বরিশাল নগরীর হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে অশ্লীল ভাষায় কথাবার্তা এবং যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক মো. মাইদুল ইসলামকে বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ১৩ ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে শিক্ষকদের মধ্যে কোচিং করানো নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এখানে খণ্ডকালীন শিক্ষকদের কোচিংয়ের দিকেই ঝোঁক। তাছাড়া প্রতিটি শ্রেণিতে খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগের নামে বাণিজ্যও চলছে স্কুলটিতে।
জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম ফখরুজ্জমান বলেন, যে শিক্ষক যৌন হয়রানি করেছেন তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গত সোমবার ছাত্রীরা শিক্ষক মাইদুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে। এর ভিত্তিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটির প্রতিবেদনে সত্যতা পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার খণ্ডকালীন শিক্ষক মাইদুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এটা গার্লস স্কুল সামনে যাতে বড় ধরনের কোন ঘটনা না ঘটে সেজন্যই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এর আগেও শিক্ষক বরখাস্তের বিষয়টি স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক বলেন, ২০১৯ সালে যৌন হয়রানির অভিযোগে বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক এনামুল হক নাসিমকে বহিষ্কার করা হয়। আদালতের রায়ে বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানে বহাল রয়েছেন। বিদ্যালয়টিতে এখন ৩২ জন খণ্ডকালীন এবং ১৪ জন স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন।
এত বেশি খণ্ডকালীন শিক্ষক কেন, এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক কোনো জবাব দেননি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত আট বছর ধরে এ স্কুলে আছি। চারিত্রিক সমস্যা থাকলে এত দিনে কি ধরা পড়ত না?’ তার দাবি, যৌন হয়রানির কোনো ঘটনা হয়নি। প্রতিটি ক্লাসে সিসি ক্যামেরা আছে। শত্রুতা করে হয়ত কোনো পক্ষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
তিনি বলেন, তার অষ্টম শ্রেণিতে ক্লাস নেই। অথচ ছাত্রীরা তার কাছে প্রাইভেট পড়ে। কোচিং নিয়ে ঝামেলার কারণে তাকে ভালো চোখে দেখছেন না অনেকে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান ও ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষক শেখ জেবুন্নেছা বলেন, তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছেন তারা। ছাত্রীরা কমিটির কাছে স্বীকার করেছেন যে ওই শিক্ষক তাদের সঙ্গে অশ্লীল কথাবার্তা বলেছেন।
এ ব্যাপারে হালিমা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল বলেন, শিক্ষক মাইদুলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই শিক্ষক শনিবার থেকে আর ক্লাস নিচ্ছেন না।
সময়ের আলো/আরআই