প্রকাশ: রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪, ৫:৫৬ পিএম (ভিজিট : ৫০৪)
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলমান। স্বাভাবিকের চেয়ে নদীর পানি ৪/৫ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীর ঢেউয়ে নাগোর দোলার মতোই উঠানামা অবস্থায় খেয়ায় নদী পারাপার করছে। ট্রলার যাত্রীদের কোন ধরনের নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই ঝুঁকি নিয়ে সুগন্ধা নদী পাড়ি দিচ্ছে মাঝিরা। বন্যার পূর্বাভাসে দ্রুত নিজ বাসায় ফিরতে যাত্রীদের চাপও বেশি। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়েই মাঝিরা ঘাট থেকে ট্রলার ছাড়ছে সুগন্ধা নদী পাড়ি দিয়ে অপর প্রান্তে।
ঝালকাঠি পুরাতন কলেজ, পৌরসভা, লঞ্চঘাট, রকেট ঘাট এলাকার সরেজমিনে দেখা যায়, একের পর এক যাত্রী বোঝাই খেয়া ছেড়ে যাচ্ছে ঘাট থেকে। ঝুঁকি নিয়ে খেয়াগুলো চললেও যাত্রীদের গায়ে নেই কোনো লাইফ জ্যাকেট। হঠাৎ বাতাস এবং নদীতে ঢেউ উঠলে খেয়া ডুবে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে। তবুও অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করেই চলছে খেয়া পারাপার।
খেয়া চালক সাইদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকেই বাতাসের কারণে নদীতে ঢেউ চলছে। যাত্রীদের প্রয়োজনেই আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে পারাপার করছি। পৌনে ৩টার দিকে জেলা প্রশাসনের এক লোক এসে আমাদের পুরাতন কলেজ খেয়াঘাটের খেয়া বন্ধের নির্দেশ দেন। কিন্তু সুগন্ধা নদীতেই অন্যান্য খেয়ায় পারাপার করা হচ্ছে। নদীতে যেভাবে ঢেউ আছে তাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছি। বৃদ্ধ সাহেরণ বিবি জানান, নদীর পানি বাড়ছে, আমাদের ঘরের প্রায় কাছে এসেছে। কিন্তু হাস, মুরগি, গরু, ছাগল, বাসার মালামাল রেখে কোথাও যাবো না। গতবারের বন্যায় আশ্রয় কেন্দ্রে গেছিলাম, তখন ঘরটি চুরি হয়। এ কারণে এবার আশ্রয় কেন্দ্রে যাবো না। মরলে স্বামীর ঘরেই মরবো, কোথাও যাবো না।
এদিকে ৮৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা থাকলেও কোন কেন্দ্রেই এখন পর্যন্ত নদী তীরবর্তী বাসিন্দা বা বন্যা দুর্গতরা আশ্রয় নিতে শুরু করেনি। পানি বৃদ্ধি ও বাতাসের গতি বাড়লে তখন আশ্রয় কেন্দ্রে যাবে।
ঝালকাঠি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা জানান, নদীর পানি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে পানি বৃদ্ধির পরিমাণে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শও দেন তিনি।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম জানান, বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি। মেডিকেল টিম, স্বেচ্ছাসেবক, আশ্রয়কেন্দ্র, নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। আশা করি জান-মালের তেমন ক্ষতি হবে না।
সময়ের আলো/আরআই