ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

লক্ষ্য দারিদ্র্য বিমোচন
রেশম চাষে স্বাবলম্বী হতদরিদ্র নারী-পুরুষ
প্রকাশ: শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪, ২:০৬ এএম  (ভিজিট : ৪৪২)
নীলফামারীর সৈয়দপুরে হতদরিদ্র নারী-পুরুষদের মাঝে রেশম গুটি চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে রেশম সম্প্রসারণ প্রকল্প পরিচালনা করছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড।

এ বিষয়ে রেশম সম্প্রসারণ প্রকল্পের কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করছি, এই প্রকল্পের পরিধি ক্রমেই বাড়বে। এই প্রকল্প এলাকায় দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সৈয়দপুরে অবস্থিত রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্রের প্রধান রেজাউল করিম আরও বলেন, নীলফামারী সদর উপজেলার দারোয়ানীর একটি গ্রামে প্রথমে রেশম চাষ শুরু হয়। পরে সৈয়দপুর উপজেলাসহ নীলফামারী জেলার ছয়টি উপজেলা এবং রংপুর জেলার তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে। কোনো পুঁজিলগ্নি ছাড়াই কর্মমুখী এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে কয়েক হাজার হতদরিদ্র নারী-পুরুষের। প্রকল্প এলাকায় কৃষি শ্রমিক ও দিনমজুরের সংখ্যা বেশি। প্রান্তিক জনপদের এসব মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকলেও অনেক সময় কর্মহীন থাকতে হয়। তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেশম বোর্ড ১৯৮৯ সালে সৈয়দপুরে একটি সম্প্রসারণ কেন্দ্র স্থাপন করে। প্রথমে মাত্র তিনজন চাষি নিয়ে শুরু হয় রেশম গুটি চাষ। পোকা দিয়ে রেশম গুটি চাষ করায় প্রথম দিকে এটি মেনে নিতে পারেননি এলাকার মানুষ। পরে আমাদের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে উদ্বুদ্ধ করায় তারা রেশম চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বর্তমানে কয়েক হাজার হতদরিদ্র নারী-পুরুষ গুটি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। 

রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্রের প্রধান রেজাউল করিম জানান, তিনটি ধাপে রেশম চাষ করা হয়। প্রথমে তুঁত গাছ লাগানো হয়। পরের ধাপগুলোতে পলু পালন ও গুটি তৈরি করা হয়। এই তিনটি প্রক্রিয়ায় সব ধরনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছে রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্র। শ্রম ও সামান্য জমি ছাড়া প্রায় সব ধরনের সহযোগিতাই দেওয়া হয় রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। শুরুর দিকে ৬০০ কেজি গুটি উৎপাদন হতো। সেই জায়গায় এখন ২০ থেকে ২৫ হাজার কেজি গুটির উৎপাদন হচ্ছে। এ ছাড়া পোকার খাবারের জন্য মোট ১২০ বিঘা জমিতে ২ লাখ ৬০ হাজার তুঁত গাছ লাগানো হয়েছে।

সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ বলেন, রেশম চাষ লাভজনক। সৈয়দপুরের খাতামধুপুর ইউনিয়নের ময়দান ডাঙ্গা এলাকায় এর চাষ শুরু করা হয়েছে। আমরা স্থানীয় রেশমচাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগিতা করছি।

খাতামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা পাইলট বাবু বলেন, পরিত্যক্ত জমি, নদীর পাড়, পুকুরের পাড় ও রাস্তার ধারে রেশম চাষ করা যায়। এটি অত্যন্ত লাভজনক চাষ। 

খাতামধুপুর ইউনিয়নের রেশমচাষি জসিম উদ্দিন জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে রেশম চাষ করেছেন। এখান থেকে তিনি আয় করবেন ৮০ হাজার টাকা যা অন্য কোনো ফসল চাষ করে পাওয়া যেত না। একই কথা বলেন নীলফামারির কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাষি আনিছুর রহমান। তিনিও এক বিঘা জমিতে রেশম চাষ করেছেন। তারাগঞ্জ উপজেলার চাষি কৃষ্ণা রানী ও সুবল দাস জানান, প্রথমে রেশম চাষে তারা আগ্রহী ছিলেন না। পরে প্রশিক্ষণে এসে তাদের মানসিকতার পরিবর্তন হয়।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close