প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪, ৫:০৬ পিএম (ভিজিট : ৪৯৬)
নদী মাতৃক দেশের বাসিন্দা খালেকুজ্জামানের পেশা শিক্ষকতা। অবসর পেলেই পলো, পাঁচা, যুইতা, ঝাঁকি জাল, ঠেলা জাল, ছিপ জাল, বড়শি, কিংবা দল বেঁধে বেড়জাল দিয়ে নদী থেকে খাবার জন্য মাছ ধরেন সখে। সপ্তাহে দুই তিন দিন দু’এক ঘণ্টা সময় দিলেই পরিবারের আমিষের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। নদী অববাহিকায় বসবাসকারী বিভিন্ন পেশার লক্ষ লক্ষ এমন সৌখিন মৎস্য শিকারি ছিলো এখনও আছে। তবে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার যমুনা নদীর তীরে ও চরাঞ্চলে বসবাসকারী সৌখিন মৎস্য শিকারিদের বড়ই দুর্দিন চলছে। চিন দেশ থেকে আমদানি করা ছোট ফাঁসের অবৈধ এক ধরনের দুয়ারী জাল তাদের দুর্দশার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লক্ষ লক্ষ জাল উপজেলার যমুনা নদীর কুল, কাছার, খাড়িতে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা যায়, চিন দেশ থেকে আমদানি করা ৪.৫ সেন্টিমিটারের চেয়ে কম ফাঁসের এই বিশেষ দুয়ারী জাল সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যা সর্বোচ্চ ৫-৭ ফুট পানির নিচে মাটির সাথে আঁটকে রাখা যায়।
নাটুয়ার পাড়া ইউনিয়নের রেহাইশুড়িবেড় গ্ৰামের মৎস্যজীবী ভোলা জানায়, এই জাল ফাঁকি দিয়ে মা-পোনা মাছ কিছুই যেতে পারেনা, ছোট বড় মাছসহ নানা প্রকার জলজপ্রাণী, কাছিম এই জালে আটকা পড়ে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের শতাধিক সরকারি তালিকাভুক্ত মৎস্যজীবীদের ধারণা মাছের বংশ নির্বংশ হওয়ার পাশাপাশি জীব বৈচিত্র্য হুমকিতে পড়ার। দিন দিন মাছের সংখ্যা কমছে।
উপজেলা মৎস্য সম্পদ কর্মকর্তা হাসান মাহমুদুল হক বলেন, উপজেলায় চলতি অর্থবছরে ৪ হাজার ৭৩৬ মেট্রিক টন মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিপরীতে ৫ হাজার ৯২৬ মেট্রিকটন উৎপাদিত হয়েছে। চায়না জাল বিস্তার রোধে জনসচেতনতামূলক সভা, অভিযান এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা নিয়মিত চালু আছে।
অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তিনি বলেন, নিষিদ্ধ চায়না জাল এতো বেশি বিস্তার হয়েছে যে, সকালে অভিযান করলে একই স্থানে আবার পাওয়া যায়। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
কাজিপুর উপজেলার পূর্ব খুকশিয়া গ্ৰামের যমুনা নদী থেকে ঝাঁকি জাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন সৌখিন মৎস্য শিকারি সেলিম রেজা। ছবি: সময়ের আলো