বগুড়া জেলা কারাগারের ছাদ ফুটো করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার কয়েদি পালানোর পর আবারও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা বর্তমানে ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে রয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে পালানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই শহরের প্রধান মাছের আড়ত চাষিবাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার পরপরই বগুড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার জেল কারাগার পরিদর্শন করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার কয়েদি হলেন- কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা এলাকার নজরুল ইসলাম ওরফে মজনু (কয়েদি নম্বর ৯৯৮), নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার ফজরকান্দি এলাকার আমির হোসেন (কয়েদি নম্বর ৫১০৫), বগুড়ার কাহালু পৌরসভার মেয়র আবদুল মান্নানের ছেলে মো. জাকারিয়া (কয়েদি নম্বর ৩৬৮৫) এবং বগুড়ার কুটুরবাড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার ফরিদ শেখ (কয়েদি নম্বর ৪২৫২)।
এদের মধ্যে জাকারিয়া বগুড়ার কাহালু উপজেলার ইটভাটায় আগুনে পুড়িয়ে নাঈম নামে শিশু হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি।
এদিকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার কয়েদি পালানোর ঘটনায় বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী সকালে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন। বলেন, মঙ্গলবার রাত ৩টা ৫৬ মিনিটে কারা তত্ত্বাবধায়কের মাধ্যমে জানতে পারি, কারাগারের কনডেম সেলের ছাদ ফুটো করে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি পালিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে সদর থানা, সদর ফাঁড়ি এবং ডিবি পুলিশকে মাঠে নামানো হয়। অল্প কিছু সময়ের মধ্যে চার কয়েদিকে শহরের চাষিবাজার মাছের আড়ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাদেরকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। কারাগার থেকে সরবরাহ করা ছবি দেখে কয়েদিদের শনাক্ত করা হয়।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জেল পালানো চার কয়েদি জানিয়েছেন, কনডেম সেলে বসেই তারা পালানোর পরিকল্পনা করেন। রাত তিনটার পর তারা কনডেম সেলের ছাদ ফুটো করে বাইরে বের হন। এরপর বিছানার চাদর গিঁট দিয়ে দড়ি হিসেবে ব্যবহার করে কারা ভবনের প্রাচীর টপকান। এরপর কারাগারের প্রধান ফটকের পাশ দিয়ে করতোয়া নদীর সেতুর নিচ দিয়ে নেমে তারা পালিয়ে যান।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, দিবাগত রাত ৩টা ৫৫ মিনিটে খবর পাই বগুড়া কারাগার থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি পালিয়েছে। পরে সাড়ে চারটার দিকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। এছাড়া একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিকে, কয়েদি পালানোর ঘটনায় ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান হলেন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। কমিটিতে জেলা পুলিশ, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও জেলা কারা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।