ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

মুরগি রাখলে শেয়াল ঠেকাবে কে? প্রশ্ন উপকারভোগীদের
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪, ৬:৩০ পিএম  (ভিজিট : ৬৩৮)
প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের ‘উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী সুবিধাবঞ্চিত ৮৬ টি এলাকা ও নদী বিধৌত চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প’র সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার উপকারভোগীদের জন্য মুরগির ঘর তৈরিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, যথাস্থানে সরবরাহ না করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অবহেলায় প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল। উপকারভোগীরা প্রশ্ন তুলেছেন নিম্নমানের ঘরে মুরগি রাখলে শেয়াল ঠেকাবে কে? 

সরেজমিনে গত রোববার (৯ জুন) উপজেলার মেঘাই ঘাটের উন্মুক্ত স্থানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম এন্টারপ্রাইজের সংশ্লিষ্টদের প্রকল্পের মুরগির ঘর তৈরি করতে দেখা যায়। প্রতিষ্ঠানের সাইড ম্যানেজার মিলন জানান, প্রতিষ্ঠানটি ঢাকায় নিবন্ধনকৃত এবং কেন্দ্রীয়ভাবে প্রকল্পের সাথে চুক্তি বদ্ধ। প্রকল্প সম্পৃক্ত কোনো কাগজ তাদের কাছে নেই। অনুমানের ভিত্তিতে ঘর তৈরি হচ্ছে। 

এ সময় দেখা যায়, মুরগির ঘরের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা প্রাক্কলনের চাইতে ৫/৬ ইঞ্চি ছোট, .৭৫ ইঞ্চি পুরো কাঠের তক্তা ব্যবহারের কথা থাকলেও পাতলা পুরো কাঠ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এ সব ঘর। এছাড়াও ২৬ এমএম টিনের পরিবর্তে ১৯ এমএম টিন ব্যবহার করা হয়েছে। এ সময় মেঘাই ঘাটে একই প্রকল্পের ছাগল ও ভেড়ার ঘর বিতরণ করতে দেখা যায়। ছাগল ও ভেড়ার ঘরগুলো আরও নিম্নমানের। প্রাক্কলনের সাথে মাপে কোনো মিল নেই। 

মাইজবাড়ী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বাসিন্দা ও ঘর নিতে আসা অন্তত ১৫/২০ জন উপকারভোগী নিম্নমানের ঘর বিতরণের প্রতিবাদ জানান। এ সময় তারা জানান, এই ঘরে প্রাণী রাখতে হলে আরেকটি বড় ঘরে রাখতে হবে, না হলে শিয়াল পাহারা দিতে হবে, পাহারা দেবে কে? চরাঞ্চলে উপকারভোগীদের বাড়িতে ঘর পৌঁছে দেয়ার বিধান থাকলেও তারা নদীর এপারে বিতরণ করছে এতে করে তাদের এই ঘর চরাঞ্চলে নিতে ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা খরচ হয়। এ সময় তারা জানান জ্বালানি ছাড়া কোনো কাজে আসবে না বলে জানান। 

মুরগির ঘর সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি সেলিম রেজা বলেন, কাঠতো ডাইসে তৈরি হয়না একটু এদিক সেদিক হতে পারে। 

ছাগল ভেড়ার ঘরে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান নয়ন জানান, টাঙ্গাইলে তাদের কারখানা। ভালো মন্দ না বুঝে তিনি শুধু সরবরাহ করছেন। প্রকল্পের পরিপত্রে উপজেলা পর্যায়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট ইনপুট সহায়তা রিসিভিং কমিটি ঘরগুলো বুঝে নেয়ার বিধান রয়েছে। প্রতিটি ঘরের জন্য কতো বরাদ্দ তা কেউ জানে না। 

কাজিপুর উপজেলা ইনপুট সহায়তা ও রিসিভিং কমিটির সদস্য ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসান মাহমুদুল হক বলেন, সদস্য হলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর এটার দেখভালের দায়িত্বে। আমি কখনো মনিটরিংয়ের জন্য যাইনি। 

কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন মাহমুদুল হাসান বলেন, অনেক কিছুই বলতে পারিনা। একজনের সিদ্ধান্তে সবকিছু হচ্ছে, ঘরের মান ঠিক নেই। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও কমিটির সভাপতি দিদারুল আহসান জানান, কেন্দ্রীয় ভাবে ঘরের কাজ ঠিকাদারগণ পেয়েছেন, আমরা শুধু রিসিভ এবং বিলি করি। 

ছাগলের ঘর বিতরণকালে উপস্থিত উক্ত প্রকল্পের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সোহেল আলম বলেন, ঘর পেল কিনা সেইটা দেখতে এসেছি, ঘরের মান নিয়ে কিছুই বলতে পারবো না। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হয়েছি। বিস্তারিত জেনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হবে। 

সচেতন শিক্ষক রিয়াদুল ইসলাম বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে পারে।  

সময়ের আলো/আরআই



আরও সংবাদ   বিষয়:  প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প   মুরগির ঘর বিতরণ   কাজিপুর-সিরাজগঞ্জ  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close