প্রকাশ: শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ২:৩৫ পিএম (ভিজিট : ৫৮৮)
সড়ক প্রশ্বস্তকরণের জন্য ভেঙে ফেলা হয় পুরাতন সেতু। তবে অবাক হওয়ার বিষয় হলো পুরাতন সেতু ভেঙে ফেলার আড়াই বছরেও নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরুই করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন পথচারী ও স্থানীয় এলাকাবাসীসহ কয়েক উপজেলার মানুষ। আর ভেঙে ফেলা সেতুর পাশ দিয়ে সরু কাঁচা রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে খাল পার হচ্ছে ছোট আকারের বিভিন্ন যানবাহন। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। তবে বন্ধ রয়েছে বাস, ট্রাক, মিনিট্রাক, কাভার্ডভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স ও প্রাইভেটকার চলাচল। এমন চিত্র রাজবাড়ী সদর উপজেলার কোলারহাট-নিমতলা সড়কের কোলারহাট বাজার সংলগ্ন এলাকায়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের। আগের কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলজিইডি।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে রাজবাড়ী সদরের কোলারহাট-নিমতলা সড়ক প্রশ্বস্তকরণের নির্মাণ কাজের জন্য কোলারহাট এলাকায় কুমার নদের ওপর নির্মিত পুরাতন গার্ডার ব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। টেন্ডারে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৭১ হাজার টাকা চুক্তি মূল্যে ২০ মিটার দৈর্ঘ্য এ সেতুটির নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান বরিশালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রুপালী কনস্ট্রাকশন।
২০২৩ সালের জুন মাসে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল কাজ। তবে কাজ শেষ করাতো দূরের কথা, এখনো নির্মাণ কাজ শুরুই করেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। ভেঙে ফেলা ব্রিজের পাশ দিয়ে একটি সরু কাঁচা রাস্তা তৈরির পর কাজ ফেলে পালিয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। বিকল্প হিসেবে এ সরু রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে গাড়ি উল্টে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ব্রিজ না থাকার ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কোলারহাট এলাকায় কুমার নদের ওপর নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে সেখানে ব্রিজ নির্মাণ কাজ বন্ধ, তেমন কোনো সাইনবোর্ড দেয়া নেই। নেই কোনো ব্যারিকেডও। অপরিচিত কেউ বিষয়টি বুঝতে না পারায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেক যানবাহন এই রাস্তা দিয়ে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বিকল্প সড়ক ব্যবহারে ভোগান্তি বেড়েছে।
সেখানকার স্থানীয় ও বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, পুরাতন ব্রিজ ভাঙার পর থেকে দুর্ভোগ শুরু হয়েছে। ব্রিজের দুই পাড়ে কোলারহাট বাজার। ব্রিজের পূর্বপাশে শতাধিক এবং পশ্চিম পাশে ৫ শতাধিক দোকান রয়েছে। ব্রিজের কাজ বন্ধ থাকায় কোলারহাট বাজারের একপাশে প্রায় অর্ধশত দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পাশের সরু রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। অনেক মানুষ গর্তেও পড়ে যায়।
আব্দুল গফুর নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, কোলারহাটটি পেঁয়াজের জন্য খুব বিখ্যাত। পেঁয়াজের মৌসুমে এ হাটে প্রচুর পেঁয়াজ ওঠে। তবে ব্রিজ না থাকায় বড় ট্রাক এই সড়ক দিয়ে হাটে ঢুকতে না পারছেনা। অন্য সড়ক দিয়ে অনেক পথ ঘুরে এসব যানবাহন এ হাটে আসে। এতে ট্রাকের বাড়তি ভাড়া দিতে হয়। যার কারণে এ হাটে পেঁয়াজের ব্যবসায় কিছুটা ধ্বস নেমেছে। লোকসানের মুখে পড়েছেন অন্য ব্যবসায়ীরাও।
তৈয়বুজ্জামান নামে এক যুবক বলেন, ব্রিজ না থাকায় গর্ভবতী নারী বা অন্য রোগীদের হাসপাতালে নেয়া খুবই কষ্ট হয়। অনেক পথ ঘুরে যেতে হয়। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে এই সরু কাঁচা রাস্তায় হেটেও চলা যায় না। আমাদের দাবি দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের উদ্যোগ নিক কর্তৃপক্ষ।
আব্দুল বারেক শেখ নামে যুবলীগের এক নেতা বলেন, এই সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। রাজবাড়ী সদর, বালিয়াকান্দি ও ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। এছাড়া মহাসড়কে কোন সমস্যা হলে বেনাপোলের গাড়িগুলো বিকল্প সড়ক হিসেবে এই সড়ক ব্যবহার করে। ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজ না করায় এখানে সর্বস্তরের মানুষের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
এলজিইডির রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী জানান, বার বার মৌখিক ও লিখিতভাবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ শুরু করার জন্য বলা হলেও ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু করেনি প্রতিষ্ঠানটি। নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ার অজুহাতে কাজ ফেলে পালিয়ে যায় ঠিকাদার। বিধি অনুযায়ী ঠিকাদারকে জরিমানা ও কাজটি বাতিল করা হয়েছে। এখন নতুন করে ব্রিজটি নির্মাণে পুনরায় টেন্ডার আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে। নতুন টেন্ডার হলেই দ্রুতই ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
সময়ের আলো/আরআই
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
ইসরায়েলের হাইফায় হিজবুল্লাহর রকেট হামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান গ্রেফতার
কালিহাতীতে কোটা আন্দোলনের মামলায় গ্রেফতার ৩
টস জিতলো ভারত, ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
সোলস আমার পরিবারের একটি অংশ: তুষার
ছাত্রদলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী
স্টার কাবাবে পঁচা কাবাব পরিবেশনের প্রতিবাদ করায় সাংবাদিককে মারধর
পুলিশে রদবদল