ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

রঙিন মাছে স্বপ্ন রাঙাচ্ছেন তরুণরা
প্রকাশ: সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪, ২:২১ এএম  (ভিজিট : ৩৩২)
নওগাঁয় দিন দিন বাড়ছে পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে অর্নামেন্টাল ফিশ বা বাহারি মাছ চাষ। শিক্ষিত বেকার তরুণরা বাহারি এ মাছ চাষের দিকে এগিয়ে আসায় কমছে বেকারত্ব। অনেকে স্বপ্ন দেখছেন নিজের ভবিষ্যৎ রাঙিয়ে তোলার। তবে মাছ পরিবহনে বিশেষায়িত কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে খামারিদের। আগামীর সম্ভাবনাময় দামি এই মাছ চাষের দিকে সরকারের সুদৃষ্টি চেয়েছেন তারা।

সূত্রে জানা গেছে বাসা কিংবা বড় বড় হোটেল, অফিসের অ্যাকুরিয়ামে শোভা পায় হরেক রকমের বাহারি মাছ। বর্তমানে শৌখিন মানুষের অন্যতম শখের বিষয় এই অর্নামেন্টাল ফিশ। নওগাঁয় দিন দিন এই মাছের চাহিদা বাড়ায় বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে চাষ। জেলা সদর, আত্রাই, বদলগাছী, পত্নীতলা, ধামইরহাটসহ বিভিন্ন উপজেলায় সাধারণ মাছের সঙ্গে পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বাহারি মাছ। স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী পিকেএসএফের অর্থায়নে সমন্বিত কৃষি ইউনিটের মৎস্য খাতের আওতায় ২২-২৩ অর্থবছরে ‘অর্নামেন্টাল বা বাহারি মাছ চাষ’ প্রদর্শনী ও চাষ শুরু করেছে।

জেলার বদলগাছী উপজেলার কামারবাড়ী গ্রামের বাহারি মাছচাষি আবু রায়হান সিদ্দিক জানান, মৌসুমীর সার্বিক সহযোগিতায় ৫টি পুকুরে বাহারি মাছ চাষ করেছেন। তিনি সিল্কি কই কার্প ও কমেট মাছের রেণু সফলভাবে উৎপাদন করেছেন। বর্তমানে তার পুকুরে বাহারি কই কার্প, কমেট, বাটার ফ্লাই, অরেন্টা ফিশ, মলি ও গাপ্পি মাছ চাষ হচ্ছে। প্রতি পিস মাছের বাজারে দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এতে তিনি যেমন লাভবান হচ্ছেন, তাকে দেখে আরও অনেক উদ্যোক্তা বাহারি মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। বিশেষ করে শিক্ষিত বেকার যুবকরা এই বাহারি মাছ করে ভাগ্যবদল করতে পারেন বলে জানান রায়হান।

একই উপজেলার আরেক মাছচাষি দেবনাথ চৌধুরী জানান, রায়হানের কাছ থেকে রঙিন মাছ নিয়ে চাষ করেছেন। মাছগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি অনেক বড় হয়। বাজারে গিয়ে এই মাছ বিক্রির কোনো ঝামেলা হয় না। রঙিন মাছ দেখে ক্রেতারা সহজেই কিনতে আগ্রহী হন। বর্তমানে অনেকেই এই রঙিন মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

নওগাঁ শহরের বাসিন্দা আবদুর রউফ পাভেল বলেন, বাসার অ্যাকুরিয়ামের জন্য রঙিন মাছ কিনতে আর ঢাকা কিংবা অন্য কোথাও যেতে হয় না। খুব সহজেই নওগাঁ থেকে মাছ সংগ্রহ করা যাচ্ছে। নওগাঁয় পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে রঙিন মাছ চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় পর্যায়সহ সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারলে রঙিন মাছ চাষ বেকার যুবকদের ভাগ্য বদলে দিতে পারে।  

মৌসুমীর মৎস্য কর্মকর্তা শাহারিয়া হোসেন বলেন, মৌসুমী সবসময় নওগাঁর মানুষদের অধিক লাভজনক নতুন নতুন ফসল চাষ করা থেকে শুরু করে কৃষি বিভাগের সব খাতেই সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক পর্যায়ে মাছচাষি রায়হানকে মৌসুমীর পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে রঙিন মাছ চাষ শুরু করা হয়। ফলাফল ভালো হলে নওগাঁর আগ্রহী উদ্যোক্তাদের বড় পরিসরে এই রঙিন মাছ চাষে সার্বিক সহযোগিতার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. বায়েজিদ আলম বলেন, স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থার পাশাপাশি সরকারিভাবেও জেলার কয়েকটি উপজেলায় আগ্রহী মাছচাষিদের মাধ্যমে রঙিন মাছ চাষ শুরু করা হয়েছে। তবে এই মাছ দেশের বিভিন্ন স্থানে খুব সহজেই নিরাপদে চালান করার মতো বিশেষায়িত পরিবহন ব্যবস্থা এখনও গড়ে না ওঠায় মাছচাষের বিস্তার হচ্ছে না। রঙিন মাছ সাধারণ মাছের মতো নয়। তাই এই মাছের ক্রেতা সারা দেশেই রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিশেষায়িত পরিবহন ব্যবস্থা সৃষ্টি করা গেলে আরও দ্রুতই নওগাঁসহ দেশব্যাপী সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হতো বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। 

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close