ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

সংসদে বিরোধী দল
আইন বড়লোকের জন্য, আইনকে শাসন করে অর্থ বিত্তশালীরা
বিচার প্রার্থীদের কষ্ট লাঘবের প্রতিশ্রুতি আইনমন্ত্রীর
প্রকাশ: রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪, ৬:৫৭ পিএম  (ভিজিট : ৪০৬)
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বিচারের জন্য ঘুরতে ঘুরতে মানুষের জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা। জবাবে বিচার প্রার্থীদের কষ্ট লাঘবের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। 

রোববার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে আইন মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আইন বড়লোকের জন্য। আইনকে শাসন করে অর্থ বিত্তশালীরা, আইন প্রয়োগ হয় সাধারণ গরীব মানুষের ওপর। বিচারের জন্য এই দরজা, ওই দরজায় ঘুরতে ঘুরতে মানুষের জীবন শেষ। বিচারকের অভাব রয়েছে। তাই সরকারের ইচ্ছা সত্ত্বেও বিচার কাজ বিলম্বিত হয়। তিনি প্রতিটি বিভাগে হাইকোর্টের বেঞ্চ করার দাবি জানান।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পংকজ নাথ বলেন, বঙ্কিমচন্দ্র তার উক্তিতে বলে গেছেন- ‘আইন! সে তো তামাশা মাত্র। বড়লোকেরাই কেবল পয়সা খরচ করিয়া সেই তামাশা দেখিতে পারে।’ আমি তা বলতে চাই না। গত ১৫ বছরের যুদ্ধপরাধীদের বিচার হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর বিচার হয়েছে। কিন্তু প্রতিকারহীন অপরাধে বিচারের বাণী যেন নীরবে নিভৃতে না কাঁধে। 

তিনি বলেন, আমার এলাকার গরীব আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক সরদার হত্যা মামলার চার্জশীট দিতে ৮ বছর লাগলো। চার্জশীট গ্রহণ করা হলেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। 

তিনি আরও বলেন, বিগত দুইটি নির্বাচনে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষায় কমিশন গঠনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলো, তারপরও মাননীয় মন্ত্রী আপনি কেন পারছেন না? হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টানসহ অন্যান্যদের সুরক্ষায় আমরা কেন একটি বিশেষ আইন করতে পারছি না? তিনি হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানদের অধিকার সুরক্ষায় কমিশন গঠনের দাবি জানান। 

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, সুন্দর সুন্দর ভবন হয়েছে। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ আদালতে ঘুরছেন। মামলা জট বাড়ছে। বিচার প্রার্থীদের কষ্ট লাঘবে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

জবাবে আইন আনিসুল হক বলেন, সংসদ সদস্য যারা ছাঁটাই প্রস্তাব করেছেন, তারা অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত কথা বলেছেন, মামলা জটের কথা বলেছেন, মামলা জটের কথা অস্বীকার করার কিছু নেই। আজকের হিসাব হচ্ছে ৪১ লক্ষ ৯ হাজার ৭৫৫টি মামলা কোর্টে আছে। 

তিনি আরও বলেন, যতগুলো মামলা আছে তার নিষ্পত্তি করার জন্য বিচার বিভাগে যে বিচারক আছে তা অপ্রতুল। ২০০৯ সালে জুডিশিয়ারির সক্ষমতা ছিল ৮০০ বিচারক। আজকে সেই জুডিশিয়ারির সক্ষমতা হচ্ছে প্রায় ২ হাজার বিচারক। আমরা আরও আদালত বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব দিয়ে রেখেছি। ১৫৮টি আদালত খুব শীঘ্রই বেড়ে যাবে। 

মামলা জট নিরসনে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প নিয়ে ৬৪ জেলায় এই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেসি এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিট্রেসি কোর্ট স্থাপনের পরিকল্পনা নেন। তার মধ্যে ৪১টা হয়ে গেছে, ২৩টা হচ্ছে এবং খুব শীঘ্রই হয়ে যাবে।

ছাঁটাই প্রস্তাব গ্রহণ করতে না পারার যুক্তি তুলে ধরে আনিসুল হক বলেন, যে ২ হাজার ২২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে, ওনারা বলেছেন ১টায় নিয়ে আসতে, ১ টাকায় আনলে আমি কিন্তু এগুলো করতে পারবো না। আমার ২ হাজার ২২ কোটি টাকাই লাগবে। আমি এক টাকায় কিছু করতে পারবো না। কিন্তু আপনাদের এই কথা বলে দিতে পারি এই ২ হাজার ২২ কোটি টাকা দিয়ে যতটুকু সম্ভব এই দুঃখী মামলা যারা করেন তাদের কষ্ট নিবারণ করার চেষ্টা আমি করবো।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  আইনমন্ত্রী-আনিসুল হক   সংসদ অধিবেশন  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close