ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

বিপৎসীমার ৫৫ সে.মি. ওপর দিয়ে বইছে তিস্তা
গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, ডুবতে শুরু করেছে নিম্মাঞ্চল
প্রকাশ: শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪, ১১:৩৭ পিএম  (ভিজিট : ৪৩০)
উজানের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন অবিরাম বর্ষণের সম্ভাবনা থাকায় গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর মধ্যে জেলার ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি প্রবাহ বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও পানি বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার অন্তত ছয়টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করছে।

শুক্রবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, গাইবান্ধার সব নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে জেলার চারটি নদ-নদী ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, তিস্তা ও করতোয়ার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি ৩০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্য তিনটি নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

গাইবান্ধা পাউবোর নিয়ন্ত্রণকক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে, ঘাঘট নদের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বেড়ে ১২৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে এবং করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চকরহিমাপুর পয়েন্টে ৬১ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৭৬ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই পরিমাণ পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি, ফুলছড়ি ও ফজলুপুর এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, কাপাসিয়া, হরিপুর ও চন্ডিপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হতে শুরু করছে। এছাড়া নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সদরের মোল্লারচর, সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাশিয়া, চন্ডিপুর, তারাপুর ইউনিয়ন ও ফুলছড়ির ফজলুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, উজানের ঢলে ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে নদী–তীরবর্তী চরাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। আমরা সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। তবে এই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ আল হাসান বলেন, জেলা ও উপজেলায় দুর্যোগকালীন সভা করে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাথমিক সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সদরে নদীবেষ্টিত যে চারটি ইউনিয়ন রয়েছে, সেসব ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এসব এলাকায় শুকনা খাবার বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কাজী নাহিদ রসুল জানান, সম্ভাব্য দুর্যোগ প্রবন ৪টি উপজেলার প্রতিটি উপজেলায় ৫০ ব্যাগ শুকনা খাবার, নগদ অর্থ ১৫ লাখ টাকা, শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ২ লাখ টাকা এবং গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ৫ লাখ টাকা করে উপ-বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য চারটি রেসকিউ বোট ও ৩৮৪ মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে এবং স্থায়ী-অস্থায়ী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ৫০০ মেট্রিক টন চাল, ১০লাখ টাকা(নগদ), পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, এক হাজার বান্ডিল ঢেউটিন, গৃহনির্মাণ মঞ্জুরী বাবদ ৩০ লাখ টাকা, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ১০ লাখ টাকার বরাদ্দের চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে।

সময়ের আলো/জিকে

 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close