ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

৮৪ ভাগ কাজ শেষ, ট্রেন ছুটবে ডিসেম্বরে
প্রকাশ: রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪, ৩:২৪ এএম  (ভিজিট : ৫০০)
দেশের সর্ববৃহৎ রেলওয়ে সেতু নির্মিত হচ্ছে সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর বুকে। বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মাণ করা হচ্ছে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পিলারের ওপর স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা বিশেষ ধরনের বড় বড় স্টিলের পাটাতন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে স্প্যানগুলো। এটি তৈরি করা হয়েছে ওয়েদার স্টিল দিয়ে। দেশের রেলসেতুতে এই ধরনের স্টিল ব্যবহার এই প্রথম। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুর কাজ শেষ হয়েছে শতকরা ৮৪ ভাগ। বাকি ১৬ ভাগ কাজ ডিসেম্বরে শেষ হবে। এরপর ডিসেম্বরের শেষ দিকে চালু হতে পারে রেলসেতুটি। রেলসেতু চালু হলে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ছুটবে ট্রেন। ডিসেম্বরে বাণিজ্যিকভাবে চালুর প্রত্যাশা সরকারের। ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে ইতিমধ্যে। ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এই সেতু দিয়ে ১২০ কিলোমিটার গতিতে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। আর আন্তঃদেশীয় মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে এই রেলসেতু দিয়ে। তাতে সময় কম লাগবে। উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে এই সেতু। সেতুটি চালু হলে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হবে, যা দেশের জিডিপিতে অবদান রাখবে।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, এই নতুন স্টিল ব্যবহারের কারণে স্প্যানগুলো আলাদাভাবে রং করার প্রয়োজন হবে না। বলা হচ্ছে এর ফলে আগামী ১০০ বছরেও সেতুর কাঠামোতে মরিচা ধরবে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গার্ডারের উজ্জ্বলতাও বাড়বে। এ ছাড়াও এই সেতুতে সিøপার ছাড়াও বিশেষ পদ্ধতিতে বসানো হচ্ছে রেল ট্র্যাক। এতে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে চলবে পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগের গতি বাড়বে। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, সেতুর কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। এপ্রিলের শেষ নাগাদ এর অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ। ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। আরও কিছু আনুষঙ্গিক কাজ বাকি রয়েছে। ফুট ওভারব্রিজ, স্টেশন প্ল্যাটফর্ম, স্টেশনে ট্র্যাক নির্মাণ, সিগন্যাল ব্যবস্থাসহ জিটিসিএলের গ্যাস লাইন স্থাপনসহ সার্বিক কাজ ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ শেষ হবে। ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ অথবা জানুয়ারির প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রী যখন সময় দেবেন তখন উদ্বোধন করা হবে।

তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর যে ট্রেন লাইন রয়েছে তা দিয়ে ব্রডগেজ ট্রেন চলতে পারে না। এখানে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলে। এতে সময় লাগে বেশি। এতে সেতু পারাপারে ৪০-৪৫ মিনিট সময় লাগে। এ কারণে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না। ট্রেন বাড়ানোর জন্য প্রচুর ডিমান্ড রয়েছে। বঙ্গবন্ধু রেলসেতুটি চালু হলে দিনের ৮৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। আর আন্তঃদেশীয় মালবাহী ট্রেন চলাচল করতে পারবে। এতে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হবে। দেশের জিডিপিতে অবদান রাখবে। এই রেলসেতু বাস্তবায়িত হলে আমদানি-রফতানি খরচ কমে যাওয়াসহ বঙ্গবন্ধু সেতু ও মহাসড়কের ওপর চাপ কমবে।

প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, রেলসেতুর প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হচ্ছে। 

বাংলাদেশ ও জাপানের যৌথ অর্থায়নে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকায় রেলসেতু প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করছে জাইকা। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বরে সেতুটির নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে।

১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপন হয়। তবে ২০০৬ সালে বঙ্গবন্ধু সেতুর উত্তর লেনে প্রথম ফাটল দেখা দেয়। পরে ফাটলটি দক্ষিণ লেনেও ছড়িয়ে পড়ে। এর থেকে সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকৃত ট্রেনের গতিসীমা কমিয়ে দেওয়া হয়। 

বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৩৮টি ট্রেন চলাচল করে। ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হওয়ায় সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি ঘটছে শিডিউল বিপর্যয়, বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।

সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close