ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ভরা মৌসুমেও ধান-চালের বাজার বেসামাল, বাজার নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন
প্রকাশ: বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪, ৪:২০ এএম  (ভিজিট : ২৫৪)
এবার দেশে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকারি গুদামেও ধান-চালের মজুদ বেড়েছে। অথচ টিসিবির তথ্য বলছে, গত এক মাসের ব্যবধানে দেশের বাজারে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। মজুদ ও সরবরাহে ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও কেন কিছুদিন পরপর চালের বাজার অস্থির হয় ওঠে এ প্রশ্নের জবাব মিলছে না। উল্লেখ্য, গত বছরেও দেশে একই প্রবণতা লক্ষ করা গেছে।  

কিছুদিন আগে আলু ও ডিম ব্যবসায়ীরা যখন অস্বাভাবিক মুনাফা করছিল, তখন পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরাও বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। এর প্রভাব পড়ে সবজি বাজারে। গত কয়েক মাসে আলুর বাজারেও নজিরবিহীন অস্থিরতা লক্ষ করা গেছে। এসব পর্যবেক্ষণ করে মনে হচ্ছে, সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের বাজারব্যবস্থা। অসাধু ব্যবসায়ীরা কৌশলে অতি মুনাফা লুটছে। 

এক গবেষণায় জানা যায়, দেশে ধান-চালের বাজারে কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে কয়েকবার হাতবদল হয়। এ প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি মুনাফা করে থাকেন চালকল মালিকরা। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে মজুদ করেন। এ ধান সিন্ডিকেট করে মিলারদের কাছে বাড়তি দামে বিক্রি করা হয়।

মঙ্গলবার সময়ের আলোর একটি প্রতিবেদনে বাজার বিশ্লেষক ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, ‘ধান-চালের দাম বৃদ্ধির কারণ একটাই, চাল ব্যবসায়ীদের ফ্রি-স্টাইল ব্যবসা। তারা বেশ ভালো করেই জানে, দাম যতই বাড়িয়ে দিক, কারও কাছে এর জবাবদিহি করতে হবে না। সরকারি সংস্থাগুলো বা নীতিনির্ধারকরা বাজারের দিকে ঘুরেও তাকাচ্ছেন না। এ সুযোগে বোরোর ভরা মৌসুমেও ফ্রি-স্টাইলে চালের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।’

আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতারা বিস্ময় ও ক্ষোভের পাশাপাশি অসহায়ত্বের কথা বলছেন। বিক্রি-বাট্টা কমে যাওয়ার কথা জানাচ্ছেন খুচরা দোকানিরা। তারা অসময়ে চালের দাম বেড়ে যাওয়ার জন্য চালকল মালিকদের দুষছেন।   

বাজার তদারকিসহ নানা পদক্ষেপ অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও চালের বাজারের অস্থিরতা কাক্সিক্ষত মাত্রায় কমানো যাচ্ছে না। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য চালের ধারাবাহিক দাম বাড়ার সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাবগুলো বিবেচনায় রাখতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে দারিদ্র্যসীমার ওপরে থাকা মানুষ দরিদ্র হবে, আর নিচে থাকা মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়বে। এতে দারিদ্র্য দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেবে, দেশের মানুষ পড়বে অপুষ্টির চক্রে। 

আমরা মনে করি, কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হলে এখনো বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। মজুদ, সরবরাহ ও আমদানি- এই তিনটি দিকে সার্বক্ষণিক নজরদারি জরুরি। একই সঙ্গে চালের সিন্ডিকেট চক্রের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের কঠিন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো চালের বাজার নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে-আমরা এমনটাই আশা করি।    

সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close