কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণের ২৬ ঘন্টা পর দূর্বৃত্তরা ছেড়ে দিয়েছে পল্লী চিকিৎসক সহ ২ জনকে। গহীন পাহাড়ে স্থানীয়দের সাথে নিয়ে পুলিশের রুদ্ধদ্বার সাঁড়াশি অভিযানের ফলে দূর্বৃত্তরা তাদের ছেড়ে দেয়। এর আগে তাদের জীবন বাঁচাতে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেছিল দূর্বৃত্তরা।
ফিরে আসা অপহৃতরা হচ্ছে উখিয়ার থাইংখালী এলাকার মাওলানা জাকের হোসেনের পুত্র পল্লী চিকিৎসক জহির উদ্দিন (৫২) ও বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর নয়াপাড়ার মো. শফির পুত্র মো. রফিক (৩১)।
সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদেরকে ছেড়ে দেয়।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ওসমান গনি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অপহরণের খবর পেয়ে পুলিশ পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করে। এক পর্যায়ে দুর্বৃত্তরা অপহৃতদের অক্ষতাবস্থায় ছেড়ে দেয়। তিনি জানান, পাহাড়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া-টেকনাফ) সার্কেল মো. রাসেলের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিমের অভিযানের মুখে পল্লী চিকিৎসকসহ অপহৃত দুই জনকে রেখে পালিয়ে যান অপহরণকারীরা। পরে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে রবিবার (২১ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর হোয়াইক্যং পাহাড়ি সড়ক (ঢালা) দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে পল্লী চিকিৎসকসহ ওই দুজনকে অপহরণ করেন দুর্বৃত্তরা।
অপহরণের শিকার জহির উদ্দিনের ছোট ভাই সাংবাদিক কমরুদ্দিন মুকুল জানান, তার ভাই শাপলাপুর এলাকায় প্রতিদিনের মতো চেম্বার শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন। তার সঙ্গে একজন যাত্রীও ছিলেন। পথিমধ্যে শামলাপুর-হোয়াইক্যং সড়কের ঢালার নামক স্থানে আসলে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সিএনজি (অটোরিকশা) চালক বিষয়টি পরিবারকে জানায়। এরপর থেকে মোবাইলে ফোন করে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করতে থাকেন অপহরণকারীরা।
এদিকে মুক্তিপণের মাধ্যমে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে মুখরোচক আলোচনা চলছে। তবে বিষয়টি নিয়ে কেউ সংবাদ মাধ্যমে মুখ খুলছে না। এর আগে গেল রমজানে এক শিক্ষকসহ দুই জনকে অপহরণ করা হয়েছিল। তাদেরকে ২ লাখ টাকার মুক্তিপণে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসময় ব্যাপক শারিরীক নির্যাতন চালায় দূর্বৃত্তরা।
উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের মার্চ মাস থেকে ২০২৪ সালের এ পর্যন্ত টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২০ জনের অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬২ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা।
সময়ের আলো/এএ/