প্রকাশ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৪:৪৫ পিএম (ভিজিট : ৫৯৪)
গত কয়েকদিনের প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরমের মানুষের সাধারণ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে, তাপদাহে মুন্সীগঞ্জসহ সিরাজদিখানের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি আরো প্রকট করে তুলেছে লাগাতার লোডশেডিং। ফলে সাধারণ মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে।
উপজেলায় বর্তমানে ধান কাটার সময়। কৃষকেরা তীব্র তাপদাহের কারণে ধান কাটা শুরু করতে পারছে না। পাশাপাশি ভ্যান ও রিকশাচালক একটু দুপুর হলেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। ফলে দুপুরে উপজেলা শহরের রাস্তাঘাটগুলো ফাঁকা হয়ে পড়ছে। মানুষ প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরুতে ভয় পাচ্ছে। সূর্যতাপে যেন শরীরের চামড়া পুড়ে যাওয়ার অবস্থা। ভ্যাপসা গরম থেকে বাঁচতে মানুষ যখন ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না সেখানেও আছে বিপত্তি। বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
অসহনীয় গরমে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন গরম জনিত রোগের রোগী। প্রখর রোদে মাঠে পাকা ধান কাটতে গলদঘর্ম হচ্ছে কৃষক-শ্রমিক। তবে ডাব ও আখের রসসহ শরবতের দোকানগুলোতে উপচে পড়ছে ভিড়।
লাগাতার লোডশেডিংয়ের কারণে অধিকাংশ সময়ই বন্ধ থাকছে কলকারখানার চাকা। তাই ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায়। সিরাজদিখান রাজদিয়া অভয় পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র দেবোজিৎ দাস ও সায়ন দাস বলেন, এতো গরম সহ্য করা কঠিন। বিদ্যুৎ না থাকায় ঠিকমতো বাড়ির পড়াশুনা করতে পারছি না। দিনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১০ ঘণ্টাই বিদ্যুতের দেখা মিলছে না। এই গরমে ফ্যান ঘুরলেও তো কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যেতো।
গত কয়েকদিন থেকে তাপমাত্রা একটু বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সিরাজদিখানের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ৩/৪ দিনে তাপপ্রবাহ আরো বাড়ার সম্ভাবনা আছে। এ সময়টায় বৃষ্টির সম্ভাবনাও কম।
সিরাজদিখান ব্যাটারি চালিত অটো রিকশাচালক আমির হোসেন (৩৫) বলেন, আগের মতো আর ভাড়া নেই। দুপুর না হতে বাড়ি ফিরে যাই আর বৈকেলে আসি। সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছি।
সিরাজদিখান পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম বাবুল হোসেন বলেন, গরম বাড়ার পাশাপাশি মানুষের বিদ্যুতের ব্যবহারও বেড়েছে। বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহার হওয়ার কারণেই লোডশেডিং হচ্ছে। সিরাজদিখানে ১৬-১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দ দেওয়া হয়। যেখানে বর্তমানে চাহিদা রয়েছে ২২ মেগাওয়াট।
সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ডা. আঞ্জুমান আরা বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে সাধারণ মানুষ শ্বাস কষ্ট, ডায়রিয়া বা পানি বাহিত রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল মুখী হচ্ছে। এ কারণে হাসপাতালের আউট ডোর ও ইনডোরে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
এই গরমে সুস্থ থাকতে বেশি করে পানি, স্যালাইন পানি, ডাবের পানি বা তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সময়ের আলো/আরআই