ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

সিলেটে বোরোর বাম্পার ফলন
হিট অ্যালার্ট থাকা সত্ত্বেও চলছে ধান কাটার ধুম
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ৭:৫৬ পিএম  (ভিজিট : ৭৪৪)
সারাদেশে হিট অ্যালার্টের মাঝেও বোরো ফসল ঘরে তুলতে মাঠে কাজ করছেন সিলেটের কৃষকরা। কয়েক দফা শিলাবৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য ফসল হানি না হলেও প্রকৃতির বৈরিতার আশঙ্কার মাঝেও বিভাগের ৪ জেলার সবকটি হাওড়ে চলছে বোরো ধান কাটার ধুম। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফসল উৎপাদিত হওয়ার পরও সরকারি সার বীজ যথাযথভাবে না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে কৃষকদের। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ অভিযোগ নাকচ করে বলছে, যথাযথ সার ব্যবহারে কৃষকরা আগ্রহী না হওয়ায় গুদামে অবিক্রীত সার রয়ে গেছে।

সিলেট বিভাগের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে এবার হাউব্রিড, উফসী ও স্থানীয় জাতের বোরো ফসল মোট ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৬৯১ হেক্টও জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে হাওড়ে ২ লাখ ৭৬ হাজার ২২৫ হেক্টর ও হাওড় ছাড়া এলাকায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৬ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়। এ বছর সিলেট বিভাগের চার জেলায় ৪ লাখ ৯২ হাজার ৯৭০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়েছে।

আগাম বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কায় এবার আগে থেকেই ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ বাতাসে ছড়াচ্ছে মিষ্টি ঘ্রাণ। বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা এ বছর সর্বস্ব দিয়ে ফলিয়েছেন সোনালী ধান। আর বাড়তি যত্নের কারণে ফলনও হয়েছে বাম্পার। বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান ওঠবে কৃষকের গোলায়। তাই সকল ঝুঁকি এড়াতে পাকা ধান দ্রুত কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকরা। তবে বোরো ফসলের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকদের ক্ষোভ কৃষি বিভাগের প্রতি। প্রয়োজনীয় সার বীজ ও সহযোগিতা না পেয়ে হতাশ তারা।

সরেজমিনে বিভিন্ন হাওড়ে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি কৃষকরা ক্লান্তিহীন ধান কেটে চলেছেন। হাওড়ের পাশে মেশিনে ধান শুকিয়ে বস্তায় ভরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেক কৃষককে মাথায় ছাতা নিয়েও কাজ করতে দেখা গেছে।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, কৃষি বিভাগ সার বিপণনে মুখ চিনে বিতরণ করে। বেশিরভাগ সময়েই প্রকৃত কৃষকরা এ থেকে বঞ্চিত হন। এবার শিলাবৃষ্টির পরও আল্লাহর রহমতে ধানের আবাদ ভালো হয়েছে। যদি বন্যা কিংবা অন্য কোনো দূর্যোগ না আসে তবে কৃষকের ঘরে ঘরে বছর জুড়ে আনন্দ থাকবে।

তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, বন্যায় ফসলি জমিতে পলির আস্তরণ পড়ায় এমনিতেই উর্বর সিলেট অঞ্চলের ফসলী জমি। পাশাপাশি সিলেট বিভাগের কৃষকদের মধ্যে বর্গা চাষি আনুপাতিক হারে বেশি। তাই উৎপাদন খরচ কমাতে কৃষকরা সারের ব্যবহার কম করেন। আর এ কারণে সরকারি গুদামে বিপুল পরিমাণ সার অবিক্রীত রয়ে গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট-এর মনিটরিং অফিসার মো. ফারুক হোসাইন সময়ের আলোকে বলেন, এবার সিলেটে লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে বেশি বোরো ফসল উৎপাদন হয়েছে। সিলেট বিভাগের সিলেট জেলায় এবার আবাদ হয়েছে হাইব্রিড ১৭ হাজার ৭১১ হেক্টর, উফসি ৬৭ হাজার ৬৭৯ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ২ হাজার ৬২ হেক্টর জমিতে, মৌলভীবাজার জেলায় হাইব্রিড জাতের আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৮৪৫, উফসি ৫১ হাজার ৭৫ ও স্থানীয় জাতের ১৭৫ হেক্টর, হবিগঞ্জ জেলায় হাইব্রিড জাতের আবাদ হয়েছে ৫০ হাজার ৮৮৬, উফসি ৭২ হাজার ৮০১ ও স্থানীয় জাতের ৫০ হেক্টর জমিতে এবং সুনামগঞ্জ জেলায় আবাদ হয়েছে হাইব্রিড জাতের ৬৫ হাজার ১০৩, উফসি ১ লাখ ৫৭ হাজার ১১১ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের বোরো ফসলের আবাদ হয়েছে ১১৯৩ হেক্টর জমিতে। 

তিনি বলেন, সিলেট অঞ্চলের সারের কোনো ঘাটতি নেই বা ছিলো না। ইতোমধ্যে বিভাগের হাওড়, ননহাওড় এলাকায় ধান কাটার ধুম পড়েছে। আগাম বন্যা কিংবা প্রকৃতিরা বৈরিতা না আসলে সোনার ফসল ঘরে তুলে আগামীর সুন্দর
স্বপ্নে বিভোর সিলেটের কৃষকরা।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  বোরো ধানের বাম্পার ফলন   সিলেট  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close