ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

এডিসের লার্ভা পেলে কোনো ছাড় নয়: মেয়র আতিক
প্রকাশ: সোমবার, ৬ মে, ২০২৪, ৮:০৬ পিএম  (ভিজিট : ৩৭৮)
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে টানা রোদ ছিল এবং এখন আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কাল রাতে বৃষ্টি হয়েছে আবার আজকে রোদ। রোদ ও বৃষ্টি এমন আবহাওয়ায় জমা পানিতে এডিসের লার্ভা জন্মায়। তাই এই সময়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বর্ষা শুরুর আগে থেকেই আমরা একযোগে ৫৪টি ওয়ার্ডে মাসব্যাপী জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান শুরু করেছি। সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে আছে, অভিযান করছে। এডিসের লার্ভা পেলে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।

সোমবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১১টার পরে রাজধানীর কুড়িল প্রগতি সরণিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা মূলক কার্যক্রম ও মশক নিধন অভিযান শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, সিটি কর্পোরেশন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছে, লার্ভিসাইডিং ও এডাল্টিসাইডিং করছে। জনগণকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছি আমরা। এডিসের লার্ভা পেলে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা জরিমানা করছে। আমাদের উদ্দেশ্য জেল জরিমানা করা না। আমাদের উদ্দেশ্য হল ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কিন্তু সবাই সচেতন না হলে সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।’

এসময় ডিএনসিসি মেয়র ট্রাকে উঠে এডিস মশার উৎসস্থল-গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড এগুলো দেখিয়ে জনগণকে সচেতন করেন এবং প্রগতি সরণি এলাকায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে জনগণের মাঝে সচেতনতা মূলক লিফলেট বিতরণ করেন।

ডিএনসিসি মেয়র কয়েকটি বাড়ি পরিদর্শন করেন। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় মেয়রের উপস্থিতিতে একটি বাড়িতে এক লাখ টাকা জরিমানা ও অন্য আরেকটি বাড়িতে নিয়মিত মামলা দায়ের করেন ডিএনসিসির অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল বাসেত।

মেয়র বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতে খালের ও ড্রেনের ময়লা পানিতে এডিস মশা জন্মায় না। জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা জন্মায়। যেসকল পরিত্যক্ত দ্রব্যাদিতে পানি জমে এডিসের লার্ভা জন্মাতে পারে সেসব দ্রব্যাদি সিটি কর্পোরেশন কিনে নিচ্ছে। ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, দইয়ের কাপ এগুলো যত্রতত্র না ফেলে ডিএনসিসির কাউন্সিলরদের কাছে জমা দিন নগদ টাকা গ্রহণ করুন। পুরনো টায়ার, কমোড, রঙের কৌটা এগুলো ছাদে বা বারান্দায় না রেখে আমাদের কাউন্সিলরদের কাছে জমা দিয়ে টাকা নিন।

এসময় ডিএনসিসি মেয়র নগদ অর্থের বিনিময়ে নির্ধারিত মূল্যে এসব পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি কিনে নেন। 

উল্লেখ্য, পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি ও সেগুলো সংগ্রহের জন্য মূল্য তালিকা: চিপসের প্যাকেট/সমজাতীয় প্যাকেট (প্রতি পিস) ১ টাকা, আইসক্রিম এর কাপ, ডিসপেজেবল গ্লাস/কাপ (প্রতি পিস) ১ টাকা, ডাবের খোসা (প্রতি পিস) ২ টাকা, কন্ডেন্স মিল্ক এর কৌটা (প্রতি পিস) ২ টাকা, মাটি/পাস্টিক/সিরামিক/মেলামাইন এর (প্রতি পিস) ৩ টাকা, অন্যান্য পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের দ্রব্যাদি (প্রতি কেজি) ১০ টাকা, পরিত্যক্ত টায়ার (প্রতি পিস) ৫০ টাকা, পরিত্যক্ত পলিথিন (প্রতি কেজি) ১০ টাকা, পরিত্যক্ত স্যানিটারী ওয়্যার কমোড, বেসিন ইত্যাদি (প্রতি পিস) ১০০ টাকা।

মেয়র আতিক বলেন, ডিএনসিসি'র সকল ওয়ার্ডে একযোগে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রত্যেক কাউন্সিলরকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কাউন্সিলররা নিজ নিজ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, রাজনীতিবিদ, মসজিদের ইমাম, স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করনীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভা ও র‍্যালি আয়োজন করবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট বিতরণ করবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রচারণার ব্যবস্থা করবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী কাউন্সিলররা জনগণের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করবেন। কোন কোন জায়গার স্বচ্ছ পানি জমে এডিস মশার লার্ভা জন্ম নেয় এসব বিষয়ে তারা জনগণকে সচেতন করবেন। আমাদের চ্যালেঞ্জ কিন্তু অনেক। একদিকে তাপদাহ, অন্যদিকে এডিস মশা, আরেক দিকে সিটি কর্পোরেশনের রোপণ করা গাছগুলোকে রক্ষা করা। আমরা মনে করি, কোনো চ্যালেঞ্জই চ্যালেঞ্জ মনে হবে না, যদি জনগণ আমাদের সাথে এগিয়ে আসে। অফিস দোকান ও যার যার বাসা বাড়ি যদি নিজেরা পরিষ্কার করি তাহলে এডিস মশা জন্মাবে না।

কুড়িল এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক র‍্যালি এবং লিফলেট বিতরণ শেষে কুড়িল ব্রিজের নিচে রিকশাচালকদের মাঝে বিনামূল্যে ছাতা, পানির বোতল ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। 

এসময় অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য শবনম জাহান শিলা এবং হাছিনা বারী চৌধুরী, ডিএনসিসি'র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইসহাক মিয়া, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন এবং সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর আমেনা বেগম প্রমুখ।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  ডিএসনিসি   ভ্রাম্যমাণ আদালত-অভিযান   মেয়র আতিক   




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close