প্রকাশ: শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৬:৪৬ পিএম (ভিজিট : ৪৩২)
নড়াইলের লোহাগড়ায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামালকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- প্রধন আসামি শুটার সাজেদুল মল্লিক (২৫), পাভেল শেখ (২৮), মামুন মোল্যা (২৬) ও মো. রহমত উল্লাহ শেখ (১৯)। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ ও নড়াইল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব জানায়, ভিকটিম নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপন এর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতা ছিলো। দীর্ঘ শক্রতার জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
তিনি বলেন, গত ১০ মে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালকে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা করে ও এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা করেন। ওই ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একজন সাবেক ইউপি সদস্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে র্যাব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব-৬, র্যাব-৭ এবং র্যাব-১০ এর যৌথ আভিযানে ওই হত্যার ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ভিকটিম নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপন এর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতার জের ছিল। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে মোস্তফা ও লিপনের অনুসারীদের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে লিপন গুরুতর আহত হয় এবং তার একটি হাত কাটা পড়ে। পরবর্তীতে লিপন ও তার অনুসারীরা মোস্তফা কামালের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে র্যাবরে এই কর্মকর্তা বলেন, গত ১০ মে সকালে লিপনের নির্দেশনায় তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিম মোস্তফা কামালকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিম মোস্তফা কামালের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা সুইচ গিয়ার চাকু, রাম দাসহ বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে ওৎ পেতে থাকে। ভিকটিম মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্রই সুযোগ বুঝে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলের হাতে থাকা বিদেশি পিস্তল দিয়ে মোস্তফা কামালকে লক্ষ্য করে ৩ রাউন্ড গুলি করে; যার মধ্যে ২ রাউন্ড গুলি ভিকটিমের বুকে ও পিঠে লাগে।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, এই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত সাজেদুল স্থানীয় একটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্র ও লিপনের অন্যতম প্রধান সহযোগী। তিনি লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতো। গ্রেফতারকৃত রহমত উল্লাহ শেখ পেশায় একজন শ্রমিক হলেও সাজেদুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ১ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল তাকে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত পাভেল ও মামুন মোল্যা লিপনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। তাদের সবার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
সময়ের আলো/জেডআই