন্দোলনে দেশের কয়েকটি স্থানে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে এক সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

শিক্ষার্থীরা এ সময় বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। সেই হামলার প্রতিবাদে ও কোটা সংস্কারের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে তারা এই প্রতিবাদী মশাল মিছিলের আয়োজন করেছেন।




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close