ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

দুই জিনিস থেকে দৃষ্টি সরানোর নির্দেশনা
প্রকাশ: সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ২:১৮ এএম  (ভিজিট : ৪৩০)
আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি চোখ। বান্দার জন্য এটা এক বিশেষ নেয়ামত। আল্লাহ তায়ালা যখন তাঁর কোনো বান্দাকে নেয়ামত দান করেন, তখন নেয়ামতপ্রাপ্ত বান্দার দায়িত্ব হলো, প্রাপ্ত নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব; আর আমার শুকরিয়া আদায় করো, অকৃতজ্ঞ হয়ো না’ (সুরা বাকারা : ১৫২)। এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, নেয়ামত পাওয়ার পর বান্দার জন্য জরুরি হলো, শুকরিয়া আদায় করা, কৃতজ্ঞ হওয়া। আর এই কৃতজ্ঞতা যেমন মৌখিকভাবে করা জরুরি, তেমনি আমলের মাধ্যমেও শুকরিয়া আদায় করা জরুরি। চোখের আমলি শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা হলো অবৈধ ও নিষিদ্ধ বস্তু থেকে সেটাকে বিরত রাখা। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন পুরুষদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।’ (সুরা নুর : ৩০)

যারা আপন চোখ অবৈধ দৃষ্টি থেকে বিরত রাখে তাদের ব্যাপারে হাদিসে অনেক ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। জাহান্নামের আগুন ওই চোখ দেখবে না। রাসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তির চোখ জাহান্নামের আগুন দেখবে না। যে চোখ আল্লাহর রাস্তায় পাহারা দেয়, যে চোখ আল্লাহর ভয়ে কান্না করে আর যে চোখ আল্লাহর নিষিদ্ধ বস্তু থেকে বিরত থাকে’ (মাজমাউয যাওয়াঈদ : ৫/৩৭৪)। ওই চোখ কেয়ামত দিবসে কান্না থেকে মুক্ত থাকবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত-রাসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন, কেয়ামতের দিন সব চোখই কান্নারত থাকবে, কেবল সে চোখ ব্যতীত যা আল্লাহর নিষিদ্ধ বস্তু থেকে বিরত ছিল এবং যে চোখ আল্লাহর রাস্তায় জাগ্রত ছিল। আর যে চোখ থেকে আল্লাহর ভয়ে সুইয়ের মাথা পরিমাণ অশ্রু ঝরেছিল’ (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৫/৩৩৪)।

আরও বর্ণিত হয়েছে-রাসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দৃষ্টিপাত শয়তানের বিষাক্ত তীরগুলোর একটি তীর। যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে তা বর্জন করবে, আল্লাহ তাকে বিনিময়স্বরূপ এমন ঈমান দান করবেন, যে ঈমানের মিষ্টতা সে তার অন্তরে অনুভব করবে।’ (মুস্তাদরাক লিল হাকিম : ৭৮৭৫)

দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, সম্পদশালী থেকে দৃষ্টি সরানো। যে দুনিয়াদার আখেরাতের কথা ভুলে গিয়ে শুধু দুনিয়াবি কাজে লিপ্ত থাকে, আর দুনিয়াকে পরকালের ওপর অধিক গুরুত্ব প্রদান করে ও পরকালকে হেয়প্রতিপন্ন করে, এমন ব্যক্তিদের ওপর থেকে আল্লাহ দৃষ্টি সরানোর জোর নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তুমি পার্থিব জীবনের ওই চাকচিক্যের দিকে চোখ তুলে তাকিও না, যা আমি তাদের (অর্থাৎ কাফেরদের) বিভিন্ন শ্রেণিকে মজা লোটার জন্য দিয়েছে রেখেছি, তা দ্বারা তাদের পরীক্ষা করার জন্য। বস্তুত তোমার রবের রিজিক সর্বাপেক্ষা উত্তম ও সর্বাধিক স্থায়ী’ (সুরা তোয়াহা : ১৩১)।

আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-রাসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘(দুনিয়ার ধনদৌলত ইত্যাদির বিবেচনায়) তোমাদের মধ্যে যে নিচে তোমরা তার দিকে তাকাও। আর যে তোমাদের ওপরে, তার দিকে তাকিও না। যেহেতু সেটাই হবে উৎকৃষ্ট পন্থা, তোমাদের প্রতি যে আল্লাহর নেয়ামত রয়েছে তা তুচ্ছ মনে করবে না’ (মুসলিম : ২৯৬৩)। হাদিসে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত-রাসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের সব চিন্তাকে এক মাকসুদ, অর্থাৎ শুধু আখেরাতের চিন্তায় নিবদ্ধ করে নেবে, আল্লাহ তার দুনিয়ার যাবতীয় নেক উদ্দেশ্য পূরণ করে দেবেন। অন্যদিকে যাকে দুনিয়ার বিভিন্ন দিক ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে, তার জন্য আল্লাহ কোনো পরোয়া করবেন না, চাই সে কোন জঙ্গলে (দুনিয়ায় যেকোনো অবস্থায়) ধ্বংস হোক না কেন।’ (ইবনে মাজাহ : ২৫৭)


লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলূম মাদরাসা, মধুপুর, টাঙ্গাইল

সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close