যমুনা নদীর পশ্চিম তীরবর্তী সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানি গত ৩ দিনে অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেল ৩ টায় নির্ধারিত বিপদসীমা অতিক্রম করে ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অঞ্চলে ১৪.৮০ সেন্টিমিটার বিপদসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে করে উপজেলার চরাঞ্চলের ৬টি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ৪ ইউনিয়নের বেশকিছু ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভাঙন দেখা দিয়েছে চরাঞ্চলের খাসরাজবাড়ী ইউনিয়নে, ঝুঁকিতে পড়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদসহ শতাধিক বসতি। বালু বোঝাই জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে পাউবো। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লাখ মানুষ।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক দিন ধরে যমুনা নদীর পশ্চিম তীরবর্তী কাজিপুর পয়েন্টে পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১৪.৮০ সমতল বিপদসীমা অতিক্রম করে ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, আগামী কয়েকদিন পানি বৃদ্ধির পূর্বাভাস রয়েছে।
চরাঞ্চলের তেকানি ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ জানান, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে, এভাবে পানি বাড়তে থাকলে যে কোনো সময় বাড়ি ঘরে প্রবেশ করবে, চরাঞ্চলের প্রধান সড়ক নাটুয়ারপাড়া-রুপসা সড়ক ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
নিশ্চিন্তপুর ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল ইসলাম বলেন, নিচু রাস্তাঘাট ডুবে গেছে।
খাসরাজবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, শানবান্ধা ঘাট এবং রাজবাড়ী গ্ৰাম এলাকায় নদী ভাঙনের কবলে পড়ছে, একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিলীন হয়ে গেছে। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, একাধিক মসজিদ এবং কয়েকশ বসতি ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে, প্রাক প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারলে পাঠদান করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের এসও হাফিজুর রহমান বলেন, খাসরাজবাড়ীতে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে বালু বোঝাই জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে, এখন ভাঙন কমেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, বন্যার্তদের সহায়তায় প্রতিটি ইউনিয়নে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, চরাঞ্চলে এবং তীরবর্তী সকল আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।
সময়ের আলো/জেডআই