আগামী ২৯ মে উপজেলা নির্বাচনে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট না দিলে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে দিলেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) তিনি তার সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলের সমর্থনে উপজেলার চরপার্বতী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে আয়োজিত কর্মী সভায় এ কথা বলেন। তার বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, আবদুল কাদের মির্জা উপস্থিত ভোটারদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমার কথা সোজাসুজি। আমি বাঁকা কথা আমি বলি না। পরে ভেজাল হয়ে যাবে। কী বলছি বুঝেছেন তো? এমনি ভালো আছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়েছে? আপনারা শান্তিতে আছেন। ভোট যদি আমাদের তিনজনকে (চেয়ারম্যান, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান) দেন, তাহলে কেন্দ্রে আসিয়েন। না হয় পরে ঝামেলা হলে আমি দায়িত্ব নিতে পারব না।
কাদের মির্জা আরও বলেন, শুধু শুধু কষ্ট করে কেন্দ্রে আসবেন না। বাড়িতে ঘুমাইয়েন। তাহলে পরে নিরাপদে বাকি পাঁচটা বছর থাকতে পারবেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদের অপর প্রার্থী মিজানুর রহমান বাদল আবদুল কাদের মির্জার এমন বক্তব্যে নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখনো প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমাও শেষ হয়নি। এমন অবস্থায় কাদের মির্জা পরিবারের ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং তার প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের নানা হুমকি দিচ্ছেন। তিনি এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন।
এ বিষয়ে জানতে ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি আবদুল কাদের মির্জা। তাই এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইসমাঈল বলেন, বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বলবেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রার্থীর পক্ষে আনুষ্ঠানিক প্রচারণার কোনো সুযোগ নেই।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী সভা কিংবা কর্মীসভা করার সুযোগ নেই। এছাড়া প্রচারণাকালে ভোট না দিলে ভোটারদের কেন্দ্রে না যেতে বলাও বেআইনি।
প্রসঙ্গত, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ২৯ মে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল, উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মোহাম্মদ গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ওমর আলী। এর মধ্যে মোহাম্মদ গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল আবদুল কাদের মির্জার সমর্থিত প্রার্থী। তিনি গোলাম শরীফ ছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে পারভীন আক্তারকে সমর্থন দিচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তিনজনকে জেতানোর জন্য নিজেই প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করছেন।
সময়ের আলো/আরআই