ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ভূমিহীন অসহায় দম্পতির ঠাঁই শ্মশানঘাটে
প্রকাশ: রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪, ১১:১২ পিএম  (ভিজিট : ৫৯০)
সময়মত ঘর ভাড়া দিতে না পারায় বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এক দম্পতিকে। কোথাও ঠাঁই না পেয়ে অবশেষে তারা আশ্রয় নিয়েছে শ্মশানঘাটে। গাংনীর ছেউটিয়া নদীর পাশে শ্মশানঘাটে কলা পাতা আর পাটকাঠি দিয়ে ঘর তৈরি করছেন বসতঘর। আশ্রয় নেওয়া সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী উপজেলার জুগিন্দা গ্রামের বাসিন্দা। তবে এ দম্পতিকে বসত ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।  

স্থানীয়রা জানান, অসহায় সিরাজুল ইসলামের নিজের কোন ভিটেমাটি বা অন্য কোন সহায় সম্পদ নেই। কখনও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভাঙ্গারির বিনিময়ে মালামাল বিক্রয়ের ব্যবসা, আবার কখনও ফেরি করে মালামাল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সপরিবারে গ্রামের একজনের ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। দ্রব্যমূল্যের এই বাজারে সারাদিন যা আয় করেন তা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি ঘর ভাড়া দেওয়া ছিল বেশ কষ্টসাধ্য। সময়মত বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় চলতি মাসে তাদেরকে নামিয়ে দেওয়া হয় ঐ বাড়ি থেকে।

কোথাও কোন আশ্রয় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত কুচুইখালী গ্রামের পাশে ছেউটিয়া নদীর পাড়ের শ্মশানঘাটে হলো মাথা গোজার ঠাঁই। আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে বাঁশ ও পাটকাঠি চেয়ে নিয়ে তার উপর কলাপাতা, তালের পাতা দিয়ে তৈরি করেন ঝুপড়ি ঘর। সেখানেই স্বামী-স্ত্রী বসবাস করছেন। স্থানীয়রা তাদের দুর্দশার কথা চিন্তা করে চাঁদা তুলে কিছু টাকা তুলে একটি চায়ের দোকানের ব্যবস্থা করেন। এখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনমতে দুবেলা মুঠো ভাতের জোগাড় করার যুদ্ধ করছেন এই অসহায় দম্পতি।

সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী নারগিছ খাতুন জানান, তারা ভূমিহীন সেই সাথে স্বামী সিরাজুল ইসলাম শারীরিক প্রতিবন্ধী। তারপরও জীবন জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন স্থান থেকে বোতল কুড়িয়ে ও ভাঙ্গারি ব্যবসা করে কোনমতে দুই মুঠো ভাতের ব্যবস্থা করেন। বসবাসের জন্য গ্রামের একজনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। বাড়ি ভাড়া পরিশোধ না করায় তাদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তাই বসবাসের জন্য সরকারি শ্মশানঘাট বেছে নিয়েছেন তারা।

আশেপাশের লোকজন সিরাজুল দম্পতিকে আপন করে নিয়েছেন। অর্থনৈতিক বিপ্লবের এই যুগে মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে নানাভাবে। এর মধ্যেও সিরাজুল ইসলামের মত অসহায় দম্পতি এখনও রয়েছেন। সরকারি কিংবা ব্যক্তি পর্যায়ের সহযোগিতাই পারে এসব পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে। তাই নদীর পাড়ে শ্মশানঘাটের পাশে এই সরকারি জায়গায় সিরাজুল দম্পতির জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়ার আবেদন স্থানীয়দের।

মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজীব হোসেন জানান, পর্যায়ক্রমে সব ভূমিহীন পরিবারই সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গাসহ পাকাবাড়ি পাবে। ভুক্তভোগী পরিবার আবেদন করে থাকলে চলমান প্রকল্পের মাধ্যমেও সিরাজুল ইসলামকে ঘর দেওয়া হবে।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  ভূমিহীন পরিবার   শ্মশানঘাটে বসবাস   মেহেরপুর  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close