ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ পরিবারের
শ্রেণি কক্ষে ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ, তদন্ত কমিটি গঠন
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪, ৯:১৬ পিএম  (ভিজিট : ৫৬৬)
ইনসেটে নিহত শিক্ষার্থী আফিয়া জাহান। ছবি: কোলাজ

ইনসেটে নিহত শিক্ষার্থী আফিয়া জাহান। ছবি: কোলাজ

ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবনের একটি কক্ষ থেকে আফিয়া জাহান নামের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করে এর কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে জানিয়েছে পুলিশ। 

গতকাল সোমবার (১ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের গণেশ দাস স্মৃতি ভবনের চতুর্থ তলার পূর্বদিকের একটি খালি কক্ষে বৈদ্যুতিক পাখার সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয় ছাত্রী আফিয়া আক্তার। তবে ওই ছাত্রীর পরিবার স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করে এর এর বিচার দাবি করেছেন। 

নিহত শিক্ষার্থী স্কুলটির প্রভাতী শাখার নবম শ্রেণির ছাত্রী। ওই ছাত্রীর নাম আফিয়া জাহান (১৫)। তার শ্রেণি রোল ৪৪। সে জেলা শহরের সুগন্ধা পৌর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. এসএম ওবায়দুল্লাহ আমিন ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর স্বাস্থ্য সহকারী কুরছিয়া খাতুনের মেয়ে।

ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মহিতুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠির অন্যতম বিদ্যাপীঠ সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখার নবম শ্রেণির ছাত্রী আফিয়া জাহান। প্রতিদিনের মত গতকাল (সোববার) ভোরে স্কুলে আসে। সকাল সাড়ে ১০টা দিকে টিফিনের সময় শ্রেণিকক্ষের পাশেই স্কুলের একটি চারতলা ভবনের দিকে তাকে যেতে দেখে সহপাঠীরা। পরে তাকে খুঁজতে গিয়ে ওই ভবনের চারতলার একটি কক্ষে ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্কুলের সহপাঠীরা জানায়, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র তনয় নামের একটি ছেলের সাথে আফিয়ার প্রেমের সম্পর্ক চলছিলো। আফিয়ার কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা-পয়সাও নিয়েছে। স্কুল ফাঁকি দিয়ে বরিশালে তারা ঘুরতেও গেছে কয়েকদিন। তনয়ের মোবাইলে স্মৃতিস্বরূপ অনেক দৃশ্য ধারণ করা আছে। কিন্তু কিছুদিন ধরে ছেলেটি তাকে এড়িয়ে যাচ্ছিলো। এতে আফিয়া আত্মহত্যা করেছে। তবে মেয়েটির মা তা মানতে রাজি নন। 

হাসপাতালের মর্গে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের চাকরিরত মা কুরছিয়া খানম। তিনি বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরি করি। দিনের বেলায় বাসা খালিই পড়ে থাকে। আত্মহত্যা বাসায় বসেও করতে পারত। স্কুলে ক্লাসের ফাকে কিভাবে আরেক রুমে গিয়ে গলায় ফাঁস লাগালো। শিক্ষক-কর্মচারী কারোই কি কোন দায়িত্ব নেই। কি কারণে স্কুলে এমন ঘটনা তা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন। এ ঘটনাকে  স্কুল শিক্ষক-ও কর্মচারীদের দায়িত্বে চরম অবহেলার অভিযোগ করে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিচার দাবি করেছেন শোকাহত মা কুরছিয়া বেগম।

ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মহিতুল ইসলাম জানান, মরদেহের ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা নথিভুক্ত করে বিষয়টি কারণ অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। 

এদিকে ঘটনার খবর শুনে স্কুল ও সদর হাসপাতালের মর্গে ছুটে যান জেলা প্রশাসক ফারহা গুল নিঝুম। তিনি বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই। তবে কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিককে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিপোর্ট দেবেন।

প্রসঙ্গত, ঝালকাঠি হরচন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দিবা ও প্রভাতী শাখা মিলিয়ে ১৭০০ ছাত্রী লেখাপড়া করে।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  শ্রেণি কক্ষে ছাত্রীর মরদেহ   তদন্ত কমিটি   ঝালকাঠি   




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close