ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

লাল-হলুদ ক্যাপসিকামে সবুজের বাজিমাত
প্রকাশ: সোমবার, ৩ জুন, ২০২৪, ৬:৪৪ এএম আপডেট: ০৩.০৬.২০২৪ ৪:৩৫ পিএম  (ভিজিট : ১৮৭)
কিশোরগঞ্জের এখলাস উদ্দিন সবুজ (৩৮)। হোসেনপুরের পুমদী ইউনিয়নের নারায়ণ ডহর গ্রামের বাসিন্দা। রাজধানী ঢাকার কবি নজরুল ইসলাম সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন। পড়াশোনা শেষ করে হতে চেয়েছিলেন ব্যবসায়ী। মাছের রেণু থেকে পোনা উৎপাদন দিয়ে তার ব্যবসার হাতেখড়ি হয়। পরে এক কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে বর্তমানে পুরোদস্তুর কৃষক। বেকারত্ব ঘুচিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় পলিনেট হাউস প্রর্দশনী বাস্তবায়নে কাজ করছেন।

সম্প্রতি এই কৃষি উদ্যোক্তা পলিনেট হাউসে উচ্চমূল্য ফসল ক্যাপসিকাম আবাদ করে লক্ষাধিক টাকা আয় করেছেন। তবে স্থানীয়ভাবে ক্যাপসিকাম বিক্রি না করতে পেরে কিছুটা বিপাকেও পড়েছেন সবুজ।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লাল ও হলুদ রঙের ক্যাপসিকাম। অধিক ফলনের আশায় ক্যাপসিকাম ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক এখলাস উদ্দিন সবুজ। তার হাতের যত্ন আর পরিচর্যায় ক্যাপসিকামের চারাগুলো হয়ে উঠেছে হৃষ্টপুষ্ট।

এখলাস উদ্দিন সবুজের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি আধুনিক প্রযুক্তিতে মালচিং পেপার দিয়ে টমেটো চাষ করে সাফল্য পাওয়ায় উপজেলা কৃষি অফিস পলিনেট হাউস উপহার দেয়। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পে আমি চুক্তিবদ্ধ হই যে, এই শেডে উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করব। শুধু ক্যাপসিকামেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে বিষয়টি তা নয়।

তরুণ এই কৃষি উদ্যোক্তা আরও বলেন, ২০২৩ সালের জুন মাসে শেড করা শেষ হয় কিন্তু ঠিকাদার পানি সাপ্লাই, ফগার মেশিন ইত্যাদি সেট না করতে পারায় ডিসেম্বরে শেড চালু হয়। পরে ডিসেম্বরে বগুড়ার এগ্রো ওয়ান কোম্পানি থেকে ২২ টাকা করে ১ হাজার ১৪০টি ক্যাপসিকাম চারা কিনে আনি। শেডের ভেতর ১০ শতাংশ জমিতে চারাগুলো রোপণ করি। চারা রোপণের দুই মাস পর থেকেই গাছে ফল আসা শুরু হয় এবং বিক্রিও শুরু করি। তবে সম্প্রতি কালবৈশাখী ঝড়ে ৪০টি গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সবুজ আরও বলেন, ক্যাপসিকাম চাষে জমি প্রস্তুত, সার, বালাইনাশক, শ্রমিক খরচসহ সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ক্যাপসিকাম খাওয়ায় অভ্যস্ত না হওয়ায় স্থানীয় কোনো বাজারে বিক্রি হয় না বললেই চলে। বিক্রি করতে হয় ঢাকার কারওয়ান বাজারে। কারওয়ান বাজারে পণ্য পাঠালে খরচ বেশি পড়ে, তাই পাঠাতে পারি না। তবে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের সুগন্ধা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ও বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় বিক্রি করছি। প্রতি কেজি ক্যাপসিকাম বিক্রি করা হয়েছে ৩৫০ টাকা দরে। ইতিমধ্যে প্রায় ২ লাখ টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করা হয়েছে। এখনও জমিতে যে পরিমাণ ফসল আছে, তাতে অন্তত আরও দুই লাখ টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করা যাবে বলে আশা করছি। কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. আবদুস সাত্তার বলেন, ক্যাপসিকাম উচ্চমূল্যের একটি নতুন ফসল।

উপজেলা কৃষি অফিসার একেএম শাহজাহান কবির এবং পুমদী ইউনিয়নের ব্লক সুপারভাইজার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় সবুজকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। বাজারে দাম ও চাহিদা ভালো হওয়ায় এ উপজেলায় আগামীতে ক্যাপসিকামের চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করছি।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close