পশ্চিমা চাপের মধ্যে ইরানের অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট। এখন চলছে ভোট গণনা। সম্প্রতি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর কারণে দেশটিতে আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই নির্বাচনে এগিয়ে রয়েছেন মধ্যপন্থি প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়া। আর তার নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বি সাইদ জালিলি। নির্বাচনে চার জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ভোট গণনায় লড়াইটা দুই প্রার্থীর মধ্যে।
শনিবার (২৯ জুন) দুপুর পর্যন্ত এক কোটি ৪০ লাখ ভোট গণনা হয়েছে। এর মধ্যে মধ্যপন্থি প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান পেয়েছেন ৫৯ লাখ ভোট। আর তার নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বি সাইদ জালিলি পেয়েছেন ৫৫ লাখ ভোট। ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মোহসেন ইসলামি এ তথ্য প্রকাশ করেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
গত ১৯ মে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে মারা যাওয়ায় ওই শূন্য পদে আগাম নির্বাচন হয়। সংবিধান অনুযায়ী, ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন দিতে হয়। নির্বাচনে ছয়জন প্রার্থী হওয়ার অনুমতি পেয়েছিলেন। পরে দুজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। নির্বাচনী দৌড়ে থাকা চার প্রার্থী হলেন- রক্ষণশীল মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ, মধ্যপন্থি মাসুদ পেজেশকিয়ান, কট্টরপন্থি সাইদ জালিলি এবং রক্ষণশীল মোস্তফা পুরমোহাম্মদি।
প্রেসিডেন্ট হতে ভোটের লড়াইয়ে থাকা চার প্রার্থীর মধ্যে তিনজনই কট্টরপন্থি হিসেবে পরিচিত, আর একজন কম পিরিচিত মধ্যপন্থি, যিনি সাম্প্রতিক সময়ে কোণঠাসা হয়ে পড়া সংস্কারপন্থিদের সমর্থন পাচ্ছেন।
মধ্যপন্থি প্রার্থী পেজেশকিয়ানের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, ছোট ছোট শহর ও গ্রামগুলোতে এ পর্যন্ত ভোটগণনার যে চিত্র, তাতে প্রতিদ্বন্দ্বির চেয়ে এগিয়ে আছেন পেজেশকিয়ান।
প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত মুখ হচ্ছেন পার্লামেন্টের স্পিকার ও ইরানের শক্তিশালী রেভুল্যুশনারি গার্ডের সাবেক কমান্ডার রক্ষণশীল মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ এবং খামেনির সঙ্গে চার বছর কাজ করে আসা সাইদ জালিলি।
ইরানের কট্টর ধর্মীয় নীতির সমালোচকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি নির্বাচনে ভোটারদের কম উপস্থিতিই প্রমাণ করে, দেশটির শাসনব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গেছে।
২০২১ সালের ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৪৮ শতাংশ এবং মার্চে পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৪১ শতাংশ ভোট পড়েছিল।
ইরানি বার্তা সংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, শুক্রবারের নির্বাচনে পড়া ভোট গণনায় এ পর্যন্ত যে চিত্র পাওয়া গেছে, তাতে সম্ভবত দ্বিতীয় দফা ভোটের পথে হাঁটতে হবে, যেখানে লড়াইটা হবে জালিলি আর পেজেশকিয়ানের মধ্যে।
নিয়ামানুযায়ী কোনো প্রার্থী যদি প্রথম দফার নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পান তাহলে ফলাফল ঘোষণার পর প্রথম শুক্রবার এগিয়ে থাকা দুই প্রার্থীর মধ্যে থেকে একজনকে বেছে অনুষ্ঠিত হবে চূড়ান্ত ভোটাভুটি।
রয়টার্স বলছে, যদিও এই নির্বাচন দেশটির নীতিতে কোনো বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে না বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ১৯৮৯ সাল থেকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার পদে থাকা ৮৫ বছর বয়সী আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উত্তরাধিকার নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে ভোটের ফলাফল।
সময়ের আলো/আরআই