ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

রাস্তা না থাকায় ১০ হাজার মানুষের ভরসা ফসলি জমির আইল
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪, ৫:৪১ পিএম  (ভিজিট : ৪৬৬)
ফসলি জমির আইলের সরু রাস্তা দিয়ে এভাবে কষ্ট করে প্রতিদিনি চলাচল করে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। ছবি: সময়ের আলো

ফসলি জমির আইলের সরু রাস্তা দিয়ে এভাবে কষ্ট করে প্রতিদিনি চলাচল করে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। ছবি: সময়ের আলো

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামে রাস্তা না থাকায় বিপাকে গ্রামবাসী। বর্ষাকালে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। গ্রামবাসী, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারসহ দৈনিক প্রায় ১০ হাজার মানুষ চলাচল করে এই রাস্তা দিয়ে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার রতনপুর, চর বামনেরচর পূর্বপাড়া ও খাটিয়ামারী এই তিন গ্রামবাসীসহ সাধারণ মানুষের চলাচলের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জানা গেছে, মাত্র দেড় থেকে দুই কিলোমিটার সড়ক না থাকায় ফসলি জমির আইল সরু রাস্তা দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী। ফসল উৎপাদনে ধান রোপণের সময় কাদা মাখা জমির সুরু রাস্তা দিয়ে চরম দুর্ভোগে উপায় না পেয়ে উপজেলা শহরের যাতায়াত করতে হয়। অপর দিকে বর্ষাকালে দুর্ভোগের আর শেষ থাকে না, কৃষি নির্ভর এই গ্রামের মানুষের উৎপাদিত কৃষিপণ্য উপজেলা সদর ও বিভিন্ন হাট বাজারে পৌঁছাতে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে এবং রোগীদের হাসপাতালে দ্রুত পৌঁছাতে, বাড়িতে আগুন লাগলে দ্রুত ফায়ার সার্ভিস ঘটনা স্থালে পৌঁছাতে পারে না এমন দুর্ভোগ নিত্য দিনের সঙ্গী।

গুছ গ্রাম তুরা রোড থেকে সোজাপূর্ব দিকে রোডের রতনপুর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলীর বাড়ীর পাশদিয়ে ঈদগাঁহ মাঠ হয়ে রতনপুর কবরস্থান বাইতুল হামদ নূরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার পরে পাকা রাস্তা পর্যন্ত প্রায় ১.৫ কিলোমিটার রাস্তার চরম দুর্ভোগ। এই রাস্তা দিয়ে ভ্যান গাড়ী অটো চলাচলের জন্য প্রশস্ত ১০ ফুট চওড়া ও ৫ ফুট উঁচু করে রাস্তাটি নির্মাণ করা বিশেষ প্রয়োজন বলে দাবি করেন এলাকাবাসী। বর্তমানে গ্রামবাসী পায়ে হেঁটে কোন রকম সরু রাস্তা দিয়ে ফসলি জমির আইল ঘেঁষে কষ্ট করে যাতায়াত করছে। এছাড়া অত্র এলাকার অনেক শিক্ষার্থীকে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে হয় পায়ে হেঁটে। এদিকে মুমূর্ষু রোগীদের জন্য এই রাস্তা যেন মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এসব দুর্ভোগ প্রতিনিয়ত পোহাতে হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন রৌমারী সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম।
রৌমারীর রতনপুরের প্রায় ১০ হাজার মানুষকে বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে পার হতে হয়। ছবি: সময়ের আলো

রৌমারীর রতনপুরের প্রায় ১০ হাজার মানুষকে বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে পার হতে হয়। ছবি: সময়ের আলো

 

স্থানীয় এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার রাস্তাটি চলাচলের সু-ব্যবস্থা করার জন্য কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. বিপ্লব হাসান পলাশ এমপিসহ বিভিন্ন দপ্তরে দুর্ভোগ লাঘবে রাস্তাটি নির্মাণ করার জন্য জোর দাবি জানান।

স্থানীয় বাসিন্দা ভুক্তভোগী মোহাম্মদ তইনুদ্দিন দেওয়ানী জানান, রাস্তা না থাকায় অনেক কষ্ট করে বাজারে যেতে হয়। ফসলি জমির আইল দিয়ে সারা বছর কষ্ট করে এভাবে চলাচল করতে হয়। এতে সাইকেল, ভ্যান, রিকশা, এম্বুলেন্সসহ কোন প্রকার যানবাহন চলাচলের সুযোগ নেই।

কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা ফসল উৎপাদন করি। দেড় কিলোমিটার রাস্তা না থাকায় ভ্যান, রিকশা ও সাইকেল চলে না। এতে ফসল হাটে পৌঁছাতে অনেক কষ্ট হয়। বর্ষা মৌসুমে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই রাস্তাটি নির্মাণের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মেহেদী হাসান মাসুদ বলেন, রাস্তা না থাকায় দুর্ভোগের বিষয়টি ইতিমধ্যেই সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিদের অবগত করাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করি জনভোগান্তি রোধে সকলের প্রচেষ্টায় রাস্তাটির নির্মাণে আন্তরিক হবেন।  

এ ব্যাপারে রৌমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, ওই এলাকায় একটা রাস্তা না থাকায় সাধারণ মানুষ খুব কষ্টে চলাচল করে। আমি বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করছি যাতে ওই খানে একটা রাস্তা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান জানান, জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  বর্ষাকালে গ্রামবাসীর দুর্ভোগ   রৌমারী উপজেলা-কুড়িগ্রাম   




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close