ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

চোখে সুরমা ব্যবহার সুন্নত
প্রকাশ: রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ২:২৩ এএম  (ভিজিট : ৪৪৬)
সৃষ্টিজগতে প্রাণিকুলকে আল্লাহ যেসব নেয়ামত দিয়েছেন তারমধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে দৃষ্টিশক্তি। এর মাধ্যমে সবাই সৃষ্টিজগতের সৌন্দর্য অবলোকন করতে পারে। মহান আল্লাহর এই অমূল্য নেয়ামতের পরিচর্যা করা সবার দায়িত্ব। চোখের উপকারার্থে রাতে শয়নকালে সুরমা ব্যবহার করা সুন্নত।

রাসুলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত চোখে সুরমা ব্যবহার করতেন। চোখের যত্নে তিনি সুরমাকে এতটাই গুরুত্ব দিতেন যে, সাহাবায়ে কেরামকে তিনি এটি লাগানোর ব্যাপারে উৎসাহ দিতেন। সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ি ও ইমামদের মাঝেও সুরমা ব্যবহারের বেশ প্রচলন ছিল। এখনও শৌখিনরা সুরমা ব্যবহার করেন। তবে কেউ যদি কাজটি নবীজি (সা.) করেছেন ভেবে করেন, তা হলে সৌন্দর্য ও শৌখিনতা হলেও সঙ্গে সুন্নতের সওয়াবও আমলনামায় যুক্ত হবে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর একটি সুরমাদানি ছিল। প্রত্যেক রাতে (ঘুমানোর আগে) ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে তিনবার সুরমা লাগাতেন।’ (সুনানুল কুবর লিল ইমাম বাইহাকি : ৮৫১৬)

সুরমা ব্যবহারের উপকারিতা বিজ্ঞানের গবেষণায়ও প্রমাণিত। হাদিস ও বিজ্ঞানের গবেষণায় সুরমা ব্যবহারে চোখের বড় উপকারিতাগুলো হলো, সুরমা চোখের জন্য ছোঁয়াচে সব ধরনের রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করে। চোখের প্রবেশকৃত ধুলা ও ক্ষতিকর পদার্থগুলো নিঃসরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধক জীবাণু ধ্বংস করে। চোখে জ্বালাপোড়া নিরাময় করে। হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা শোয়ার সময় ‘ইসমিদ’ সুরমা ব্যবহার করবে। কারণ তা চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে এবং অধিক পাপড়ি গজায়’ (ইবনে মাজাহ : ৩৪৯৬)। অন্য বর্ণনায় আছে, ‘এটি চোখের ময়লা দূর করে এবং চক্ষু পরিষ্কার করে।’ (তাবারানি : ৬৬৫) 

চোখের পাপড়ি মানুষের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। শুধু সৌন্দর্যবর্ধনই করে না, ধুলা-দূষণ ও বাতাস থেকে আমাদের চোখের সুরক্ষায় ঢাল হিসেবেও কাজ করে। অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ ও মানুষের মুখভঙ্গি বুঝতেও চোখের পাপড়ির প্রভাব রয়েছে। জার্নাল দ্য রয়্যাল সোসাইটি ইন্টারফেস সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন মতে, বাতাসে মিশে থাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা, সংক্রামক জীবাণু, অণুজীব ছাঁকার কাজ করে চোখের পাপড়ি। এরপর ছাঁকনকৃত বাতাস চোখের ভেতর প্রবাহিত হতে সাহায্য করে। এ ছাড়া অক্ষিগোলকে মিউকাস, তেল ও পানির সংমিশ্রণে যে তরল প্রলেপ থাকে, সেটা শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে চোখের পাপড়ি। ফলে চোখ শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পায়। 

সুরমা লাগানোর তিনটি পদ্ধতির কথা হাদিসবিশারদগণ বর্ণনা করেছেন-১. প্রত্যেক চোখে আলাদাভাবে তিনবার করে সুরমা লাগানো। প্রথমে ডান চোখে তিনবার। এরপর বাম চোখে তিনবার। ২. দুই চোখে একসঙ্গে সুরমা দেওয়া। গড়ে তিনবার হওয়া। প্রথমে ডান চোখের ডান দিক থেকে একবার। এরপর বাম চোখের ডান দিক হতে একবার। এভাবে পর্যায়ক্রমে তিনবারে শেষ করা। ৩. নবীজি (সা.) কখনো ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে দুইবার লাগাতেন। তাই চাইলে এ পদ্ধতিতেও সুরমা লাগানো যায়। তবে পুরুষের জন্য শুধু সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে সুরমা ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারণ এ ধরনের অঙ্গসৌন্দর্য নারীদের বিশেষত্ব। পুরুষরা শুধু উপকার লাভের নিয়তে সুরমা ব্যবহার করতে পারবেন (ফাতাওয়া শামি : ২/৪১৭)। অতএব, আমাদের উচিত চোখের যত্নে মহানবী (সা.)-এর এই সুন্নতটি পালন করা।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close