ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নবাবগঞ্জে স্ত্রীর পরকীয়ার বলি স্বামী ও ভাশুর
প্রকাশ: বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪, ৪:৪৩ পিএম  (ভিজিট : ২৯৪)
স্ত্রীর পরকীয়ার বাঁধা দেয়ায় চাচাত ভাই ভজন রায়কে (৫০) হত্যার দুদিন পর আত্মহত্যা করলেন মনোরঞ্জন রায় (৩৬)। ঘটনাটি ঢাকার নবাবগঞ্জের যন্ত্রাইল ইউনিয়নের চন্দ্রখোলা নয়াহাটি এলাকার। একই পরিবারের দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে এলাকায় চলছে শোকের মাতম। 

অন্যদিকে এলাকাবাসী অভিযোগ করছেন, স্ত্রীর পরকীয়ার বলি হলেন স্বামী ও ভাশুর। ঘটনাটি সারা উপজেলায় চাঞ্চল্যতার সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (১৯ জুন) দুপুরে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দুরে শোল্লা ইউনিয়নের আবদানী এলাকার একটি পাট ক্ষেত থেকে মনোরঞ্জন রায়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত মনোরঞ্জন রায় চন্দ্রখোলা নয়াহাটি এলাকার মৃত দুর্লভ রায়ের ছেলে। তার চাচাত ভাই ভজন রায় (৫০) ঐ গ্রামের মৃত কৃষ্ণ রায়ের ছেলে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মনোরঞ্জন রায়ের স্ত্রী নিপা রায় (২৫) কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি বাবার বাড়িতেই বেশি সময় থাকেন। ওই এলাকায় বসবাসের সুবাদে একাধিক পুরুষের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে যান বলে অভিযোগ। পরকীয়া সম্পর্কের ঘটনা নিয়ে চন্দ্রখোলা এলাকায় একাধিক গ্রাম্য সালিসিও হয়েছে। এ বিষয়ে ভাশুর ভজন রায় বাধা দিলে তাকে মারতে স্বামী মনোরঞ্জনকে পরামর্শ দেন নিপা। স্ত্রীর কথায় মনোরঞ্জন ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার (১৭ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চাচাতো ভাই ভজন রায়কে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তার মৃত্যু হয়। 

প্রতিবেশী ও পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় ভজন রায় তার চাচাতো ভাই মনোরঞ্জন রায়কে তার স্ত্রীর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ জানায়। এসময় মনোরঞ্জনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলায় চাচাতো ভাই ভজনকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে চন্দ্রখোলা নয়াহাটি ব্রিজের উপর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মাথায় লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করলে সে ব্রিজের উপর পড়ে যায়। স্থানীয়রা আহতাবস্থায় ভজন রায়কে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ভজনের স্ত্রী সবিতা রায় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নবাবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এ মামলার আসামি মনোরঞ্জনকে পুলিশ খুঁজছিলো। 

বুধবার (১৯ জুন) সকালে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে শোল্লা ইউনিয়নের আবদানী এলাকার একটি পাট ক্ষেতে এলাকাবাসী গোঙ্গানির শব্দ পেয়ে কাছে গিয়ে মনোরঞ্জনের নিথর দেহ পরে থাকতে দেখেন। তারা তাকে তুলে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করে। পথেই সে মারা যায়। স্থানীয় শোল্লা ইউপি সদস্য ফজলুল হক পুলিশকে খবর দেয়।  সুরতহাল শেষে দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার থানায় নিয়ে যায়।

শোল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য ফজলুল হক জানান, সকালে কয়েকজনের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তখনো মনোরঞ্জন গুংগাচ্ছিলো। পাট ক্ষেত থেকে পাশের কাঠবাগানে আনার কিছুক্ষণ পর সে মারা যায়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত নবাবগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক অজিত কুমার রায় জানান, নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মনোরঞ্জন বিষপান করে আত্মহত্যা করতে পারে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে হয়তো মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে। 

স্বজন ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্ত্রী নিপা রায়ের পরকীয়ার বলি হয়ে স্বামী মনোরঞ্জন ও ভাশুর ভজনকে মৃত্যুর পথে পাড়ি জমাতে হলো। এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে এলাকার মানুষ। তাদের দাবি মনোরঞ্জনের স্ত্রী নিপা রায়ই এ দুটি মৃত্যুর জন্য দায়ী। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
  
নিহত মনোরঞ্জনের বোন অর্চনা রায়ের অভিযোগ, ভাইয়ের স্ত্রী নিপাই তাকে মেরে ফেলেছে। নিপার বিচার চাই।

এ বিষয়ে নিপা রায়ের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। এমনতি তার অবস্থান সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নবাবগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহজালাল বলেন, পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মনোরঞ্জনের মৃতদেহটি উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে হত্যা মামলার আসামি হওয়ার অনুশোচনা থেকে বিষপানে আত্মহত্যা করতে পারে। 

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  স্ত্রীর পরকীয়া   স্বামী-ভাশুরের মৃত্যু   দোহার-নবাবগঞ্জ-ঢাকা  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close