ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নওগাঁয় পটলের কেজি ১০ টাকা, কৃষক হতাশ
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪, ৫:০১ পিএম  (ভিজিট : ৬৭৬)
নওগাঁয় প্রচুর পরিমাণে পটল উৎপাদন হচ্ছে। এসব পটল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ব্যবসায়ীদের হাত ধরে চলে যাচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়। উৎপাদন বেশি হওয়ায় হাট-বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। তবে দাম না পেয়ে হতাশ কৃষকরা। উৎপাদন খরচ উঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলা এ বছর ১ হাজার ২৫৫ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের পটলের আবাদ হয়েছে। যা থেকে ২৩ হাজার ২২০ টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা।

সবজি ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত উত্তরের জেলা নওগাঁ। জেলার মাঠে মাঠে এখন বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি চাষ হচ্ছে। বিস্তীর্ণ মাঠে এখন দেখা মিলবে পটল, বেগুন, করলা, কাকরুল, ঢেড়স, লাউ ও বিভিন্ন শাক সবজি। তবে অন্যান্য সবজির তুলনায় এখন প্রচুর পটলের আবাদ হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে প্রচণ্ড খরা ও অনাবৃষ্টিতে পটলের উৎপাদন কম হয়েছিল। গত একমাস আগেও ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছিল। বর্তমানে উৎপাদন বেশি হওয়ায় পাইকারিতে ৭-১২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

নওগাঁ সদর উপজেলার কীত্তিপুর মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাট বার। ভোরের আলো ফোটার পর কেউ সাইকেল, ভ্যান, অটোরিকশা আবার কেউ কাঁধে করে পটল বিক্রি জন্য নিয়ে আসেন। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা পটল এ হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। এ দিন হাটে প্রতিকেজি পটল ৭-১২ টাকায় বিক্রি হয়। যা গত হাটেও ছিল ১৫-১৬ টাকা। কৃষকদের অভিযোগ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম কমিয়ে দিয়েছে, আবার ওজনেও বেশি নিচ্ছে।

সদর উপজেলার মাধাইনগর গ্রামের কৃষক জামাল হোসেন বলেন, গত বছর ১২ কাঠা জমিতে পটলের আবাদ করে প্রায় ৬৫ হাজার টাকা বিক্রি করেছিলাম। এবছরও একই পরিমাণ জমিতে পটলের আবাদ করা হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে ভাল দাম পেয়ে লাভবান হওয়া গেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পটলের উৎপাদন ভাল হচ্ছে। বর্তমানে উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।

হরিরামপুর গ্রামের শোমসের আলী বলেন, ১৮ কাঠা জমিতে পটলের আবাদ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে পটলের আবাদে খরচ হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা। যা এক মৌসুমে ৯০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকার বিক্রি হয়ে থাকে। তবে সার-কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় ফসল উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় দাম পাওয়া যাচ্ছে না। ৬৫ কেজি পটল তুলে হাটে বিক্রি করলাম ১০ টাকা কেজি।

মকমলপুর গ্রামের কৃষক লিটন হোসেন বলেন, ১৮ কাঠা জমি থেকে সপ্তাহে আড়াই মণ পটল উঠানো হয়। ১০ কাটা কেজি হিসেবে দাম পাওয়া যায় ১ হাজার টাকা। সেখানে কীটনাশক দিতে খরচ হয় ৪০০-৫০০ টাকা। সবকিছুর দাম বেশি। কিন্তু ফসলের দাম পাওয়া যায় না।

পাইকারি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, সাপ্তাহিক শুক্র ও মঙ্গলবার হাটবার। তবে মঙ্গলবার হাটটি বড় হয়। হাটে প্রচুর পটলের সরবরাহ হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব পটল ৫-৬টি ট্রাকে করে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি ট্রাকে প্রায় দেড় লাখ টাকার পটল থাকে। প্রতি হাটে প্রায় ৮ লক্ষাধিক টাকার বেচাকেনা হয়ে থাকে। তবে সবজিতে পানি থাকায় ৪২ কেজিতে মন ক্রয় করা হয়।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. খলিলুর রহমান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন ভাল হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে বাজার কিছুটা ভাল থাকলেও বর্তমানে দাম কমেছে। তবে কিছুদিনের মধ্যে অন্যান্য সবজির পরিমাণ কমে গেলে আবারও বাড়বে পটলের দাম। এতে কৃষকরা লাভবান হবে। তবে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  সবজির ভাণ্ডার   পটলের দাম   নওগাঁ-রাজশাহী  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close