ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

সুন্দরবন ও বেনাপোলের পর হারাচ্ছে চিত্রা এক্সপ্রেসও
ক্ষোভে ফুঁসছেন কুষ্টিয়ার লাখো মানুষ
প্রকাশ: সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪, ৬:১০ এএম  (ভিজিট : ৫৭৬)
সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেসের পর এবার ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে চলাচলকারী একমাত্র ট্রেন চিত্রা এক্সপ্রেসটিও হারাতে বসেছেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারাসহ মিরপুর ও দৌলতপুরের লাখো মানুষ। এতে ব্যবসায়ী, যাত্রীসহ ভোগান্তির শিকার হবেন সব শ্রেণির মানুষ। তাই ট্রেনটির রুট বহাল রাখার দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয় জনগণ।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস এবং ২ নভেম্বর থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি বঙ্গবন্ধু সেতুর পরিবর্তে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে খুলনায় চলাচল শুরু করে। এতে ব্যবসা কমে যাওয়ার অভিযোগ তোলেন ভেড়ামারা, দৌলতপুর ও মিরপুরের শত শত ব্যবসায়ী। এর মধ্যেই চিত্রা এক্সপ্রেসের রুট বদলের কথা শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা তাদের।

কুষ্টিয়া সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আসমান আলী বলেন, ১৫-২০ লাখ মানুষের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে, এই এলাকার ইতিহাস, ঐতিহ্য, রাজনীতি ও অর্থনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একের পর এক ভেড়ামারা রুটের ট্রেনগুলো রুট পরিবর্তন করে চলে যাচ্ছে অন্যত্র। এতে গুরুত্ব হারিয়ে বঞ্চিত হচ্ছেন ভেড়ামারা, দৌলতপুর ও মিরপুর অঞ্চলে বসবাসকারী বিশাল জনগোষ্ঠী। ভেড়ামারা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, একটা এলাকা কতটুকু উন্নত তা অনেকাংশে নির্ভর করে সেই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর। কিন্তু ভেড়ামারার ট্রেনগুলো একের পর এক রুট পরিবর্তন করে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। খুলনা থেকে ভেড়ামারা হয়ে ঢাকাগামী সুন্দরবন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন পুনর্বহাল ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ না করা এখন সময়ের দাবি।

জয়দেবপুরের এক রেলযাত্রী বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের গর্বের। তার স্বকীয়তা বজায় থাক সেটা আমরাও চাই। কিন্তু সেটা অন্য কোনো রুটের ট্রেন তুলে নিয়ে হোক তা কাম্য নয়। সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট বদল হয়েছে। এবার আমাদের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম চিত্রা এক্সপ্রেস পদ্মা সেতু দিয়ে গেলে আমরা জয়দেবপুর যাব কী করে?

ডাকবাংলো ও বাবর আলী সুপার মার্কেট বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল ইসলাম মিলন বলেন, সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন তুলে নিয়ে ট্রেনের রুট পরিবর্তন করায় এ অঞ্চলের যাত্রীরা যাতায়াতে ব্যাপক বিড়ম্বনায় পড়েছেন। এ ছাড়া ট্রেন দুটি তুলে নেওয়ায় ভেড়ামারা রেলস্টেশন সংলগ্ন ভেড়ামারার বৃহৎ বাজারটি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্টেশনকেন্দ্রিক মানুষের বাজার ব্যবস্থাপনায় স্থবিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বাড়তি লোকের আনাগোনা কমে গেছে। শহরের ব্যস্ততা লোপ পাচ্ছে। এর মধ্যেই শোনা যাচ্ছে, আগামী জুন মাসে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটিও তুলে নেওয়া হবে। সবমিলিয়ে ভেড়ামারার গুরুত্ব দিন দিন কমে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা স্টেশন মাস্টার জয়নাল আবেদীন বলেন, আগামী ১ জুন থেকে ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট পরিবর্তনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখনও আমাদের কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দেননি।

এদিকে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট বহাল রাখার দাবিতে ভেড়ামারা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহীর জিএম অসীম কুমার তালুকদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, অবিভক্ত পূর্ব বাংলায় প্রথম রেলপথ স্থাপন করে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে নামে একটি কোম্পানি। ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেল যুগে প্রবেশ করে। পরে ১৮৯৭ সালে দর্শনা পোড়াদহ সেকশনটি সিঙ্গেল লাইন থেকে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয়। পর্যায়ক্রমে ১৯০৯ সালে পোড়াদহ-ভেড়ামারা, ১৯১৫ সালে ভেড়ামারা-ঈশ্বরদী এবং ১৯৩২ সালে ঈশ্বরদী-আবদুলপুর সেকশনগুলোকে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয়। 

উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গকে সংযোগকারী ভেড়ামারা স্টেশনকে ১৯১৬ সালে জংশনে উন্নীত করা হয়। ভেড়ামারা হয়ে ঢাকাগামী ট্রেনে এই অঞ্চলের লাখো মানুষ ঈশ্বরদী, পাবনা, চাটমোহর, সিরাজগঞ্জ, যমুনা পূর্ব ও পশ্চিম, টাঙ্গাইল, জয়দেবপুর, গাজীপুর, ঢাকা বিমানবন্দর, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও কমলাপুর যাতায়াত করে থাকেন।

সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close