ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এক সময়ের দেশসেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
ইচ্ছা থাকলেও জনবল সংকটে মিলছে না স্বাস্থ্যসেবা
প্রকাশ: সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪, ৪:৫৯ পিএম  (ভিজিট : ৪৭০)
লাখে একজনও ডাক্তার নেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সারাদেশে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করা এক সময়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তো দূরের কথা ৩ জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চলছে টানা ২৪ ঘণ্টা দিনরাত তিন বিভাগের চিকিৎসা সেবা। 

সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও সহকারী সার্জন ডা. রবিউল ইসলাম জানান, ইচ্ছা থাকলেও ডাক্তার ও জনবল না থাকায় রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না।

সরিষাবাড়ী উপজেলা থেকে ৩০ কিমি দূরে জামালপুর সদর জেনারেল হাসপাতাল হওয়ায় রোগীদের একমাত্র ভরসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। আর সেই ভরসার স্থান পরিণত হয়েছে নিরাশায়। সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও জনবল সংকট হওয়া ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। এক সময় চিকিৎসা সেবার মানের দিক দিয়ে দেশের প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সরিষাবাড়ী উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর, টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ীসহ সদরের প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। বর্তমানে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও বেহাল অবস্থা যেন দেখার কেউ নেই। একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রশাসনিক পদ, জুনিয়র কনসালটেন্টসহ সব মিলিয়ে ২৯ জন ডাক্তার থাকার কথা। বর্তমানে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭ জন কর্মকর্তা ও ডাক্তারের মধ্যে ২ জন প্রশাসনিক কাজে, ২ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট আর বাকি ৩ জন মেডিকেল অফিসার রয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট থাকার কথা থাকলেও সেখানে মাত্র ২ জন কনসালটেন্ট রয়েছে। ৩ জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ, আন্তঃবিভাগ এবং বহির্বিভাগের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে ৩ জন ডাক্তারের একেক দিন  একজন ডাক্তার ২৪ ঘণ্টাই দায়িত্ব পালন করেন। এতে করে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে অনেকেই চলে যাচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশে পাশে ক্লিনিকগুলোতে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিচ্ছন্নতা কর্মী বলেন, আমার বয়স ৫০ এর উপরে, আমার একার পক্ষে পুরো হাসপাতাল ঝাড়ু-মুছা করতে কষ্ট হয়। নিজেই নানান রোগে ভোগতেছি। কোন কুল কিনারা না পেয়ে আমার স্বামী, ছেলে ও মেয়েদের দিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত নার্সরা জানান, একজন মেডিকেল অফিসার ২৪ ঘণ্টায় তিনটি বিভাগে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালনকালে জরুরি মুহূর্তে ডেকে আনতে হয়। রোগীরা বিষয়টি না বুঝেই আমাদের সাথে বিভিন্ন সময়ে রাগান্বিত হয়ে পড়ে। ডাক্তার না থাকায় এতে করে সেবা দিতে গিয়ে নার্সদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা কমিটি সদস্য আবুল হোসেন জানান, একসময় সিজার ও অপারেশন হলেও তা বন্ধ থাকায় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ রোগীদের। এতে করে প্রাইভেট ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি প্রাণঘাতীর ঘটনাও ঘটছে।

সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আর.এম.ও ডা. রবিউল ইসলাম জানান, কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে আমাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। ইচ্ছা ও আগ্রহ থাকলেও চিকিৎসক ও জনবল না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছি না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধও করেন তিনি।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স   সরিষাবাড়ী-জামালপুর  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close