ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ইউটিউব দেখে তরমুজ চাষ
মাচায় দুলছে সোহেল রানার রঙিন স্বপ্ন
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪, ৬:০৭ এএম  (ভিজিট : ৩৮০)
ইচ্ছাশক্তির জোরে ইউটিউব দেখে তরমুজ চাষ করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন সোহেল রানা (৩৫)। দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলি উপজেলার প্রত্যন্ত রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে প্রথমবারের মতো তরমুজ চাষ করেছেন তিনি। মৌসুমের বাইরে অসময়ে তরমুজ চাষ করার ঝুঁকি নেওয়ায় তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস। আর মৌসুমের বাইরে তরমুজের ভালো ফলন দেখে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন আশপাশের কৃষকরাও।

তরমুজ একটি মৌসুমি ও রসালো ফল। সাধারণত ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাজারে পাওয়া যায়। আর এ তরমুজ অসময়ে বাজারে পাওয়া যাবে। হাকিমপুর উপজেলার হিলি পৌরসভার রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের সোহেল রানার বদৌলতে প্রথমবারের মতো এবারে অসময়ের তরমুজ চাষ হয়েছে।

নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে সোহেল জানান, ইউটিউব দেখে বাড়ির পাশের তিন বিঘা জমিতে মাচা তৈরি করে তিন জাতের তরমুজ (হলুদ, কালো ও সবুজ) চাষ করেছেন। ধানের চেয়ে তরমুজ চাষ লাভজনক হওয়ায় আগামীতে আরও বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করবে বলে আশাবাদী তিনি।

সরেজমিন দেখা যায়, রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে মাচান পদ্ধতিতে তিন জাতের তরমুজের আবাদ করেছেন সোহেল। এখন মাচায় ঝুলছে হলুদ, কালো ও সবুজ বর্ণের তরমুজ। সেগুলো পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সোহেল। গ্রামের অন্যরা শখ করে কেউবা কৌতূহলে দেখতে আসছেন। হাসিমুখে তাদের নানারকম প্রশ্নের জবাব দিছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল।

সোহেল রানা বলেন, আমি গ্রামের এক মসজিদে ইমামতি করি। পাশাপাশি অন্য কিছু করার চিন্তা থেকে ইউটিউবে তরমুজ চাষ দেখে আগ্রহী হই। বাড়ির পাশের তিন বিঘা জমিতে মাচা তৈরি করে হলুদ, কালো ও সবুজ রঙের তরমুজ চাষ করেছি। গাছগুলোতে ফল ধরেছে। তরমুজের ভারে মাচা ছিঁড়ে পড়ার অবস্থা। তাই বর্তমানে মাচা ঠিক করছি। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে তরমুজ বাজারজাত করতে পারব। আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো আয় হবে বলে আশা করছি। তিন বিঘা জমিতে তরমুজ চাষে তার ব্যয় হয়েছে ২ লাখ টাকা। এবারে তেমন লাভ না হলেও আগামীতে বেশি লাভ হবে এমনটাই আশা তার। এ জাতের তরমুজ চারা লাগানোর ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে এবং পাকতে সময় লাগে ৩৫-৪০ দিন। প্রতিটি তরমুজ ২-৫ কেজি ওজনের হবে।

তিনি আরও বলেন, গাছে যে ফল আছে তাতে প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো বিক্রি করতে পারব। হলুদ ও সবুজ তরমুজের কেজি ৩০-৪০ এবং কালোটা ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এ দাম থাকলে ভালো আয় হবে। চাষ পদ্ধতি দেখে অনেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। আগামীতে এ অঞ্চলে চাষাবাদ আরও বাড়বে বলে আশা করছি।

ওই গ্রামের বাসিন্দা অলিউল্লাহ ও নাজমুল হোসেন বলেন, আমাদের গ্রামের ছেলে সোহেল রানা। প্রথমদিকে তরমুজ চাষের কথা শুনে গুরুত্ব দেইনি। এখন দেখছি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বর্তমানে ধান চাষে যত ঝামেলা বাজারে সার, কীটনাশকসহ সবকিছুর দাম বেশি। আবার শ্রমিক সংকট তো আছেই। সব মিলে অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভ তাই চিন্তা আগামী বছর আমরাও জমিতে তরমুজ চাষ করব। সোহেলের কাছে গিয়েছিলাম কিছু পরামর্শ নিয়েছি।

সোহেল রানার তরমুজের জমিতে কাজ করা শ্রমিক এরফান আলী বলেন, সোহেল রানার তরমুজের জমিতে আমার মতো গ্রামের ১০ জন বেকার ছেলের কর্মসংস্থান হয়েছে। আমরা ক্ষেতের পরিচর্যা, তরমুজে জালি পরানোসহ সব কাজ করছি। যে হারে গাছে ফল ধরেছে, তাতে বেশ ভালো ফলন হবে।

এ বিষয়ে উপজেলায় হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, উপজেলায় প্রথমবারের মতো তরমুজ চাষ হয়েছে। কৃষকরা তরমুজ চাষে আগ্রহী হলে আগামীতে বীজ সরবরাহ থেকে শুরু করে সার্বিক সহযোগিতা করব। সোহেল রানার জমিতে যে তরমুজ লাগানো হয়েছে সেগুলো উন্নত জাতের এবং অল্প সময়ে ফল ধরে। আর মৌসুমের বাইরেও মৌসুমি ফল বাজারে পাওয়া যাবে।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close