বগুড়ার কাহালুতে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছেন। স্কুলের সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলাম বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে স্কুল থেকে পালিয়ে নিয়ে ঐ ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত দেড় সপ্তাহ আগে কাহালু তাইরুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলেও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ঐ স্কুলের প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী ও অভিভাবক গন।
সুনামধন্য কাহালু তাইরুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এমন ঘটনায় হতবাক হয়েছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীগন। সরকার বাল্য বিয়ে বন্ধ ও নিরুৎসাহিত করতে সচেতনতা মূলক প্রচার-প্রচারণা, সভা-সমাবেশসহ নানা কঠোর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করলেও অভিভাবকরা সেটি মানছেন না। মেয়ে সন্তানরা একটু বেড়ে উঠলেই অভিভাবকরা লুকিয়ে চাপিয়ে তাদের পাত্রস্থ করছেন। সম্প্রতি কাহালু তাইরুন্নছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এ ঘটনা অনেক অভিভাবককে দুশ্চিন্তাই ফেলে দিয়েছে।
ঐ স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. আরিফুল ইসলাম দিনাজপুর জেলার অধিবাসী। তিনি গত ২০২২ সালে এনটিআরসির মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে কাহালু তাইরুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। শ্রেণি কক্ষে পাঠদানকালে আরিফুল ইসলাম ঐ শিক্ষার্থীর নজর কাড়ে। এক পর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এ ঘটনা ঐ শিক্ষার্থী তার অভিভাবককে জানালে তারা উভয় পরিবারের সম্মতিতে ঐ শিক্ষকের সাথে বিয়ে দেন।
এদিকে ঐ শিক্ষার্থীর বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় নিকাহ নিবন্ধন করা হয়নি। ফলে এ বিয়ে বাল্য বিয়ে হিসেবে গণ্য হওয়ায় এলাকায় গুঞ্জন চলছে। এ বিষয়ে ঐ শিক্ষার্থীর বাবা উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের সাতরোখা গ্রামের তারিকুল ইসলাম তারিক এর সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, উভয় পরিবারের পারিবারিক মতামতের উপর ভিত্তি করে আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। তবে মেয়ের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় নিকাহ নিবন্ধন করা সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার মোবাইলে আরিফুল ইসলামের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি এ ঘটনার পর থেকে আরিফুল ইসলাম ও ঐ শিক্ষার্থী স্কুলে আসেনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, বিয়ে করা অপরাধ নয়, তবে পরিণত বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিৎ ছিলো।
তাইরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বেলাল উদ্দিনের সাথে মোবাইলে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেনি।