প্রকাশ: সোমবার, ১০ জুন, ২০২৪, ৩:২৬ পিএম আপডেট: ১০.০৬.২০২৪ ৪:৩৩ পিএম  (ভিজিট : ৪৮০)

সিলেটে অতিবৃষ্টিতে টিলাধ্বসে এক পরিবারের ৩ জন মাটিচাপা পড়ে মারা গেছেন। এছাড়া অপর পরিবারের ৪ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি অতিবৃষ্টিতে সিলেট নগরীর নিন্মাঞ্চলসহ প্রধান কয়েকটি সড়ক প্লাবিত হয়েছে।

সোমবার (১০ জুন) ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। অতিবৃষ্টি ও কালবৈশাখী চলাকালে বজ্রপাতে সৃষ্ট আগুনে লাক্কাতুরায় ৯টি দোকান ও ৪টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে অতিবৃষ্টি চলাকালে সিলেট নগরীর ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেজরটিলা চামেলিবাগে হঠাৎ বিকট শব্দে টিলাধ্বসের ঘটনা ঘটে। এ সময় ২ পরিবারের ৭ জন মাটিচাপা পড়েন। দ্রুত স্থানীয়রা ৪ জনকে উদ্ধার করতে পারলেও বাকী তিনজন মাটিচাপা পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশনের ৩০ সদস্যের টিম সকাল থেকে উদ্ধার কাজ শুরু করে। দুপুরে উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দেয় সেনাবাহিনী। পরে বেলা সোয়া ১টার দিকে মাটিচাপা পড়া একই পরিবারের ৩ জনকে মৃত শনাক্ত করা হয়।

তারা হলেন- চামেলিবাগের ২ নম্বর রোডের ৮৯ নম্বর বাসার মৃত আগা রফিক উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আগা করিম উদ্দিন (৩১), তার স্ত্রী শাম্মি আক্তার রাজি (২৫) ও তাদের ২ বছর বয়সী সন্তান তানি। এর আগে স্থানীয়রা আগা মাহমুদ উদ্দিন, আগা বাবুল উদ্দিন, আগা বাচ্চু উদ্দিন ও আগা শফিক উদ্দিনকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এদিকে লন্ডন থেকে সিলেট ফিরে সরাসরি সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

সিলেটের শাহপরান (র.) থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ জানান, চামেলিবাগে টিলাধ্বসের ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরো ৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, টিলার নিচে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসের ব্যাপারে সিটি করপোরেশন জিরো টলারেন্স। যারা টিলা কাটছে, তারা রাতে আধারে কাটছে। আমরা চাই না এ ধরণের আর কোনো ঘটনা ঘটুক।

এদিকে মেয়র আরও বলেন, বিগত সময়ে বন্যায় নিজে দেশে থাকতে না পারলেও সিটি করপোরেশনের টিম কাজ করে গেছে। আমি যখন লন্ডনে ব্যক্তিগত সফরে যাই, তখন বৃষ্টিবাদল ছিলো না। আমি নিজে লন্ডন থেকে নিয়মিত আপডেট নিয়েছি। নগরবাসীর দূর্ভোগের সময় নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে পাশে না থাকতে পারায় আমি দুঃখিত।

এদিকে সোমবার ভোর থেকে অতিবৃষ্টিতে তলিয়ে যায় সিলেট নগরীর বেশ কয়েকটি প্রধান সড়ক। পানি ওঠেছে তালতলা, পায়রা, উপশহর, তেররতন, যতরপুর, মেন্দিবাগসহ বিভিন্ন এলাকায়। প্রধান সড়কগুলোতে পানি ওঠায় ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। ভারীবর্ষণ ও কালবৈশাখী চলাকালে সিলেট নগরীর লাক্কাতুরায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের টিকেট কাউন্টারের বিপরীত পাশের দোকানগুলোতে বজ্রপাতে আগুন ধরে যায়।

ধারণা করা হচ্ছে বজ্রপাতে থেকে সৃষ্ট আগুনে কিংবা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। সিলেট ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে ৯টি দোকান ও ৪টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।


সময়ের আলো/এএ/