ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

ফ্রান্সে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ
প্রকাশ: সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪, ৬:০৬ এএম  (ভিজিট : ১৯৮)
ফ্রান্সের পার্লামেন্টে নির্বাচনে রোববার দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ হয়েছে। পার্লামেন্টে বৃহত্তম শক্তি হিসেবে কট্টর-ডানপন্থিদের আবির্ভাবের আশঙ্কায় দেশজুড়ে উত্তেজনার মধ্যে এই ভোট হচ্ছে।  জনমত জরিপের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফ্রান্সে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হতে পারে। খবর এএফপির। 

গতকাল রোববার গ্রিনিচ মান সময় (জিমএটি) সকাল ৬টায় ফ্রান্সের মূল ভূখণ্ডে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে জিএমটি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ভোটে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩০ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে ডানপন্থিদের জয়লাভের পর প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আগাম নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেন। এএফপি বলছে, তার এই সিদ্ধান্ত এক প্রকার হিতে বিপরীত প্রমাণিত হয়েছে। মিলেছে ডানপন্থিদের ব্যাপক উত্থানের আভাস।

এদিকে ভোটাররা দেশটির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য বড় পরিবর্তনের কথা ভেবে উদ্বিগ্ন। স্ট্রাসবুর্গের পূর্বের গ্রাম রোশেমে ৭২ বছর বয়সি অঁতোয়ান শ্রামেক জানান, ফ্রান্সের প্রজাতন্ত্রের ইতিহাসে একটি টার্নিং পয়েন্ট আসছে বলে আমার আশঙ্কা। এদিকে ৪১ বছর বয়সি সরকারি কর্মচারী আদেল্লা ফুর্নিয়ের বলেন, আমি চাই জনগণের মনোভাব শান্ত হোক। কিন্তু সেই পরিস্থিতি থেকে আমরা অনেক দূরে রয়েছি।

প্রথম পর্বের নির্বাচনে কট্টর-ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) এগিয়ে ছিল। রোববারের নির্বাচনে ফের সেই শীর্ষস্থান ধরে রাখার পথে রয়েছে। তবে আরএন দল সরাসরি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে কি না তা অনিশ্চিত। ফলে ম্যাক্রোঁকে লে পেনের প্রতিনিধি জর্ডান বার্দেলাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিতে হতে পারে।

একটি বিভক্ত পার্লামেন্ট এবং বৃহৎ ইউরোকেন্দ্রিক অভিবাসনবিরোধী অংশীদারত্ব ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক অবস্থানকে দুর্বল করতে পারে। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের বিরুদ্ধে পশ্চিমা ঐক্যকেও হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

জনমত জরিপের পূর্বাভাসেও বলা হয়েছে, ফ্রান্সে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হতে পারে। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে কোনো দল বা জোট যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় তা হলে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং তাতে করে ফ্রান্সে রাজনৈতিক স্থবিরতা দেখা দিতে পারে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে ইতালি এবং নেদারল্যান্ডসে ক্ষমতাসীন কট্টর-ডানপন্থি দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করার চেষ্টা করছেন। তারা এখন ফ্রান্সের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। রোমে পোপ ফ্রান্সিস ভোটের দিন ‘বুদ্ধিবৃত্তিক প্রলোভন এবং জনতোষণবাদীদের’ বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেছেন, ‘বিশ্বে গণতন্ত্রের অবস্থা ভালো নয়’।

গত সপ্তাহে ২০০টি কৌশলগত ভোট চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে মধ্য ও বামপন্থি প্রার্থীরা একত্রে নির্বাচনি সমঝোতায় এসেছে। তাদের লক্ষ্য আরএন দলকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন থেকে ঠেকানো যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, আরএন দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজনীয় ২৮৯টি আসন থেকে অনেক দূরে থাকলেও ৫৭৭ আসনের জাতীয় পরিষদে বৃহত্তম দল হয়ে উঠতে পারে।

শুক্রবার ফরাসি টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে সরকারের প্রধান গ্যাব্রিয়েল আত্তাল বলেছেন, বিপদ হলো কট্টর-ডানপন্থিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা। যা অত্যন্ত বিপর্যয়কর হতে পারে। অন্যদিকে ম্যাক্রোঁর এ পার্লামেন্ট নির্বাচনের সিদ্ধান্তে অনেকেই হতবাক। এই নির্বাচন পার্লামেন্টে আরএন দলের উপস্থিতি দ্বিগুণ করতে পারে। একই সময়ে ম্যাক্রোঁর দলের এমপিদের সংখ্যা অর্ধেকে কমে যেতে পারে। ভোটারদের বিভ্রান্ত না করতে গত কিছু দিন তাকে জনসমক্ষে দেখা দেননি।

গত রোববার (৩০ জুন) ফ্রান্সে প্রথম ধাপের পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়। নির্বাচনে প্রায় ৩৪ শতাংশ ভোট পেয়ে জয় লাভ করে মেরিন লে পেনের কট্টর ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন)। অন্যদিকে প্রায় ২৯ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান পায় বামপন্থি দলগুলোর জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট। ম্যাক্রোঁর দল ২০.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে নেমে যায়।

সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close