অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার পর রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত হলো দেশের দ্বিতীয় প্রধান সমুদ্রবন্দর মোংলা। গতকাল শনিবার সকালে ৬০০ যাত্রী নিয়ে মোংলা প্ল্যাটফর্মে এসে পৌঁছায় মোংলা এক্সপ্রেস নামে একটি কমিউটার। এর আগে এই ট্রেনটি বেনাপোল থেকে সকাল ১০টায় ছেড়ে আসে। পথে বেনাপোল থেকে নাভারন, ঝিকরগাছা, যশোর জংশন, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া, চেঙ্গুটিয়া, নওয়াপাড়া, বেজেরডাঙ্গা, ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, কাটাখালি, চুলকাটি বাজার, ভাগা ও দিগরাজ স্টেশনে যাত্রাবিরতির পর মোংলায় আসে। এরপর দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে এই ট্রেনটি যাত্রী নিয়ে বেনাপোলের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
এ সময় মোংলায় আসা নতুন ট্রেনটিকে স্বাগত জানান স্থানীয় সংসদ সদস্য বেগম হাবিবুন নাহার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্নাসহ রেল কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কমিউটার ট্রেনটি মোংলায় এসে পৌঁছালে এই এলাকার মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ শুরু হয়। অনেকে এই দিনটিকে স্মরণ করে রাখতে টিকেট কেটে ট্রেনে চেপে খুলনার উদ্দেশে রওনা হন। অনুভূতি জানতে চাইলে, আবদুস সালাম নামে এক যাত্রী বলেন, ‘দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিলাম কখন মোংলা থেকে ট্রেন চলবে, আজ আশা পূরণ হলো। নিজেকে অনেক গর্বিত মনে হচ্ছে।’
সুস্মিতা বালা নামে আরেক নারীযাত্রী বলেন, মোংলা থেকে ফুলতলা যাব, এ জন্য সকাল ১০টায় এসে সপরিবারে বসেছিলাম। তাদের মতো শত শত যাত্রীকে নতুন ট্রেনে ওঠার জন্য মোংলা প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষায় ছিলেন এদিন।
এদিকে এই রেলপথ চালু হওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণসহ দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে জানিয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছর পর দেশের রেল নেটওয়ার্কে মোংলা বন্দর যুক্ত হয়েছে। এতে খুলনা-মোংলা রেলপথ ঘিরে অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে। ঢাকার সঙ্গে সহজ হবে মোংলা বন্দরের যোগাযোগ। একই সঙ্গে এই বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা স্বল্প সময়ে কম খরচে পণ্য ডেলিভারি নিতে পারবেন। এ ছাড়া বহুল কাক্সিক্ষত এই রেলপথ চালু হওয়ায় মোংলা বন্দরের সঙ্গে ভারত, ভুটান ও নেপালের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে বলেও জানান তিনি।
মোংলা রেলস্টেশন মাস্টার এসএম মনির আহম্মেদ জানান, গত বছরের ১ নভেম্বর এই রেলপথ বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন। এর ৭ মাস পর গতকাল শনিবার খুলনা-মোংলা রেলপথে আনুষ্ঠানিক ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এই পথে মঙ্গলবার বন্ধ রেখে সপ্তাহে ৬ দিন চলবে মোংলা এক্সপ্রেস নামে একটি কমিউটার ট্রেন।
ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, মোংলা-চুলকাঠি ২০ টাকা, মোংলা-কাটাখালি ২০ টাকা, মোংলা-মোহাম্মদনগর ৩৫ টাকা, মোংলা-ফুলতলা ৪৫ টাকা, মোংলা-নওয়াপাড়া ৫৫ টাকা, মোংলা-সিঙ্গিয়া ৬০ টাকা, মোংলা-যশোর ৬৫ টাকা, মোংলা-ঝিকরগাছা ৭৫ টাকা, মোংলা-নাভারন ৮০ টাকা এবং মোংলা-বেনাপোল ৮৫ টাকা।
খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, মোংলা বন্দরকে দেশের রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করতে ২০১৬ সালে শুরু হয় খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ। ২০১৯ সালে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও ৫ দফা সময় বাড়িয়ে নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০২৩ সালের অক্টোবরে। খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে রয়েছে রুপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার একটি রেলসেতু, ১০৭টি ছোট বড় কালভার্ট, ৮টি প্ল্যাটফর্ম ও ৯টি আন্ডারপাস।
এই রেলপথ চালু হওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। কম খরচে সহজে যাতায়াত এবং আরামদায়ক ভ্রমণও করতে পারবেন। চিকিৎসাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজেও ভারতে যেতে এই রুট তাদের সহজ হবে বলেও জানান তিনি।
সময়ের আলো/আরএস/
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্মেলন জরুরি
দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনেও অস্বস্তিতে রিয়াল
দিয়াবাতেকে ছাড়বে না মোহামেডান
বিসর্জনে অর্জন
মৃত্যুঞ্জয়ী গাজা
হাতিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর ব্যবসায়ী সমাবেশ
কালিহাতীতে কোটা আন্দোলনের মামলায় গ্রেফতার ৩
সোলস আমার পরিবারের একটি অংশ: তুষার
ছাত্রদলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
টস জিতলো ভারত, ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী
শেয়ারবাজারে এক সপ্তাহে হাওয়া ১৩ হাজার কোটি টাকা!