প্রকাশ: রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪, ৪:০৮ পিএম (ভিজিট : ৩৯০)
জন্মের পর থেকেই দুটো পা, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অচল। হাতগুলো কোনও মতে নড়াচড়া করতে পারে জহুরা আক্তার। এই অবস্থায় কটিয়াদী উপজেলার ডা. আবদুল মান্নান কলেজ থেকে সে এবার উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা দিচ্ছে। তার সিট পড়েছে বাড়ি থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে কটিয়াদী সরকারি কলেজ কেন্দ্রে। রোববার (৩০ জুন) এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে বয়োবৃদ্ধ চাচার সহযোগিতায় হুইল চেয়ারে চেপে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছায় সে।
জানা যায়, জহুরার বাড়ি কটিয়াদী উপজেলার পার্শ্ববর্তী বাজিতপুর উপজেলার বিলপাড়া গজারিয়া গ্রামে। তার বাবা মহরম আলী মারা গেছেন বছর পাঁচেক আগে। তার পাঁচ বোন ও এক ভাই রয়েছে। এরমধ্যে চার বোন ও এক ভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী। নুন আনতে পান্তা ফুরানো পরিবার তাদের। জহুরার বাবার মৃত্যুর পর নিঃসন্তান চাচা ধরেন তাদের পরিবারের হাল। তিনি দরিদ্র কৃষক। প্রতিবন্ধী জহুরা চাচার সহযোগিতায় হুইল চেয়ারে করে স্কুলের গণ্ডি টপকিয়ে এবার বসেছে উচ্চ মাধ্যমিকে।
জহুরার চাচা মো. ইসরাইল জানান, জহুরা উঠে দাঁড়িয়ে চলাফেরা করতে পারে না। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি পরিবারের যথেষ্ট আর্থিক প্রতিকূলতাও রয়েছে। তবু মনের জোরে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই মনের জোরেই সব বাধা বিপত্তিকে অতিক্রম করে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে জহুরা।
জহুরা বলেন, যত বড় হয়েছি বুঝেছি লেখাপড়া করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আমাকে লড়তেই হবে জীবনের সঙ্গে। তাই হাজার কষ্টের মধ্যেও লেখাপড়া করছি। স্বপ্ন শিক্ষক হওয়ার।
কটিয়াদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্র কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান জানান, ওই ছাত্রীর পরীক্ষা দিতে গিয়ে সমস্যা না হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বোর্ডের নিয়ম মেনে ৩০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে। প্রথম দিন পরীক্ষা ভালই হয়েছে বলে জানিয়েছেন জহুরা।